প্রিন্ট এর তারিখঃ মার্চ ১৫, ২০২৫, ৮:৩০ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ জুলাই ১৮, ২০২২, ৬:৫০ পূর্বাহ্ণ
নিয়মবহির্ভূতভাবে সরকারি হাসপাতালের সরঞ্জাম বিক্রি

হাটহাজারী(চট্টগ্রাম)প্রতিনিধি : সরকারি হাসপাতালের যে কোন সরঞ্জাম ব্যবহার অনুপযোগী, মেরামত কিংবা নিলামে বিক্রি করতে হলে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী আবাসিক মেডিকেল অফিসার বোর্ড করে সকলের সিদ্ধান্তক্রমে করবেন। নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে বাতিল, মেরামত কিংবা নিলামে বিক্রি কোনমতেই গ্রাহ্য নয়। কিন্তু হাটহাজারী সরকারি হাসপাতালে এর ব্যতিক্রম ঘটেছে। আবাসিক মেডিকেল অফিসারকে না জানিয়ে সরকারি নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে উপজেলা হাসপাতালের সর্বোচ্চ ক্ষমতার অপব্যবহার করে হাসপাতালের দশটি বৈদ্যুতিক পাখা, কয়েকটি দরজা, দুটি কমেড ফ্লাস, বেশ কিছু কার্টন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার নির্দেশে ভাঙ্গারির দোকানে বিক্রি করে দিয়েছে ষ্টোর কিপার দুর্জয় ব্যানার্জি।রবিবার দুপুর ১ টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত মেডিকেল গেইট এলাকার ওয়াজেদ নামে এক ভাঙ্গারি দোকানি দুই ব্যক্তিকে সাথে নিয়ে হাসপাতাল থেকে এসব সরঞ্জাম কিনে নেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, হাসপাতালে দোতলা থেকে ফ্যান, পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের সামনে থেকে দরজা, রান্নাঘরের সামনে থেকে কমেডের দুটি ফ্লাশ বক্স, বেশ কিছু কার্টন একটি ভ্যান গাড়ি করে নিয়ে গেছে। ঘটনাস্থলে জানতে চাইলে ৬ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে কিনেছে বলে জানায় ওই দোকানি।
বিষয়টি নিয়ে তাৎক্ষণিক আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সোহানা বিল্লাহ'র সাথে কথা বললে হতবাক হয়ে প্রতিবেদককে বলেন হাসপাতালের সরঞ্জাম বিক্রি হয়েছে অথচ আমি জানিনা। বাতিল, মেরামত কিংবা নিলাম এ তিন নিয়মের মধ্যে এটা কোন নিয়মে পড়ে এ কথার উত্তরে তিনি বলেন, আমি তো কিছুই জানিনা। এ তিন নিয়মের বাইরে কিছু করা নিয়মবহির্ভূত। কিভাবে এটা করল।
স্টোর কিপার দুর্জয় ব্যানার্জিকে কোন নিয়মে কার নির্দেশে এসব বিক্রি করেছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে এ ব্যাপারে টিএসও স্যার জানেন। উনি কিছু বলতে নিষেধ করেছেন। আপনি উনার সাথে কথা বলেন জানিয়ে লাইন কেটে দেন।
এদিকে জানতে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুরজিত দত্ত'র মুঠোফোনে বিকেলে ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেন নি। জানতে চাইলে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ হোসাইন বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সাথে কথা বলেন।
এদিকে বিকেলে হাসপাতালের সরঞ্জাম ক্রয় করা দোকানি ওয়াজেদ বলেন, সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে হাসপাতালের বলরাম (সুইপার) নামে এক ব্যক্তি হাসপাতালে ডেকে নিয়ে যায়। কেরানি (স্টোর কিপার)'র সাথে দরদাম করে ৬ হাজার ৫০০ টাকায় কিনি। যদিও আমার কাছে ৮ হাজার টাকা চেয়েছিল। কিন্তু নেয়ার পর থেকে তারা বার বার কেনা জিনিসগুলো ফেরৎ চাচ্ছে। জানিনা কি হয়েছে। এদিকে বিষয়টি জানাজানি হলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, সব কিছুর জন্য সরকার প্রতিনিধি নিয়োগ দিয়েছেন। বড় কর্মকর্তা যদি আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিয়মবহির্ভূতভাবে সব কাজ করেন তাহলে অন্যদের কি দরকার। আবাসিক মেডিকেল অফিসারের কাজ উনি কেন করবেন কোন ক্ষমতাবলে। এর আগেও কয়েকজনের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগে পত্রিকায় প্রতিবেদন লক্ষ্য করেছি। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া তো দুরের কথা তাদের পরামর্শ নিয়েই তিনি হাসপাতাল পরিচালনা করছেন। ক্যাশিয়ার যদি ট্রমা সেন্টারে কর্মকর্তাদের কোয়াটারে স্বপরিবারে থাকতে পারেন, টিএলসি দুই যুগের বেশী গ্যাস বিল, কর্মকর্তার সিট ব্যবহার করে ভাড়া না দিয়ে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে থাকতে পারেন তাহলে অন্যরা কি দোষ করছে। সরকার সবার জন্যই নিয়ম করে দিয়েছেন। তাহলে এরা কোন ক্ষমতাবলে নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছেন বার বার। কয়েকজনের কারনে হাটহাজারী সরকারি হাসপাতালের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তারা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মদ আবু সাহিদ। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: রাশেদা ম্যানশন, ৯৮৬, মধ্যম রামপুর হালিশহর, চট্টগ্রাম | যোগাযোগ: 01869-600700, E-mail: somoyernews24office@gmail.com
Powered by somoyernews.com | Designed by F.A.CREATIVE FIRM LTD.