পত্নীতলা ( নওগাঁ ) প্রতিনিধি: নওগাঁর পত্নীতলার পুঁইয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি মো: দুলাল হোসেনের বিরুদ্ধে এএসসি পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা চলমান অবস্থায় বেধরক মারপিটের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে শামীম রেজা নামক একজন শিক্ষার্থী বাদী হয়ে পত্নীতলা থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রবিবার (২২ মে) দুপুর আনুমানিক ১২ টায় নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার পুঁইয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি মো: দুলাল হোসেনের বিরুদ্ধে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে বিচারের নামে শিক্ষা আইন কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এসএসসি দুই পরীক্ষার্থী মো: শামীম রেজা ও মো: আজমাইন খন্দকার কে বেধরক মারপিটের অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে অভিযোগ কারী শামীম রেজা বলেন, প্রতিষ্ঠানের ৮ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আমাদের ছোট ভাই মো: সাব্বির হোসেন অকারণে আমাদের কে খুব খারাপ ভাষায় গালিগালাজ করে। বিষয়টি জানার পরে আমরা সাব্বিরের কাছে যাই এবং বলি ভাইয়া তুমি আমাদের কে নাকি খারাপ ভাষায় বকাককি করেছো। সাব্বির আমাদের কে তখনো অনেক খারাপ ভাষায় কথা বলে এবং আমাদের স্কুলের সভাতির নাম ধরে বলে , এই স্কুলের সভাপতি আমার চাচা। আমি এই স্কুলের নেতা, আমি যা বলবো তাই হবে। তখন আমি ছোট ভাই সাব্বিরকে শাসনের জন্য একটা থাপ্পর মারি। যার কারণে আমাদের প্রধান শিক্ষক আমাদের বিচার করে, আমরা তা মাথা পেতে নিই।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাদপুঁইয়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক এর ছেলে মো: ইমরুল কায়েস নামের একটি ছেলে আমাকে ও আমার বন্ধু আজমাইন খন্দকার কে স্কুলের গেটে নিয়ে মারধর করে তখন আমি নিজের জীবন রক্ষার্থে বাবাকে ফোন দিই। তাৎক্ষণিকভাবে বাবা স্কুলে আসেন। বাবা অফিসে বসে থাকা অবস্থায় সকলের অনুমতিতে আমি বাহিরে আসি। রুম থেকে বাহিরে আসার পরে আমাকে আবারে ইমরুল কায়েস ও তার চার পাঁচজন ছেলে স্কুলের মাঠে বেধরক মারপিট করে অফিসে ধরে আনেন। অফিসে আসার সাথে সাথে আমাদের কথা বলার কোন সুযোগ না দিয়েই স্কুলের সভাপতি মো: দুলাল হোসেন বাঁশের কাঁচা লাঠি দিয়ে মারতে শুরু করে আর বলে আর কোনদিন স্কুলের ভিতরে যেন তোদের না দেখি তোদের। পরীক্ষার প্রবেশপত্র পর্যন্ত তোদের দেওয়া হবেনা। আমরা অসহায়ের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বহিরাগতদের দ্বারা মাইর খেলাম, বিনা অপরাধে সভাপতির হাতে মাইর খেয়ে নিজেদের ভবির্ষ্যৎ রক্ষার্থে থানায় লিখিত অভিযোগ করি। আমাদের উপর অন্যায় করা হয়েছে। আমরা ন্যায় বিচার চাই।
অভিযোগকারী শামীম রেজার বাবা মো: বুলবুল হোসেন বলেন, আমার ছেলেকে শিক্ষকরা শাসন করবে এতে আমার কোন আপত্তি নেই। কিন্তু বহিরাগত ও সভাপতি কেন মারবে? আমরা গরীব বলে ওরা যা ইচ্ছে তাই করবে? আমার ছেলে কে কেন অন্যায়ভাবে মারা হলো? আমি এর সঠিক ও ন্যায় বিচার চাই। এলাকার সচেতন নাগরিক ও প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা জানান, বহিরাগতরা এসে আমাদের শিক্ষার্থীদের উপর হাত উঠাবে এটি কখনোই মানার মতো না। শিক্ষার্থীরা অপরাধ করবে শিক্ষকগণ আছেন তারা শাসন করবে কিন্তু এখানে বহিরাগত ও সভাপতি কেন? আমরা দ্রুত ন্যায় বিচারের বিচারের জোর দাবি জানাচ্ছি। যদি তাদের বিরুদ্ধে জোরালো ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয় তাহলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাদ্ধ হবো।
পুঁইয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: মোস্তফা আলী মন্ডল জানান, এএসসি পরীক্ষার্থী শামীম রেজা ও আজমাইন খন্দকার এবং ৮ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সাব্বিরের সাথে বেশ কিছুদিন থেকে ঝামেলা চলে আসছিল। আমি উভয় পক্ষকে ডেকে মিমাংসা করে দিয়েছি। গত রবিবার হঠাৎ জানতে পারি ইমরুল কায়েস নামের একাট ছেলে প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আমার শিক্ষার্থীকে মারপিট করেছে আমার স্টাফদের সামনে। এ বিষয়টি আমি সভাপতিকে জানালে সভাপতি বহিরাগত ইমরুল কায়েস কে কিছু না বলে শিক্ষার্থী শামীম রেজা ও আজমাইন খন্দকার বেত দিয়ে একটু শাসন করে। সভাপতি কোন শিক্ষার্থীদের কে বেত দিয়ে শাসন করতে পারে কিনা এই বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি সরাসরি বলেন, সভাপতি কেন কোন শিক্ষক পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের শরীরে হাত উঠাইতে পারে না।
অভিযুক্ত পুঁইয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি ও ইমরুল কায়েস আর সাথে এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইমরুল কায়েস মারার কথা স্বিকার করলেও সভাপতি দুলাল হোসেন প্রথমত অস্বিকারে গেলেও প্রশ্নের উত্তরে এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদে কে মারর কথা স্বিকার করেন। পত্নীতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি ) শামছুল আলম শাহ্ জানান, এবিষয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ হয়েছে।তদন্ত অনুযাযী অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মুসহাক আলী বলেন, পুঁইয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি দ্বারা শিক্ষার্থীদের শারারিক নির্যাতনের বিষয়টি আমি আবগত আছি। আমাদের শিক্ষা আইন অনুযায়ী সভাপতি তো দূরের কথা কোন শিক্ষক পর্যন্ত কোন শিক্ষার্থীদের শরীরে হাত দিতে পারবেনা। যদি অত্র প্রতিষ্ঠানের সভাপতি শিক্ষার্থীদের গায়ে হাত উঠায় তাহলে আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পত্নীতলা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ( ভারপ্রাপ্ত ) ও সহকারী কমিশনার ভুমি মো: রাশেদুল ইসলাম এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, এই বিষয়টি নিয়ে আমি অবগত নেই। যদি ঘটনা সত্য হয়ে থাকে তাহলে এই ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মদ আবু সাহিদ। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: রাশেদা ম্যানশন, ৯৮৬, মধ্যম রামপুর হালিশহর, চট্টগ্রাম | যোগাযোগ: 01869-600700, E-mail: [email protected]
Powered by somoyernews.com | Designed by F.A.CREATIVE FIRM LTD.