সীতাকুণ্ডে সমুদ্র উপকূলে বনবিভাগ-ইউনিটেক্স উভয় জায়গার মালিকানা দাবি

ফারহান সিদ্দিক,সীতাকুণ্ড : চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ড সমুদ্র উপকূলের জায়গার মালিকানা নিয়ে বনবিভাগ ও ইউনিটেক্স গ্রুপ উভয়ের মালিকানা দাবি। সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ড সমুদ্র উপকূলের ৩০ একর জমি দখল হওয়ার অভিযোগ পেয়ে সীতাকুণ্ড রেঞ্জ কর্মকর্তা, বিট কর্মকর্তা ও বন বিভাগের লোকজন নিয়ে পরিদর্শনে যান চট্টগ্রামের সহকারী বন সংরক্ষক সাইফুল ইসলাম। এসময় বিস্তৃত এলাকাজুড়ে উপকূলীয় কেওড়া বন ধ্বংস, মাটি কেটে গভীর খাদের সৃষ্টি ও ইউনিটেক্স গ্রুপ কর্তৃক অবৈধভাবে বনের জায়গা দখল করে অর্ধশত সীমানা খুঁটি স্থাপন করা হয়েছে দেখতে পেয়ে খুঁটিগুলো অপসারণের নির্দেশনা দেন তিনি। পরে বন বিভাগের পরিদর্শন ও খুঁটি অপসারণের খবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ছাদাকাত উল্লাহ মিয়াজীকে সঙ্গী করে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন ইউনিটেক্স গ্রুপের পরিচালক (লিগ্যাল এন্ড এস্টেট) ফারহান আহমেদ।

এসময় তিনি (ফারহান আহমেদ) সীমানা খুঁটি অপসারণে বাধা দেন এবং জায়গাগুলো তাদের ক্রয় করা বলে দাবি করেন। একইসাথে ফারহান আহমেদের কথার সুর ধরে বাড়বকুণ্ড ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছাদাকাত উল্লাহ মিয়াজী বন কর্মকর্তাদের উপকূলীয় জায়গাগুলো তাদের মৌরসী সম্পত্তি বলে দাবি করেন। বলেন, আমরাই এগুলো ইউনিটেক্স গ্রুপের কাছে বিক্রি করেছি। এসময় ইউনিটেক্স গ্রুপের ফারহান আহমেদ- ইউপি চেয়ারম্যান ছাদাকাত উল্লাহ মিয়াজী ও সহকারী বন সংরক্ষক সাইফুল ইসলাম, উপকূলীয় রেঞ্জ কর্মকর্তা কামাল হোসেন, বাঁশবাড়িয়া বিট কর্মকর্তা আব্দুস ছালাম সর্দারের মাঝে বেশ কিছুক্ষণ তর্ক হয়। পরে ইউনিটেক্স গ্রুপের পরিচালক ফারহান আহমেদ স্বপ্রণোদিত হয়ে সীতাকুণ্ডের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশরাফুল আলমের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করেন। পরে বন কর্মকর্তাদেরকে আগামীকাল দুপুরে সীতাকুণ্ড ভূমি অফিসে আসতে অনুরোধ করেন এসিল্যান্ড।

এ বিষয়ে বন বিভাগের বাঁশবাড়িয়া বিটের বিট কর্মকর্তা আব্দুস ছালাম সর্দার বলেন, ইউনিটেক্স গ্রুপ অনেক জায়গা দখলে নিয়েছে। আমরা বেশকিছু খুঁটি উচ্ছেদ করি। পরে তারা আবারও তা স্থাপন করে। আগামীকাল আমরা আমাদের কাগজপত্র নিয়ে হাজির হব। সেখানে দেখা যাবে জায়গা কার কতটুকু। উপকূলীয় রেঞ্জ কর্মকর্তা কামাল হোসেন বলেন, আমরা বনের জায়গা দখল হয়েছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে পরিদর্শন করি। পরিদর্শনে সহকারী বন সংরক্ষক উপস্থিত ছিলেন। ইউনিটেক্স গ্রুপ তাদের ক্রয় করা বলে দাবি করছে। আগামীকালের বৈঠকে সে বিষয়ে জানা যাবে।

চট্টগ্রাম সহকারী বন সংরক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন, বাড়বকুণ্ড সমুদ্র উপকূল এলাকায় বালু উত্তোলন, মাটি কেটে উপকূলে গভীর খাদের সৃষ্টি, কেওড়া বন ধ্বংস ও অবৈধ দখল দেখতে পাই। এখানে বন বিভাগ কাউকে লিজ দেয়নি। তাদের সাথে আগামীকাল বৈঠক হলে সেখানে জানা যাবে জায়গাগুলোর প্রকৃত মালিক কে!