ডেস্ক রিপোর্ট: চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর সাথে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জেং কিউন নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল সোমবার টাইগারপাসস্থ অস্থায়ী নগর ভবনে তাঁর দপ্তরে সৌজন্য সাক্ষাত করতে এলে মেয়র তাঁদেরকে সাদর অভ্যর্থনা জানান। সাক্ষাতকালে মেয়র বলেন, স্বাধীনতার পর পরই যেসব দেশ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়া তার মধ্যে অন্যতম। বাংলাদেশে বিদেশী বিনিয়োগ প্রক্রিয়ায় শুরু থেকেই যুক্ত আছে দক্ষিণ কোরিয়া। বাংলাদেশকে বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম পোষাক রপ্তানীকারক দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবার নেপথ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার বিশেষ অবদান রয়েছে। উন্নয়ন সহযোগী এই দেশটি বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন বিশেষভাবে চট্টগ্রামে মেট্রোরেল প্রকল্পের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়ার কোইকা’র সহায়তায় প্রকল্পের প্রাথমিক সমীক্ষা কার্যে ৫১কোটি টাকা অনুদান প্রদানের মাধ্যমে সরকার সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু করতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত স্বদিচ্ছার কারণে চট্টগ্রাম অচিরেই আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত নগরীতে রূপান্তরিত হতে যাচ্ছে।
চট্টগ্রাম নগরীর যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রভূত উন্নয়ন সাধিত হওয়ায় বিনিয়োগে অপার সম্ভাবনা তৈরী হয়েছে। এখানে বাস্তবায়ন হচ্ছে বে-টার্মিনাল, বঙ্গবন্ধু শিল্পাঞ্চল, কর্ণফুলী তলদেশে ট্যানেল, গভীর সমুদ্র বন্দরসহ নানাবিধ উন্নয়ন প্রকল্প। ২০৪১সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করে উন্নত দেশের কাতারে বাংলাদেশকে উন্নীত হওয়ার জন্য দক্ষিণ কোরিয়াকে বিনিয়োগ, তথ্য-প্রযুক্তিগত সহায়তা ও প্রশিক্ষণ আরো বৃদ্ধি করার জন্য তিনি আহ্বান জানান। চসিক একটি সেবা প্রতিষ্ঠান, এর মূল কাজ হচ্ছে নগরীর পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা, আলোকায়ন এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন। এর পাশাপাশি চসিক ৯০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ৬০টি দাতব্য চিকিৎসালয়, ৪টি মাতৃসদন, হোমিও দাতব্য চিকিৎসালয়, হেলথ টেকনোলজি, মিডওয়াইফ ইনস্টিটিউট পরিচালনা করছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জেং কিউন চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যরে ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, চট্টগ্রাম পাহাড়, নদী, সাগর বেষ্টিত একটি অনন্য নগরী। যেকোন বিদেশী পর্যটক এর সৌন্দর্য্য দেখে বিমুগ্ধ হবে। তিনি বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে অভিমত প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানীখাত পোষাকশিল্পের প্রারম্ভে অবদান রাখতে পারায় আমরা গর্ব অনুভব করি। বাংলাদেশে বিদেশী বিনিয়োগকারী হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়া শীর্ষস্থানে রয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেমের আওতায় বাংলাদেশের জনগণের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হচ্ছে। ১৯৯৯সালে দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশে কেইপিজেড প্রতিষ্ঠার অনুমতি প্রাপ্ত হয় এবং ইয়ংওয়ান’র মত পোষাক রপ্তানীকারক প্রতিষ্ঠান এখানে শিল্পস্থাপনের মাধ্যমে সুনামের সাথে ব্যবসা পরিচালিত করে বহু কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। কেইপিজেড’র পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন হলে অন্যদেশের বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে আস্থা পাবে। বাংলাদেশকে ২০৪১সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও নিজস্ব ব্র্যান্ডের বিকাশ ঘটাতে হবে। এ লক্ষ্যে শীঘ্রই অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য কোইকা’র সহযোগিতায় চট্টগ্রামে মেট্রোরেল প্রকল্পে নগরীর উন্নয়নের সাথে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের নিয়ে মতবিনিময় ও তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা হবে। এই সমীক্ষা কার্যক্রম সম্পন্ন হতে প্রায় ১৮মাস সময় প্রয়োজন হবে বলে তিনি মেয়রকে অবহিত করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলম, সচিব খালেদ মাহমুদ, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, তত্ত্ববধায়ক প্রকৌশলী মনিরুল হুদা, অতিরিক্ত প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির চৌধুরী, কোরিয়ার ফার্স্ট সেক্রেটারী জেং ইউল লি, প্রফেসর ইলজন চ্যাং, কোইকা’র প্রতিনিধি চ্যাউন কিম, জিং বো চুই, মো জেন কং, চট্টগ্রাম কোরিয়ান এসোসিয়েশন’র চেয়ারম্যান মি. জিনহুক পাইক।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মদ আবু সাহিদ। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: রাশেদা ম্যানশন, ৯৮৬, মধ্যম রামপুর হালিশহর, চট্টগ্রাম | যোগাযোগ: 01869-600700, E-mail: [email protected]
Powered by somoyernews.com | Designed by F.A.CREATIVE FIRM LTD.