
চট্টগ্রামে ২০২১ সালের জুনে পুলিশের গুলিতে পা হারানো মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ-সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সাইফ বিএনপির চেয়ারপারসন তারেক রহমানকে স্বাগত জানাতে জাতীয় পতাকা হাতে ঢাকায় পৌঁছেছেন। সকাল আটটায় তিনি হোটেল থেকে বেরিয়ে তিনশো ফিটের রাস্তায় পায়ে হেঁটে যান। এসময় তিনি হাতে জাতীয় পতাকা উঁচিয়ে তারেক রহমানকে স্বাগত জানান।
তার সাথে থাকা বিএনপি নেতাকর্মীররা জানান, সাইফুল ইসলাম সাইফ স্বাভাবিক চলাফেরা থেকে বঞ্চিত। তিনি চলতে ফিরতে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। এরপরও দলের টানে, নেতার টানে তিনি ছুটে আসেন ঢাকায়।
সাইফুল ইসলাম সাইফ বলেন, আমি সহজে কোথায় মুভ করিনা। প্রায় ৫ বছর আগে পুলিশে গুলিতে একটি পা হারানোর পর আমার চলাফেরা করতে কষ্ট হয়। আমাকে দেশ নায়েক তারেক রহমান কৃত্রিম পা লাগিয়ে দিয়েছেন। এরপর স্বাভাবিক হাঁটা আমার জন্য অনেক কষ্টের। লিডার তারেক রহমান দেশে আসছেন বহু বছর পর, তাইতো সূদূর চট্টগ্রাম থেকে এসে পড়েছি গতকাল রাতে। তার ফেরা আমার কাছে অনেক আনন্দের। একবারও মনে হইনি আমি পা হারিয়েছি। বরং মনে হয়েছে গত ১৮ বছর তারেক রহমানকে একপ্রকার হারিয়েছি। আজ আবারও আমরা তাকে ফিরে পেলাম। আমার মতো লাখ লাখ নেতাকর্মী যেন তাদের অভিভাবক ফিরে পেলো। সেইসাথে দেশের রাজনীতির শূণ্যতা পূরণ হলো।
সাইফের করা মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের ১৬ জুন রাতে পুলিশের সোর্স আকাশের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর থেকে কল পেয়ে অক্সিজেন মোড়ে যান সাইফুল। এ সময় বায়েজিদ থানার সাবেক ওসি মো. কামরুজ্জামান, উপপরিদর্শক মেহের অসীম দাশ, উপপরিদর্শক মো. সাইফুল ইসলাম, উপপরিদর্শক কেএম নাজিবুল ইসরাম তানভীর, উপপরিদর্শক মো. নুর নবী, সহকারী উপপরিদর্শক মো. রবিউল হোসেন ও থানার সোর্স মো. শাহজাহান ওরফে আকাশসহ আরও দুই পুলিশ কর্মকর্তা তাকে ঘিরে ধরেন। তাকে তারা একটি সাদা রঙের প্রাইভেট কারে তুলে নিয়ে যান। সাইফুলকে দুই ঘণ্টা গাড়িতে করে ঘুরিয়ে বায়েজিদ লিংক রোডে নিয়ে যান। সেখানে গাড়ি থেকে নামার পর উপপরিদর্শক মেহের অসীম দাশ সাইফুলকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘ওপর থেকে তোমার ক্রসফায়ারের অর্ডার আছে, ৫ লাখ টাকা দিলে আমরা ছেড়ে দিব।’
সাইফুল টাকা দিতে অস্বীকার করলে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা তার মুখ বেঁধে লিংক রোডের নির্জন স্থানে নিয়ে যান। পরে বাম পায়ে দু’জন পুলিশ কর্মকর্তা দুই রাউন্ড গুলি করেন। এ সময় আরও কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়। সাইফুল ঘটনাস্থলে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
জ্ঞান ফিরে সাইফুল নিজেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেখতে পান। চিকিৎসকের পরামর্শে তাঁকে পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়া হলে তার বাম পা কেটে ফেলা হয়।
ওই ঘটনার পর সাইফুলের কাছ থেকে অস্ত্র পাওয়া গেছে বলে মামলা দেয় বায়েজিদ থানা পুলিশ। ২০২২ সালের ১ অক্টোবর রাজধানীর শ্যামলীর ডায়নামিক লিম্ব সেন্টারে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের নির্দেশনায় সাবেক ছাত্রদল নেতা সাইফুলের কেটে ফেলা বাম পায়ের সাথে কৃত্রিম পা লাগানো হয়। এরপর থেকে সেটি দিয়ে হাঁটতে শিখেন সাইফুল।











