সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ জামালগঞ্জ উপজেলার জোয়ালভাঙ্গা হাওরের অভ্যন্তরে বুড়ি ডাকুয়া বিল থেকে রক্তিনদীর নিকটবর্তী লালমিয়ার বাড়ির স্লুইসগেট অভিমুখে পানি নিষ্কাশনের খাল গভীর খনন করে নিচ্ছে বিলের ইজারাদার। এতে স্থানীয় জোয়ালভাঙ্গা হাওর ঝুকিতে পড়েছে বলে উপজেলার সাচনাবাজার ইউনিয়নের শুকদেবপুর গ্রামসহ আশপাশ গ্রামের এবং বুড়ি ডাকুয়া হাওর-বিল এলাকার কৃষকেরা গত ০৪ এপ্রিল জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে গণ-স্বক্ষরিত লিখিত অভিযোগ করেছেন।
দূর্লভপুর মৎসজীবি সমবায় সমিতির সভাপতি মোস্তফা মিয়া শাহ'র বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানা যায়, বুড়ি ডাকুয়া বিলের ইজারাদার দূর্লভপুর মৎসজীবি সমবায় সমিতির পক্ষ থেকে হাওরের পানি চলাচলের এই খাল অভয়াশ্রম করার কথা বলে গভীরভাবে খনন করা হচ্ছে। খালের লাগোয়া জমির মালিকেরা জানান, সেখানে হাওরের খালে সরকারের খাস রেকর্ডীয় জায়গা মাত্র ৩৪শতক। কিন্তু ইজারাদার স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে খালের খননকৃত মাটি দু-পাড়ে ভরাট করে ব্যক্তি মালিকানাধীন ধান মাড়াইয়ের কয়েক একর কান্দার জায়গাও বেদখল করে নিচ্ছে।
পাশাপাশি জোয়ালভাঙ্গা হাওরে সুরমার শাখা রক্তিনদীর প্লাবিত পানি ঢুকার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। কারণ জোয়ালভাঙ্গা হাওরের অভ্যন্তরে বুড়ি ডাকুয়া বিলের সাথে এই খাল বৃহত্তর সুরমার শাখা রক্তিনদীর সাথে সংযুক্ত। রক্তিনদীর তীরে লালমিয়ার বাড়িতে স্থাপিত স্লুইসগেট এই হাওর রক্ষা করে। স্লুইসগেট থেকে পূর্বদিকে বিল এলাকা পর্যন্ত পানি নিষ্কাশনের সরু খালটি সম্প্রতি বিলের ইজারাদাররা অভয়াশ্রম করার অজুহাতে গভীর খনন করে নিচ্ছে। আর এতে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে হাওর ডুবি এবং ফসল হানির আতংক দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় কৃষকেরা আরো জানান, হাওরের ফসলের হুমকি বাড়িয়ে স্লুইসগেট থেকে হাওরমুখী এই খাল মাছের অভয়াশ্রম তৈরির জন্য ইজারাদাররা খনন করছে না। খাল গভীর করে খনন করার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বর্ষার শেষে হাওরের ভাটীতে এই খালের গভীরে হাওরের সমস্ত মাছ তাড়িয়ে এনে জমা করার জন্য। কৃষকেরা আশংকা প্রকাশ করে জানান, সম্প্রতি সুরমা নদীর পানি প্রতিদিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে। পানির চাপে রক্তিনদীও টইটুম্বুর। এমতাবস্থায় হাওরের ফসল রক্ষায় সরকার যেখানে বাঁধ দিচ্ছে, সেখানে নদীতীরের খাল গভীর খনন করে সমিতির লোকেরা ব্যক্তি স্বার্থে হাওরের ইরি-বোরো ফসলকে চরম ঝুকিতে ফেলে দিচ্ছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চেয়ে অভিযুক্ত মোস্তফা মিয়া শাহকে পাওয়া যায়নি। তবে জানা গেছে, মোস্তফা মিয়ার ভাতিজা প্রভাবশালী আনোয়ার মিয়া গায়ের জোরে দাপট খাটিয়ে জোরপূর্বক এই খালটি নিজের স্বার্থে খনন করছেন। তার সাথে এব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি কথা না বলে এই প্রতিবেদককে ধমক দিয়ে ফোনের সংযোগ কেটে দেন।
এব্যাপারে জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিশ্বজিত দেব বলেন, হাওরের বাঁধের কাজ নিয়ে আমরা খুবই ব্যস্ত। তাছাড়া খাল খননের বিষয়টি তাৎক্ষণিক ভাবে আমাকে কেউ জানায়নি। এখন লিখিত অভিযোগ যেহেেতু এসেছে তাই স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে এব্যাপারে ব্যবস্থা নেবো যাতে খননকাজ আর না হয়।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মদ আবু সাহিদ। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: রাশেদা ম্যানশন, ৯৮৬, মধ্যম রামপুর হালিশহর, চট্টগ্রাম | যোগাযোগ: 01869-600700, E-mail: [email protected]
Powered by somoyernews.com | Designed by F.A.CREATIVE FIRM LTD.