সরাইলে হঠাৎ ডিম মুরগির দাম আকাশ’ছোঁয়া”  বাড়ছে মরিচের ঝাল 

মো. তাসলিম উদ্দিন সরাইল( ব্রাহ্মণবাড়িয়া): নিত্যপ্রয়োজনীয় সব ধরনের জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে সাধারণ মানুষ। কেউই যেন রেহাই পাচ্ছেন না দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কবল থেকে।বাজারে সব পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় খেটে-খাওয়া মানুষজনেরা বিপাকে পড়েছে।মুরগি, ডিম, মাছ, মাংস, কাঁচামরিচ, তেল, শাকসবজিসহ সংসারের বাজার তালিকার  হিমশিমে পড়তে হচ্ছে সংসারের কর্তাব্যক্তিদের। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইল উপজেলার বাজারে অন্যান্য পণ্যের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি এবার বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির ডিমের দর। প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। এত টাকা দিয়ে ডিম খেয়েছেন বলে মনে করতে পারছেন না উপজেলাবাসী।
জানা গেছে, প্রতি হালি হাঁসের ডিম ৬০ এবং ফার্মের মুরগির ডিম প্রতি হালি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি হালি দেশি ডিমের জন্যে গুনতে হচ্ছে ৬০ টাকা।উপজেলার বিভিন্ন  বাজার ঘুরে জানা যায়, ব্রয়লার ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা, ডজন ১৪০-৪৫ টাকা। গত সপ্তাহে ডিমের ডজন ছিল ১২০ টাকা আর হালি ৪০ টাকা। মুরগির  দাম ১৯৫- ২০০ টাকা যা গতকয়েক দিন আগে ১৩০ – ১৪০ টাকা কেজি বিক্রি করছে। ১৩ আগস্ট শনিবার সকাল থেকে সরাইলের বিভিন্ন বাজার ও মোড়ের দোকানগুলো ঘুরে দেখা যায় বাজার করতে আসা মানুষদের হিমশিমের চিত্র।
আনিস নামের এক মাছ ব্যবসায়ী জানান, জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় আগের তুলনায় বিক্রিও কমে গেছে তাদের। কাস্টমাররা আগে যেখানে এক কেজি মাছ নিতো বাজারে অন্যান্য জিনিসের দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন পরিমাণে মাছ কমিয়ে নিচ্ছেন গ্রাহকরা।দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় শ্রমজীবী এসব মানুষদের পাশাপাশি বেকায়দায় পড়েছেন এলাকার মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোকেও। চাকরিজীবীরা বলছে, হিসাবের টাকায় মাস শেষে বাড়ি ভাড়া, সন্তানদের লেখাপড়া, খাওয়া-দাওয়া ও টুকটাক  ব্যক্তিগত খরচ দিয়ে কোনোরকম চলে আসলেও বাজারে নতুন করে আবারও সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় মানসিক প্রেসারে দিন পার করতে হচ্ছে তাদের।বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভের সাথে উপজেলা চুন্টা এলাকার তরিক নামের এক বাসিন্দা জানান, ইনকাম এক টাকাও বাড়ে নাই অথচ বাজারে প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বাড়ছে। খুবই খারাপ অবস্থা। একেবারে নাভিশ্বাস উঠে গেছে।
এদিকে সবজি বিক্রেতা শাকিব বলেন, মরিচ ২৮০ টাকা বিক্রি  করতেছি তার সাথে সব সবজির দাম বেড়েছে। আমরা কি করবো দামে কিনে আনি দামে বিক্রি করি। ফার্মের সাদা মুরগি বিক্রেতা শামছু বলে,আমরা আগে ১৩০ টাকা বা ১৪০ টাকা বিক্রি করেছি এখন আমরা কিনতে হয় ১৮৫ টাকা বিক্রি করমু কতো!
মো. মাসুদ মিয়া জানান,শুধু মুরগী আর ডিম না ভাই বলেন সব কিছুরই দাম ই হু হু করে বাড়ছে। এই যেনো দেখার কেউ নেই।মধ্যেবিত্তরা সংসার চালানো ই দায় হয়ে পরেছে। এম এম জহিরুল ইসলাম জানান,খাওয়া পরা সবকিছু ছেড়ে দেওয়া ছাড়া আমাদের আর কোন উপায় নেই বলেই মনে হয়। এমডি নবী হোসেন জানান, বিশেষ করে সরাইলে ভুক্তা অধিকার অধিদপ্তর নাই বললে ই চলে। যার যেমন মন চায় তেমন দাম ই রাকতে পারে। মো. আনোয়ার হোসেন জানান, জানিনা ব্যাবসায়ীরা কুন জ্বনমের প্রতিশোধ নিচ্ছেন, দেশের মানুষের উপর। আরিফুল ইসলাম সুমন জানান, মরিচ ৫০০টাকা হলেও সমস্যা না;কারণ,বাড়ির উঠানের কোণায় দুটি মরিচ গাছ রোপণ করা আছে। সারাবছর মরিচ কিনতে হয় না! তিনি জানান, আর কিছু আছেনি, দাম বাড়ছে-?খাবার তেল থেকে শুরু করে বেকারি বিভিন্ন পণ্য দাম বেড়েছে। এদিকে প্রতিদিনই বাড়ছে কাঁচামরিচের দাম, যাদের খুব বেশী প্রয়োজন তারা কিনছেন,কিন্ত পরিমানে অল্প, যাদের প্রয়োজন কম, তারা খালি হাতেই ফিরে যাচ্ছেন। উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে জানা যায়, হঠাৎ করে দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতিতে ক্রেতারা বাজার মনিটরিং করার দাবি জানিয়েছেন।
এ ব্যপারে সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.আরিফুল হক মৃদুল বলেন, সাধারণ মানুষের যাতে কষ্ট না হয়,ইতিমধ্যে সরাইল উপজেলায় ৯-হাজার ১শত ২০ টি পরিবারকে টিসিবির পণ্য বিতরণ করছেন। তারপরও প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে।