
প্রেস বিজ্ঞপ্তি : গত ০৭ মে চট্টগ্রামের পাহাড়তলীতে প্রকাশ্যে লাঠি ও রড দিয়ে পিটিয়ে ব্যবসায়ী ফরিদ হত্যার এজাহারনামীয় ও হত্যাকান্ডের সাথে সরাসরি জড়িত ২ আসামীকে কুমিল্লা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম। নিহত ভিকটিম ফরিদ চট্টগ্রাম জেলার পাহাড়তলী রেলওয়ে কলোনীতে একটি কার ওয়াশের
ব্যবসায়ী এবং পাশাপাশি রেলওয়ের জায়গায় দোকান নির্মান করে ভাড়ার ব্যবসাও ছিলো তার। দোকান ভাড়ার টাকা আদায় নিয়ে জনৈক ব্যক্তি আলাউদ্দিন আলো এবং দিদারুল আলম প্রকাশ টেডি আলম এর সাথে বিরোধ চলে আসছিল। উক্ত বিরোধের জের ধরে আলাউদ্দিন আলো এবং দিদারুল আলম প্রকাশ টেডি আলম ফরিদের নিকট হতে বিভিন্ন সময় চাঁদা দাবি করে আসছিল। ফরিদ চাঁদার টাকা দিতে রাজি না হলে সে সময় উল্লেখিত ব্যক্তিদ্বয় প্রাণে হত্যাসহ যে কোন ক্ষতি করবে বলে হুমকি দিতো।
গত ০৭ মে ২০২২ খ্রি. তারিখ রাত আনুমানিক ১১১৫ ঘটিকায় ফরিদ পাহাড়তলী এলাকার একটি চায়ের দোকানে বসে চা পান করা অবস্থায় সে জানতে পারে তাকে মারার জন্য একদল
দুস্কৃতিকারী তাকে ধাওয়া করছে। তখন ফরিদ প্রানের বাচার ভয়ে দৌড়ে পালানোর চেষ্টাকালে পাহাড়তলী বাজার রেলষ্টেশনের প্রবেশ পথে পৌছালে দুস্কৃতিকারী পূর্ব শত্রæতার জেরে পরিকল্পিতভাবে তাকে ঘেরাও করে তাদের হাতে থাকা কাঠের বাটাম, ষ্ট্যাম্প, লাঠি, ইটের টুকরা, কিরিচ, রড, ধারালো ছোরা এবং দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে নির্মম ও নৃশংসভাবে কুপিয়ে মারাত্বক জখম করে। এ সময় ফরিদ বাঁচার জন্য তাদের কাছে অনেক আকুতি মিনতি এমনকি প্রাণ ভিক্ষা চাইলেও তার কথায় দুস্কৃতিকারীদের মন গলেনি একটুও। পরবর্তীতে আশপাশের লোকজনের সহায়তায় তার স্ত্রী গুরুতর আহত অবস্থায় ফরিদকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ০৮ মে ২০২২ খ্রি. রাত আনুমানিক ০২২৩ ঘটিকায় ফরিদ মৃত্যবরণ করে।
প্রকাশ্য দিবালোকে এই নারকীয় হত্যাকান্ড চট্টগ্রাম তথা সারাদেশের প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রিক মিডিয়াসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। উক্ত ঘটনায় নিহত
ভিকটিমের বোন বাদী হয়ে চট্টগ্রাম জেলার ডাবলমুরিং থানায় ১১ জন নামীয় এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১৫/১৬ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং- ০৭/১৬৭, তারিখ ০৮ মে ২০২২ খ্রি., ধারা- ৩০২/৩৪, পেনাল কোড ১৮৬০।
ঘটনার পর হতে আসামীরা আইন-শৃংঙ্খলা বাহিনীর হাত থেকে গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপন করে। চাঞ্চল্যকর ও লোম হর্ষক এই হত্যাকান্ডের আসামীদের গ্রেফতারের জন্য র্যাব-৭
চট্টগ্রাম বিষয়টি চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহন করে। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারী ও ছায়াতদন্ত শুরু করে। নজরদারীর এক পর্যায়ে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম জানতে পারে যে, উক্ত মামলার এজাহারনামীয় ০২ জন আসামী আইন- শৃংঙ্খলা বাহিনীর হাত থেকে গ্রেফতার এড়াতে কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম এবং চান্দিনা থানা এলাকায় আত্মগোপন করে রয়েছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ১১ মে ২০২২ খ্রি. তারিখ আনুমানিক ০৯৫০ ঘটিকায় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি
আভিযানিক দল বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত এজাহারনামীয় আসামী ০১। মোঃ আলী আজগর লেদা (২৫), পিতা-আঃ কুদ্দুস, সাং-পশ্চিম ডেকরা,
থানা-চৌদ্দগ্রাম, জেলা-কুমিল্লা এবং ২। মোঃ ইসমাইল হোসেন (৩০), পিতা-মোঃ আঃ আলী শেখ, সাং-মাইটিলা পাড়া, থানা-পাহাড়তলী, চট্টগ্রাম মহানগর’দের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত আসামীরা উপস্থিত স্বাক্ষীদের সামনে উল্লেখিত হত্যা মামলার এজাহার নামীয় পলাতক আসামী মর্মে স্বীকার করে।
এছাড়াও সিডিএমএস পর্যালোচনায় করে ধৃত ২নং আসামী ২। মোঃ ইসমাইল হোসেনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম মহানগরীর হালিশহর থানার মামলা নং-২২, তাং-১৮/০৯/২০২১ খ্রিঃ, ধারা-২০১৮
সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনের ৩৬(১) সারণীর ১০(ক) এর একটি মামলা পাওয়া যায়।
গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।











