“যুব সমাজ ধ্বংসের অপর নাম মাদক” সরাইলে দুইদিনে আটজন মাদক ব্যবসায়ী আটক

মো. তাসলিম উদ্দিন, সরাইল( ব্রাহ্মণবাড়িয়া): পুলিশের বিশেষ অভিযানে দুইদিনে ৮ জন মাদক ব্যবসায়ী আটক। সরাইলে পুলিশের বিশেষ অভিযানে ১ শত ৫২ পিচ ইয়াবাসহ পাচঁ জন মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীকে আটক করেছে থানা পুলিশ। সরাইল থানা সুত্রে: আজ বৃহস্পতিবার ৯ জুন সরাইল থানা পুলিশ পরিদর্শক(তদন্ত) মো. শেহাবুর রহমান এর নেতৃত্বে থানার সঙ্গীয় ফোর্সসহ রাতের শেষ সময় সরাইল সদর ইউনিয়নের মোগলটুলা এলাকার হানিফ মিয়ার বসত ঘরের উত্তর পার্শ্বের কক্ষে হইতে সরাইল থানা পুলিশ ইয়াবাসহ পাচঁজন মাদক ব্যবসায়ী কে আটক করে।

আটককৃতরা হলেন, হানিফ মিয়া(৩৫), পিতা- উসমান মিয়া, মোগলটুলা। বিল্লাল খান প্রকাশ মিল্লাত(৩৪),পিতা- দৌলতখান, ছোট দেওয়ানপাড়া।মনির আলী (২০)পিতা- আব্বাস আলী মোগলটুলা। হাসিবুল হোসেন (২২) পিতা -মিন্টু মিয়া,দক্ষিণ আরিফাইল । আতিকুল রহমান রনি(১৫)পিতা-আ.রাশিদ, দক্ষিণ আরিফাইল, তারা সবাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল এলাকার বাসিন্দা। তাদের তল্লাশি করে১শত-৫২ পিচ ইয়াবা ট্যাবলেটসহ আটক করা হয়।

ইয়াবা বতর্মান সমাজের সবচেয়ে বড় কাঁটা । নেশার উপাদানের মধ্যে মাথাব্যথার বড় কারণ ইয়াবা। তরুণ সমাজের কাছে ইয়াবা সর্বাধিক জনপ্রিয় এবং পাচারের ক্ষেত্রে তুলনামূলক সহজ। এর কারণ ইয়াবার গঠন। ছোট ট্যাবলেট আকৃতির এই নেশাদ্রব্য যে কোনো স্থানে অধিক পরিমাণ লুকিয়ে রাখা যায়। নেশাগ্রস্তদের কাছে ইয়াবা ‘বাবা’ নামে পরিচিত। ইয়াবার নেশায় আজ শহরসহ গ্রামাঞ্চলের যুব সমাজ বুঁদ হয়ে রয়েছে। প্রতিদিন প্রতিক্ষণ ইয়াবা আসক্ত ব্যক্তির সংখ্যা বাড়ছে। মাদকাসক্তি হচ্ছে সব অপরাধের মূল। একজন মানুষ যখন অপরাধ জগতে পা বাড়ায়,প্রথম সিঁড়িটি হলো মাদকদ্রব্য। আশির দশকে আমাদের দেশে হেরোইনের আগ্রাসন ঘটে। ওই দশকের শেষ দিকে ফেনসিডিল মাদক রাজ্যের চালিকাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়।

নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকে ইয়াবার আগমন ঘটে মাদক রাজ্যে। প্রথম দিকে এ আগ্রাসনকে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এখন ইয়াবার থাবায় আক্রান্ত দেশের প্রায় প্রতিটি এলাকা। অভিজাত তরুণ- তরুণীদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ইয়াবা নেশায় আসক্ত। যেকোনো পরিবার এবং সমাজের জন্য মাদকাসক্ত ব্যক্তি হুমকিস্বরূপ। মাদকাসক্ত ব্যক্তি অন্যায় কাজ করতে দ্বিধা বোধ করে না। তারা সমাজের অনেক ক্ষতি করে থাকে। মাদকাসক্তির কারণেই পারিবারিক অশান্তি,চাঁদাবাজি,ছিনতাই- রাহাজানি, ডাকাতি ও খুনখারাবির ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে; যা সমাজে অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধিসহ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।মাদকাসক্তি সংঘটিত অপরাধের একাংশের প্রধান নিয়ামক হয়ে দাঁড়িয়েছে। পারিবারিক বিপর্যয়গুলো বিশেষজ্ঞদের বুকে কাঁপন ধরিয়ে দিচ্ছে। এই সর্বনাশ মাদক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট চক্রকে মোটেও বিচলিত করে না। তারা কেবলই বোঝে ব্যবসা। তরুণ প্রজন্মের হাতে তুলে দিচ্ছে মরণনেশার উপকরণ মাদক। তরতাজা তরুণদের মেধা, বিবেক, লেখাপড়া, মনুষ্যত্ব সবকিছু ধ্বংস করে দিচ্ছে ইয়াবার ভয়াবহ নেশা। বিনষ্ট করে দিচ্ছে স্নেহ, মায়া, ভালোবাসা, পারিবারিক সুবন্ধন।

এদিকে গত বুধবার ৮ জুন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ২শ পিস ইয়াবাসহ মো.কবির হোসেন (৪৩) মো.বিল্লাল মিয়া (৩৪)ও সোহেল (২৮) নামে তিন মাদক ব্যাবসায়ীকে আটক করেছে সরাইল থানা পুলিশ। এর সত্যতা নিশ্চিত করে সরাইল থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.আসলাম হোসেন বলেন. আটকদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ সময় ওসি বলেন, পুলিশের মাদক বিরোধী অভিযান অব্যাহত রয়েছে।