/
সন্দ্বীপের মতো শান্তি ও সম্প্রীতিময় একটা জায়গায় একের পর এক মানুষ খুন হচ্ছে। অথচ দেখার কেউ নেই। এসব হত্যাকান্ড বন্ধে ও দায়ীদের শাস্তির আওতায় আনতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের ন্যূনতম তৎপরতা নেই। রাজনৈতিক দলগুলার হাইকমান্ডেরও নেই কোনো রেসপন্স। বিষয়গুলা খুবই উদ্বেগজনক। যার ফলে চারদিকে ভয়, শঙ্কা ও অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। প্রশাসন কিংবা রাজনীতি এরকম দায়সারাভাবে চলতে পারেনা। বিচারহীনতার এ সংস্কৃতি চলতে থাকলে আইন-আদালতের প্রতি মানুষের আস্থা হারাবে। ব্যাপকহারে হিংস্রতা ছড়িয়ে পড়বে চারদিকে।
শান্তি ফিরিয়ে আনার স্বার্থে এ মুহূর্তে সন্দ্বীপের প্রশাসনকে খুবই স্ট্রিক্ট রোল প্লে করা জরুরী। সেক্ষেত্রে, সামাজিকভাবে দায়িত্ব বন্টন করে দেওয়া যেতে পারে। সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য প্রবীণ ব্যক্তি ও তরুণ-যুবদকদের সমন্বয়ে মহল্লাভিত্তিক 'পর্যবেক্ষণ টিম' গঠন করে দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া যেতে পারে। এ টিমগুলো মহল্লাতে সকল ধরনের বিশৃঙ্খল ও জনবিরোধী কাজের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। তরুণরা এক্ষেত্রে আলাদা প্রতিবাদী টিম গড়তে পারে। বিশেষ করে, তরুণরা সজাগ থাকলে সমাজে দুর্বৃত্তায়ন অনেকাংশেই কমে আসবে। তাই, আদর্শ সমাজ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তরুণদের জোড়ালো ভূমিকা পালন করা উচিত। রাজনৈতিক দলগুলারও এই প্রেক্ষিতে স্বতঃস্ফূর্ত ভূমিকা রাখা উচিত। এতে করে প্রশাসনের উপর প্রেশার কমবে। এ টিমগুলোর উপর প্রশাসনের নজরদারি থাকবে, যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর কিছু না ঘটে। সবমিলিয়ে মহল্লাভিত্তিক শৃঙ্খলা বজায় রাখাটাই সকল পর্যায়ের দায়িত্বশীলদের মূল লক্ষ্য হতে হবে।
আরেকটা জরুরী কাজ হলো: রাজনৈতিক কর্মশালার আয়োজন করা। এ ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোকে আরো বেশি দায়িত্বশীল এবং আন্তরিক হতে হবে। নিজেদের নেতা, কর্মী এবং সমর্থকদের মাঝে সম্প্রীতি ও পারস্পরিক মেলবন্ধনের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে প্র্যাক্টিক্যালি সবাইকে পরমতসহিষ্ণু হওয়ার শিক্ষা দিতে হবে। অন্য দল কিংবা মতের যে কাউকে সহ্য করার মতো ক্যাপাসিটি অর্জন করতে হবে। এসব ব্যাপারে নার্সিং করা খুব খুব জরুরী দলীয়ভাবে।
কেনো জরুরী?
কারন, ৫ আগষ্ট পরবর্তী সময়ে সন্দ্বীপে প্রায় সবগুলা খুনের মূল কারন খুঁজতে গেলে দেখা যাবে, রাজনীতি। নোংরা রাজনীতি, গ্রুপিং রাজনীতি।
এসব নোংরামি থেকে বেরিয়ে এসে জনবান্ধব রাজনীতি ছড়িয়ে দিতেই এই নার্সিংটা জরুরী। সন্দ্বীপের প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের লিডিং পর্যায়ের নেতাদের প্রতি, স্বদলীয় কর্মীদের নিয়ে কর্মশালা করার আহ্বান জানাই। যে কর্মশালায় কর্মীদের সৎ, যোগ্য, দক্ষ ও সহনশীল হওয়ার জন্য উৎসাহিত করা হবে। কঠোরভাবে নির্দেশ দেওয়া হবে। নির্দেশ পালনে কেউ অনীহা দেখানোর পর সাথে সাথে বহিষ্কার করা হলে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এতোটা নিয়ন্ত্রণহীন ও নাজুক হয়ে পরতোনা।
সেজন্য সুন্দর, আদর্শ, সুশৃঙ্খল, সুরক্ষিত সন্দ্বীপ গঠনে সকলকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার বিকল্প নাই।
সত্যি বলতে, বারবার এসব খুনের নিউজ দেখতে এবং এগুলা নিয়া কথা বলতে আর ভালো লাগেনা। আর কত পরিবারকে স্বজন হারানোর জন্য জনমভর কান্না করা লাগবে? আর কত সন্তান পিতৃহারা হলে এসব খুনাখুনি বন্ধ হবে? এসব নোংরামি বন্ধ হওয়ার জন্য আর কত মানুষকে খুন হওয়া লাগবে? দায়সারা থাকা হবে আর কতকাল?
আর কত!
জাস্ট বাকরুদ্ধ!
উপপপ! সহ্য হয়না এসব আর!
বন্ধ হোক এসব নোংরামি। বন্ধ হোক এসব হত্যাকান্ড। সকলের জন্য নিরাপদ হয়ে উঠুক আমাদের সন্দ্বীপ। এটাই সর্বশেষ এবং প্রধান চাওয়া।
আসাদুজ্জামান জাহিদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মদ আবু সাহিদ। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: রাশেদা ম্যানশন, ৯৮৬, মধ্যম রামপুর হালিশহর, চট্টগ্রাম | যোগাযোগ: 01869-600700, E-mail: [email protected]
Powered by somoyernews.com | Designed by F.A.CREATIVE FIRM LTD.