চট্টগ্রামের চট্টগ্রাম সীতাকুণ্ডে মোস্তফা কামাল নামে এক ব্যক্তিকে গুলি হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে৷ একইসাথে ১৫ লাখ টাকা চাঁদাদাবিরও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দায়েরের পাশাপাশি চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মামলা করেছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সীতাকুণ্ড থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মাহবুব আলম।
মামলার বিবাদীরা হলেন, মুরাদপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ রহমত নগর নয় নম্বর ওয়ার্ডের কেনু মেম্বারের ছেলে গিয়াস উদ্দিন সেলিম (৩২), তাজুল ইসলামের ছেলে শওকত হোসেন (৩৩), মৃত সুলতানের ছেলে মোঃ খোকন (৪২), মৃত মোঃ বশরের ছেলে মোঃ শাহেদ (৩৫), মোঃ সেলিম (৪৪)।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মোঃ মোস্তফা কামাল মুরাদপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ রহমত নগর ৯ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা।মামলার বিবাদীরা পরিকল্পিতভাবে বাদীর আইনী অভিভাবক না সুযোগে তফশিলভুক্ত জমি জোরপূর্বক দখলে নিতে চায়৷ এজন্য নিয়মিত হুমকি দিচ্ছেন বিবাদীরা। তফশীলভুক্ত জমিতে থাকতে হলে বাদী এবং বাদীর মাকে ১০ লাখ চাঁদা দাবি করেন তারা। চাঁদা দিতে বাদী অস্বীকৃতি জানালে বিবাদীগণ বাদীর গোয়ালঘর ভাঙচুর করে ইট ও টিন খুলে নিয়ে যায়।
এমতাবস্থায় বাদীর এক লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়।এখানেই শেষ নয়, ভুক্তভোগী পরিবারকে এক মাসের মধ্যে ঘর ছাড়ার হুমকি দেয় তারা। অন্যথায় তাদের মাটির সাথে মিশিয়ে দেবে বলে হুমকি দেয়।
শুধু তাই নয়, প্রাণের ভয় থাকলে এক লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে অন্যথায় ১০ লাখ টাকা চাঁদা দিতে বলেও সাফ জানিয়ে দেন বিবাদীরা।
অভিযোগ ওঠেছে, বিবাদীদের অত্যাচারে ঘরে টিকতে না পেরে অতিষ্ঠ হয়ে এক ভাড়াটিয়াকে ভাড়া দেন ভুক্তভোগী৷ আর ভুক্তভোগীর পরিবার বর্তমানে অন্যত্র বাসা ভাড়ায় থাকছেন।
মামলায় আরও অভিযোগ করা হয়, এক পর্যায়ে গত ১০ আগস্ট বাদী ভাড়াটিয়ার কাছে ঘরভাড়া আনতে গেলে বিবাদীরা গতিরোধ করে এবং ঘরভাড়া তারা নিবে বলে হুমকি দেয়৷ ঘর এবং অন্যান্য জায়গায ভোগ করতে চাইলে ১০ লাখ টাকার পরিবর্তে বাজার চাহিদা বিবেচনা করে তাদের ১৫ লাখ টাকা দিতে হবে বলে জানায়। এসময় এ নম্বর বিবাদী তার হাতের অস্ত্র উঁচিয়ে বলে বেশি বাড়াবাড়ি করলে এখুনি মাথার খুলি গুলি করে উড়িয়ে দিবো। এমন মুহুর্তে অজ্ঞাতনামা বিবাদীসহ সকল বিবাদীরা হাতে শাবাল, হকিস্টিক, দা, কোদাল দিয়ে বাদীর কাচারী ঘর ও আশেপাশের বাথরুম ভাঙ্গা শুরু করে। এরপর সব মিলিয়ে দুই লাখ টাকার মালামাল চুরি করে নিয়ে যায়। এসময় বলা হয়, যদি শান্তিতে থাকতে ইচ্ছা হয় তাদেরকে ১৫ লাখ টাকা দিতে হবে অন্যথা বাদীর মাকে হত্যা করা হবে এবং একপর্যায়ে বাদীকে চড় থাপ্পড় লাগিয়ে দেওয়া দেয়।
বাদী মোস্তফা কামাল জানান, বিবাদীরা হত্যার হুমকি ও চাঁদা দাবি করে ক্ষান্ত হননি। তারা প্রভাব দেখিয়ে বলেন, এই জায়গায় আমরা জুয়ার আসর বসাব, ইয়াবার ব্যবসা করব। তুই বাঁধা দিলে বা জায়গা দাবি করলে গুলি করে মেরে ফেলব। এসময় এক নম্বর বিবাদী গিয়াস উদ্দিন বাদীর পকেটে থাকা এক হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। বিবাদীরা বলেন, এখন থেকে জায়গা, ঘর বাড়ি এবং পুকুর সব আমাদের। কেউ যদি এই ঘটনার সাক্ষী দেয় তাদের প্রাণে মেরে ফেলব।
এ বিষয়ে এসআই মোহাম্মদ মুন্না জানান, মোস্তফা কামাল প্রকাশ কামাল উদ্দিন একটি অভিযোগ করেছেন থানায়৷ আদালতে মামলাও করেছেন তিনি৷ জমি দখল ও ঘর দখল সংক্রান্ত অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে৷ আমরা অধিকতর তদন্ত করছি বিষয়টি৷ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।