
নিজস্ব প্রতিবেদক :
মিরসরাই উপজেলা যুবলীগের সদস্য দুই ভাইয়ের আধিপত্যতা ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে এলাকার সাধারণ মানুষ আতংকে আছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আওয়ামীলীগ ফ্যাসিবাদ সরকারের আমলে যেভাবে চালিয়েছে খুন, চাঁদাবাজি-রাহাজানি, ভূমিদস্যুতায় ভূমি দখল, বনবিভাগের সেগুন গাছ কেটে বন উজার করে দেওয়া সহ এমন কোনো এহেন কর্মকাণ্ড নেই দুই ভাই করেনি।
আর এই দুই ভাই হলো মোহাম্মদ এনায়েত হোসেন নয়ন ও ইখতিয়ার হোসেন পুনম। এ দুজনই চট্টগ্রাম মিরসরাই উপজেলা বড়তাকিয়া বাজার পূর্ব খৈয়াছড়া গ্রামের মৃত আবু ইউছুপ প্রকাশ খোকার পুত্র। অনুসন্ধানে জানা যায়, মৃত আবু ইউছুপ প্রকাশ খোকার ৪ পুত্র সন্তান তার মধ্যে বড় ছেলে ঢাকা রাজউক এ তৃতীয় শ্রেণী কর্মচারী পদে চাকুরী করে, তৃতীয় ছেলে সিএন্ডএফ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত, দ্বিতীয় ছেলে এনায়েত হোসেন নয়ন ও চর্তুথ ছেলে ইখতিয়ার হোসেন পুনম যুবলীগ রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থেকে আধিপত্য আর সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িত ছিলো।
আওয়ামী লীগের আমলে এনায়েত হোসেন নয়ন ও ইখতিয়ার হোসেন পুনম, দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে পাহাড় সমান অভিযোগের শেষ নেই। এলাকার মানুষ তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারতো না। ত্রাসের রাজত্ব চালিয়ে নিজেকে জাহির করাই দুই ভাইয়ের কাজ। ৫ আগষ্ট আওয়ামী ফ্যাসিবাদ সরকার পালিয়ে গেলে এনায়েত হোসেন নয়ন ও ইখতিয়ার হোসেন পুনম দুই ভাই কিছুদিন আত্মগোপনে থাকলেও বিএনপির কয়েক নেতার সাথে আঁতাত করে আবারও ফিরে এসে বিএনপির হয়ে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানা যায়।
জানা গেছে, এনায়েত হোসেন নয়ন সড়ক জনপথ ও সরকারি জায়গা দখল করে ঘর বানিয়ে ভাড়া দেওয়া, তার সাথে রয়েছে সড়ক জনপথ অধিদপ্তরের সীতাকুণ্ড অফিসের তৃতীয় শ্রেণী কর্মচারী নীল রতন চাকমা। নীল রতন চাকমাও দীর্ঘদিন একই জায়গায় চাকুরী করার সুবাধে তৎকালীন এলাকার আওয়ামী নেতা কর্মীদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে, ও সরকারি জায়গা কোথায় খালি আছে তাদের সাথে তথ্য আদানপ্রদান কারী হিসেবে কাজ করছে বলে সুত্রে জানা যায়।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ইখতিয়ার হোসেন পুনম তার কাজ হলো জায়গা দখলের কন্ট্রাক্ট নেওয়া, রাতের অন্ধকারে সরকারি বন থেকে সেগুন গাছ কেটে বাহিরে বিক্রি করে দেওয়া, মিরসরাই উপজেলা ঢাকা হাইওয়ে সড়কে ডাকাতির প্রধান হোতা হিসেবে কাজ করা। এখানেই শেষ নয়, ২০২৪ সালে ফেব্রুয়ারী ২৩ তারিখ সবজি ব্যবসায়ী মহিউদ্দিনকে বড়তাকিয়া বাজারে প্রকাশ্যে গণপিটুনিতে মেরে ফেলা হয়। শুক্রবার ভোরে এই গণপিটুনির ঘটনাটি ঘটায় ইখতিয়ার হোসেন পুনম।
পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে উল্টো বিএনপির কয়েক কর্মী ও এলাকার কিছু সাধারণ মানুষকে হয়রানি করে। নিহত মহিউদ্দিন পূর্ব খৈয়াছড়া এলাকার বাসিন্দা ছিলো। পরিবার পায়নি কোনো বিচার। এই গণপিটুনি ছিলো ইখতিয়ার হোসেন পুনমের দাবীকৃত চাঁদা না দেওয়ায় কাল হলো মহিউদ্দিনের কপালে। অভিযোগ রয়েছে বিগত সময়ে মিরসরাই অর্থনৈতিক জোন এলাকা ও বড়তাকিয়া এলাকায় আরও কয়েকটি খুন হয় এসব খুনের মদদদাতা ছিলো এই দুই ভাই এনায়েত হোসেন নয়ন ও ইখতিয়ার হোসেন পুনম। তারা সুকৌশলে মামলা থেকে বেঁচে যেতো। মিরসরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের কয়েক নেতা ও তার বড় ভাই রাজউক-এ কর্মরত নিশান হোসেন তাদের আশ্রয় প্রশ্রয়ে এসব কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতো বলে জানা গেছে।
তথ্য রয়েছে জুলাই অভ্যুত্থানে দুই ভাই প্রকাশ্যে সড়কে আন্দোলনকারীদের গুলি চালায়। এতে অনেক আন্দোলনকারীরা আহত হয়। অথচ বিএনপির কয়েক নেতা তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে দুই ভাইকে এলাকায় আবারও রাজত্ব কায়েম করার সুযোগ করে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আওয়ামী সরকার পতন হলেও এনায়েত হোসেন নয়ন ও ইখতিয়ার হোসেন পুনম এর বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি। এই দায় থেকে বিএনপির নেতারা ও পুলিশ এড়াতে পারবে না বলে স্হানীয় সাধারণ জনগণের অভিযোগ।