পেকুয়ায় মসজিদ কমিটি নিয়ে সংঘর্ষে আহত ২

পেকুয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি :

কক্সবাজারের পেকুয়ায় মসজিদ পরিচালনা কমিটি নিয়ে বিরোধ প্রকট আকার ধারণ করেছে। সৃষ্ট বিরোধকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে দুজন গুরুতর আহত হয়েছে। ১৭ সেপ্টেম্বর (বুধবার) বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের শরতঘোনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

 

খবর পেয়ে পেকুয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। আহতরা হলেন, শরতঘোনা এলাকার আবদুল মালেকের পুত্র মো.কায়সার (৪৫), ও মৃত আবদুল হাকিমের পুত্র মহি উদ্দিন (২৮)। তাদেরকে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। কায়সার এর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। তাঁর হাতে হাড়ভাঙা আঘাত রয়েছে বলে জানান কর্তব্যরত চিকিৎসক।

স্থানীয়রা জানান, শরতঘোনা মাদরাসা পাড়া জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটি নিয়ে স্থানীয় মাওলানা মনির উদ্দিন ও মোতোয়াল্লী আবুল হাসেম গং এর সঙ্গে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি শামসুল আলম ও সেক্রেটারী নাজেম উদ্দিন গংদের বিরোধ চলছে। সম্প্রতি মসজিদের আয়-ব্যয়ের হিসাব নিয়ে দুপক্ষের বিরোধ চরম আকার ধারণ করে। এর জের ধরে দুপক্ষ দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। এতে কয়েকজন আহত হন।

এ ব্যাপারে মাওলানা মনির উদ্দিন বলেন, তিনি মসজিদ পরিচালনা কমিটির বর্তমান সভাপতি। তিন মাস আগে দায়িত্ব প্রাপ্ত হন। পুর্বের কমিটিতে যারা ছিল তাদের দু বছরের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু তাঁরা পেশি শক্তি জোরে টানা এক যুগ দায়িত্ব পালন করেন। এনিয়ে সমাজের মানুষ ও সাবেক কমিটির নেতৃত্ববৃদন্দের সঙ্গে দ্বন্ধ লেগেই থাকতো। আমরা মসজিদের আয়-ব্যয়ের হিসাব চাওয়ায় তাঁরা ক্ষিপ্ত হন। গড়িমসি করে গত কোরবানি ঈদের আগের দিন ২০২৪ সালের একটি মনগড়া হিসাব দেন। অথচ তাঁরা টানা ১২ বছর দায়িত্ব পালন করেন। লিখিত আবেদনের প্রক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এর দুজন প্রতিনিধি তদন্তে যান। এতে ক্ষিপ্ত হন শামসুল আলম ও নাজেম উদ্দিন গং। প্রতিনিধি চলে যাওয়ার পর তারা সংঘবদ্ধ হয়ে হামলা চালান। হামলায় রমজান আলী, শেহাব উদ্দিন গিয়াস উদ্দিন মনু, শামসুল আলম, গিয়াস উদ্দিন, কবির হোসেন, আবদুল খালেক, আবুল হাসেম, তারেক, দিদারুল ইসলাম, মনির উদ্দিন, ইদ্রিস ,মনছুর আলমসহ ২০-২৫ জন অংশ নেন।

মসজিদের মোতায়াল্লী আবুল হাসেম বলেন, শামসুল আলম, ও নাজেম উদ্দিন গং দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন কালে মসজিদের বিপুল পরিমান অর্থ আত্মসাত করেন। দুই বছরের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হলেও তাঁরা ক্ষমতার জোরে ১২ বছর দায়িত্ব পালন করেন। আমরা বার বার মসজিদের আয়-ব্যয়ের হিসাব দিতে বলি। কিন্তু তাঁরা গড়িমসি করে। কয়েক মাস আগে মাত্র এক বছরের হিসাব দেন। তাও আবার মৌখিক হিসাব। কাগজে কলমের কোন প্রমানস্বরুপ হিসাব দিতে পারেনি। আজকে এর জের ধরে আমাদের উপর পরিকল্পিত হামলা চালায়। গত বৃহস্পতিবার তাঁরা বর্তমান কমিটির সহ সেক্রেটারী জাকরিয়াকে মারধরের চেষ্টা করে। আমরা পুলিশ পাহারায় শুক্রবার জুমার নামাজ আদায় করি।

পেকুয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফরিদ জানান, মসজিদ কমিটি নিয়ে দু’পক্ষের দ্বন্ধ চলছে। ৯৯৯ এ কল পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। উভয়পক্ষকে শান্ত থাকতে বলেছি।