মাসুদ পারভেজ, রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের রৌমারী হতে বালিয়ামারী ডিসি ভায়া চুলিয়ারচর রাস্তার হাসপাতাল সংলগ্ন কুড়ার উপর নির্মিত পুরাতন ব্রিজটি অকেজো ঘোষনা করে নতুন ব্রিজ নির্মাণের লক্ষে ভেঙ্গে ফেলা হয়। এলজিইডির বাস্তবায়নে প্রোগ্রাম ফর সাপোর্টিং রুরাল ব্রিজ ৪ কোটি ৬৪ লাখ ৪ শত ৭৭ টাকায় টেন্ডার হয়। ব্রিজটি ভেঙ্গে ফেলায় ও ব্রিজটি নির্মাণে ঠিকাদারের অবহেলায় চুলিয়ারচর, কলাবাড়ি, বারবান্দা, নামা বারবান্দা, সাত ইজলামারী, গোয়ালগ্রাম, ফুলবাড়ি, ভুন্দুরচর, সাত ইছাকুড়ি, নটান পাড়াসহ উপজেলা শহরে আসতে ২২ গ্রামের প্রায় ৪০ হাজার মানুষের চলাচলে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। তবে স্থানীয় জনগনের ভাষ্য মতে এই ব্রিজটি একটা জন গুরুত্বপূর্ণ।
সোমবার সরজমিনে গিয়ে জানা গেছে, দীর্ঘদিন যাবত নির্মাণ কাজ অবহেলায় পড়ে থাকার কারনে এলাকার মানুষের বর্তমানে চরম ভোগান্তি ও দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন অনেকে। এলজিইডির অফিস সূত্রে জানা গেছে, রৌমারী হাসপাতাল ও বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন পূর্ব পার্শ্বে কুড়ার উপর ব্রিজ নির্মানে এলজিইডির ৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা বরাদ্দে মের্সাস দুর্গা এন্টারপ্রাইজ শ্যামল বাবু টেন্ডারের মাধ্যমে কাজটি পায়। পরে রৌমারী উপজেলা আ‘লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমানের রবিনের কাছে সাব- ঠিকাদার হিসাবে কাজটি বিক্রি করে দেন। সাব-ঠিকাদার গত মে ও জুন মাসে ব্রিজটি ভেঙ্গে দিয়ে নতুন করে ব্রিজ নির্মানের পদক্ষেপ নিলেও বিভিন্ন অজু হাতে ব্রিজ নির্মাণের কাজ স্থগিত রাখেন।
সূত্রে আরও জানা যায়,এলজিইডির বরাদ্দে ৪ লাখ টাকা ব্যায়ে ডাইভেরশন ব্রিজ নির্মান করে দেয়ার কথা থাকলেও তা না দিয়ে হালকা ভাবে কাঠের ব্রিজ নির্মাণ করেন। অপর দিকে দায় এড়াতে নড়বড়ে কাঠের সাঁকো নির্মাণ করে দেন ঠিকাদার। বর্তমানে কোনো উপায় না পেয়ে ঠিকাদারের নির্মিত নড়বড়ে কাঠের সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাড়া পাড় হচ্ছেন স্কুল কলেজ শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষ। এদিকে সচল ব্রিজকে ভেঙ্গে অচল করায় প্রায়দিন দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন জনসাধারন।
এ বিষয়ে ইছাকুড়ি গ্রামে জাকির হোসেন টেকনিক্যাল কলেজ অধ্যক্ষ রাসেল চৌধুরী জানান, চলতি ২০২২ সালে এসএসসি, ভোকেশনাল পরীক্ষা চলমান। এ প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা কেন্দ্র থাকায় রাস্তার ভাঙ্গার কারনে শিক্ষক, পরীক্ষার্থীরা সঠিক সময়ে পরীক্ষার কেন্দ্রে আসতে চরম দুর্ভোগে পোহাতে হয়। আমি প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করছি শিক্ষার্থী ও জনসাধারনের দুর্ভোগ লাঘবে দ্রæত ব্যবস্থা নেয়া হউক।
স্থানীয় এলাকাবাসি বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়াদুদ মন্ডল ও মঞ্জিল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ভালো ব্রিজটাকে ভেঙ্গে ফেলায় চলাচলে চরম দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। রৌমারী বাজারে যাইতে একমাত্র ভরসা ছিলো এই ব্রিজ। ইতি পূর্বে ওই ব্রিজ দিয়ে চলাচলে কোনো প্রকার সমস্যা ছিলো না। তাড়াহুড়া করে ব্রিজটি ভেঙ্গে ফেলায় সাধারণ মানুষের অনেক সমস্যা হচ্ছে। দ্রুত ব্রিজের কাজ শুরু করা হউক। তা না হলে মাটি দিয়ে ভরাট করে দেওয়া হউক।
রৌমারী সদর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক জানান, ব্রিজটি না থাকায় এলাকাবাসির ও জনসাধারনের অনেক সমস্যা হচ্ছে। গোয়ালগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চাউল বিতরনে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সরকারের কাছে দাবী জনগনের কথা চিন্তা করে দ্রæত ব্রিজ নির্মান কাজ শুরু করা হউক। ঠিকাদার শ্যামল বাবুর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। উপজেলা প্রকোশীল যুবায়েত হোসেন জানান, পুকুরে পানির জলাবদ্ধতা হওয়ার কারনে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। তবে চলাচলে জনগনের দুর্ভোগ যাতে না হয় খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার পূবণ আখতার বলেন, আমি এই উপজেলায় নতুন যোগদান করেছি। তেমন ভাবে সব যায়গা চিনিনা। তবে জনসাধারনের যাতায়াতে দুর্ভোগ সৃষ্টি না হয় সে বিষয় সরজমিনে গিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মদ আবু সাহিদ। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: রাশেদা ম্যানশন, ৯৮৬, মধ্যম রামপুর হালিশহর, চট্টগ্রাম | যোগাযোগ: 01869-600700, E-mail: [email protected]
Powered by somoyernews.com | Designed by F.A.CREATIVE FIRM LTD.