হাটহাজারীতে উপকার করতে গিয়ে নিজেরাই ফেঁসে গেলেন এনজিও’র জালে, প্রতিকারে সংবাদ সম্মেলন

প্রতিবেশীদের কথা বিশ্বাস করে তাদের উপকারে বিভিন্ন এনজিও’র ব্যাংক থেকে ঋণ উত্তোলন করে দিয়ে এখন নিজেরাই এনজিও’র জালে ফেঁসে গেছেন কয়েকজন নারী। ভাল মানুষের রুপ ধরে সেই প্রতিবেশীরা ঋণের টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে যাওয়ায় প্রতিনিয়ত কিস্তি পরিশোধে এনজিও’র চাপে দিশেহারা ভুক্তভোগীরা। এতে মানসিকভাবে এবং পারিবারিক বিপর্যস্ত তারা। ইতিমধ্যে টাকা পরিশোধে লিগ্যাল নোটিশ পেয়েছেন একাধিক ভুক্তভোগী। লিগ্যাল নোটিশ এবং প্রতিদিন নিয়মিত এনজিও’র লোকজন কিস্তি পরিশোধে চাপ প্রয়োগ করায় অনেকের সংসারে ভাঙ্গন দেখা দিচ্ছে। অনেকে রাগে অপমানে ক্ষোভে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে পারেন। এভাবেই এনজিও থেকে নেয়া ঋণের টাকা নিয়ে উধাও হওয়া প্রতারকদের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করেন ভুক্তভোগীরা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের জোবরা গ্রামের জনগণ পাড়া এলাকায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তোভোগীরা জানান, ওই পাড়ার আলমগীর শাহনাজ ও ইউসুফ হাছিনা দম্পত্তি দীর্ঘদিন ধরে এলাকার বয়স্কা নুর বানু, নিশাতুন্নাহার ঝুমা, মুন্নি আক্তার, আনোয়ারা বেগমসহ আরো কয়েকজন নারীর মাধ্যমে বিভিন্ন প্রয়োজনের কথা বলে বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ উত্তোলন করেন। প্রথমবস্থায় যথাসময়ে কিস্তির টাকা পরিশোধ করলেও পরবর্তীতে বিভিন্ন এনজিও থেকে ৩০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৩ লাখ পর্যন্ত এভাবে প্রায় অর্ধকোটি টাকা ঋণ উত্তোলন করেন। ভুক্তভোগীরা কেউ নিজের নামে কেউবা ঋণের সাক্ষি ও জামিনদার হয়ে তাদের সহযোগিতা করেন। ঋণ উত্তোলনের পর দু’একটি কিস্তি পরিশোধ করলেও পরবর্তীতে অভিযুক্তরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। তাদের মুঠোফোনও বন্ধ করে রাখে।

ফলে কোন ব্যাংকে সপ্তাহে কোথাও বা মাসিক কিস্তি পরিশোধ না করায় সাক্ষি ও জামিনদারদের টাকা পরিশোধে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। দিনমজুর পরিবারের ভুক্তোভোগী সদস্যরা টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তাদের উপর চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন বিভিন্ন এনজিও’র লোকজন। এর মধ্যে ভয়ে অনেকে ঘরের গরু, ছাগল, ঘরের আসবাবপত্র বিক্রি করে কিছু কিছু পরিশোধ করলেও আর পারছেন না বলে জানিয়ে দেন। টাকা না পেয়ে অনেক এনজিও লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন ভুক্তভোগীদের।

ভুক্তভোগীরা জানান, বাড়ি-ভিটে ছাড়া তাদের অবশিষ্ট কিছু নেই। একদিকে এনজিও’র চাপ অপরদিকে সংসারে অশান্তিতে তারা দিশেহারা। আত্মহত্যা ছাড়া তাদের আর কোন পথ খোলা নেই বলেও কান্নাজড়িত কন্ঠে উল্লেখ করেন তারা। তারা অভিযোগ করে বলেন, এনজিওর লোকজন প্রতারকদের বিরুদ্ধে কোন মামলা না করে সরাসরি সাক্ষি ও জামিনদারদের হয়রানি করছেন। প্রতারকদের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে প্রতারণার মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান সংবাদ সম্মেলনে।

একইসাথে এনজিও’র লোকদের অসহায় ভুক্তভোগীদের প্রতি সহায় হওয়ার অনুরোধ জানান সম্মেলনের মাধ্যমে।