পেকুয়া প্রতিনিধিঃ কক্সবাজারের পেকুয়ায় দায়ীত্বশীলদের দায়ীত্বহীনতায় লোকালয়ে ছড়িয়ে পড়ছে রোহিঙ্গারা ।
সড়ক সংষ্কার কাজের শ্রমিক হিসেবে কম বেতনে কাজে লাগাচ্ছে এসব রোহিঙ্গাদের। সড়ক সংষ্কার কাজের পাশাপাশি যে কোন ধরনের অপরাধ মুলক কাজে জড়িয়ে পড়ছে রোহিঙ্গারা। দিন দিন বেকার হচ্ছে স্থানীয় সাধারণ কেটে খাওয়া মানুষজন,ফলে মানবেতর জীবন যাপন করছে স্থানীয় দিন মজুররা। কিছু অসাধু ঠিকাদার স্থানীয় জনপ্রনিধিদের যোগসাজে আশ্রয় দিয়ে শ্রমিকের কাজে ব্যবহার করছে রোহিঙ্গাদের । এমনই প্রমান মিলছে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নে। আটক করা হয় ১১ রোহিঙ্গাকে ।
রবিবার (২৯ জানুয়ারী) কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের সোনালী বাজার আতর আলী পাড়া সংযোগ সড়কের ব্রীক সলিং কাজে ১১ জন রোহিঙ্গা নাগরিককে নিয়ে বিগত ১১ দিন যাবত কাজ করছেন দায়ীত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। কাজের অনিয়ম নিয়ে স্থানীয়দের অভিযোগেের ভিত্তিতে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় কাজ করতে আসা শ্রমিকদের অগোচালো কথা শুনে সন্দেহ হলে তাদের তথ্য যাচাইকালে তারা স্বীকার করে উখিয়া কুতুপালং ক্যাম্পের (২০,২২ ও ৪ নং ষ্টেশনের) সদস্য। তারা আইনশৃংখলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে ও স্থানীয় দালাল চক্রের সহায়তায় বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছে সাধারণ মানুষ। এসময় পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী পূর্বিতা চাকমাকে অবহিত করলে সাথে সাথে পেকুয়া পুলিশকে পাঠিয়ে দুপুর ১২ টায় ১১ জন রোহিঙ্গা নাগরিককে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। আটক হওয়ায় স্বস্থির নিংশ্বাস ফেলে স্থানীয়রা। আটককৃত রোহিঙ্গারা উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৪,২০ ও ২২ নং ষ্টেশনের সদস্য বলে জানাগেছে।
তারা একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অধীনে সড়ক নির্মাণ কাজে শ্রমিক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন।
জানাগেছে, উজানটিয়া ইউনিয়নের সোনালী বাজার টু আতঁরআলী পাড়া সড়কের নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন চলছে। ত্রাণ ও দূর্যোগ মন্ত্রনালয়ের আওতায় প্রায় ৬৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সড়কের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। এক কিলোমিটার ওই সড়কে ব্রিক সলিং কাজ চলমান রয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জুবাইর ইন্টারন্যাশনাল এ কাজ বাস্তবায়ন করছেন। সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায় সড়ক নির্মাণ কাজে ১৭জন শ্রমিক কাজ করছেন। এদের মধ্যে ১১জন শ্রমিক রোহিঙ্গা নাগরিক।
আটক রোহিঙ্গা নাগরিকরা জানান তারা অল্প বেতনে শ্রমিক হিসেবে কাজ করছে শুরু থেকে। কৌশলে রোহিঙ্গাদের এনে কাজ করান ঠিকাদার জুবাইর। গত ১১ দিন আগে স্থানীয় ইউপি সদস্য ওসমানের সহায়তায় উজানটিয়া সোনালী বাজারে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন তারা।
উজানটিয়া ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান ওসমান গনি বলেন, সড়কে কাজ করা শ্রমিকরা রোহিঙ্গা এটা জানতাম না। পুলিশ আসার পর নিশ্চিত হলাম তারা রোহিঙ্গা। সোনালী বাজারে ভাড়া বাসা কিভাবে নিছে তা বাসার মালিক জানবে।
ভাড়া বাসার মালিক আবদুল আলীম জানান, উজানটিয়ার সোনালী বাজারে আমার বাসা আছে। বাসাতে ওসমান মেম্বার তার কাজের শ্রমিকরা থাকবে এ কথা বলে বাসাটি আমার কাছ থেকে ভাড়া নেয়। ওরা যে রোহিঙ্গা এটা আমি জানতাম না। একজন ইউপি সদস্য সাবা ভাড়া চাইলে আমি না করতে পারি নাই কিন্তু রোহিঙ্গাদের জন্য বাসা ভাড়া নেবে এটা কল্পনায় ছিল না।
এবিষয়ে জানতে পেকুয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পি আই ও) আবুতাহের এর ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়ার পরও সংযোগ না দেয়ায় বক্তব্য দেয়া সম্ভব হয়নি।
রোহিঙ্গা শ্রমিকের মাঝি শাহ আলম জানায়,বিভিন্ন এলাকায় ঠিকাদার জুবাইরের কাজ চলমান রয়েছে। এসব কাজে রোহিঙ্গা শ্রমিক কাজ করছে।
পেকুয়া থানার কর্তব্যরত উপ সহকারী পরিদর্শক (এএসআই) পলি এর সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,আটককৃত রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূর্বিতা চাকমা জানান, রোহিঙ্গারা পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়ায় অনুপ্রবেশের বিষয়ে সংবাদ কর্মী জালাল উদ্দিনের মাধ্যমে জানার পরপরই পুলিশ পাঠিয়ে তাদেরকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে এবং তাদেরকে ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেয়া হবে।
তিঁনি আরো বলেন,রোহিঙ্গাদের দিয়ে কাজ করানো যাবে না, এটা সরকারী নির্দেশনা। এটা অমান্য করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে ।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মদ আবু সাহিদ। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: রাশেদা ম্যানশন, ৯৮৬, মধ্যম রামপুর হালিশহর, চট্টগ্রাম | যোগাযোগ: 01869-600700, E-mail: [email protected]
Powered by somoyernews.com | Designed by F.A.CREATIVE FIRM LTD.