বান্দরবানে রুমা উপজেলায় প্রথমিক শিক্ষক নতুন নিয়োগ প্রাপ্ত শিক্ষক শিক্ষিকাদের ডাটা এন্ট্রি নাম করে টাকা উত্তোলনের অভিযোগ

বান্দরবান, রুমা প্রতিনিধিঃ বান্দরবানে রুমা উপজেলায় প্রথমিক শিক্ষক নতুন নিয়োগ প্রাপ্ত শিক্ষক শিক্ষিকাদের ডাটা এন্ট্রি নাম করে টাকা উত্তোলনের অভিযোগ ওঠেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিগত ২০১১ সাল ও তার পরবর্তী সময়ে আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা ইউএনডিপি ও বান্দরবান জেলা পরিষদের যৌথ পরিচালনায় রুমা উপজেলায় বিদ্যালয় বিহীন এলাকায় ২৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়। বিদ্যালয় গুলো শুরুতে ইউএনডিপি বিদ্যালয় নামে পরিচিতি। এসব ইউএনডিপির পরিচালিত প্রথমিক বিদ্যালয় গুলো সরকারি করণের উদ্যোগ গ্রহন করা হয় সরকার ।

পরবর্তী সময়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে সরকারী করণ গেজেট প্রকাশ করে। চলতি বছরে সর্বশেষ চুড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে। চুড়ান্ত তালিকা রুমা উপজেলায় ২৪টির প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫৮জন শিক্ষক- শিক্ষিকা নাম প্রকাশ করা হয়। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর নতুন শিক্ষক চুড়ান্ত তালিকার পরপর নতুন নিয়োগ পাওয়া শিক্ষক-শিক্ষিকা মধ্য থেকে সাদাসিধা শিক্ষক-শিক্ষকাদের কাছে বিভিন্ন কায়দায় অজুহাতে টাকা আদায় করে চারজন শিক্ষক। এরা হলেন এলিম পাড়া সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মংক্যচিং মার্মা, মুনলাই পাড়া সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক জিংরাম বম, ক্যতাইহ পাড়া সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক উসা মার্মা ও তংমক পাড়া সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মংবাসা মার্মা।

সূত্রমতে, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক গত ১৩ এপ্রিল প্রকাশিত চুড়ান্ত সরকারি গেজেটে তালিকাভূক্ত ৫৮জন শিক্ষক- শিক্ষিকা মধ্য এই চারজনের শিক্ষক নামও তালিকায় অন্তর্ভুক্ত। এব্যাপারে জনতে চাইলে শিক্ষক নেতা মংক্যচিং মার্মা, উষা মার্মা, জিংরাম বম এই তিন শিক্ষক নিরীহ শিক্ষক শিক্ষীকাদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার কথা স্বিকার করে বললেন প্রথম ধাপে শিক্ষক শিক্ষিকাদের ১৩গ্রেডে বেতন পাইতে ডাটা অনলাইনে এন্ট্রি ও দাপ্তরিক বিভিন্ন কাজের জন্য জসপ্রতি পাঁচ হাজার টাকা করে নিতে হয়েছে। ওই সময়ে দাপ্তরিক কর্তাদের খরচ ও নথিপত্রের প্রস্তুতের সহ দাপ্তরিক কাজে জন্য ঢাকা আসা-যাওয়া কাজে খরচ করা হয়েছে এসব উত্তোলতি টাকা।

এবিষয়ে টাকা উত্তোলনকারি মংবাসা মার্মা ৫হাজার টাকা উত্তোলন বিষয়টি অস্বীকার করে বললেন, আমরা ১৫শত টাকা করে উত্তোলন করেছি। দাপ্তরিক বিভিন্ন কাজের জন্য টাকা তোলা হয়েছে। আমাদের সার্ফিস বই লেখা, প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র ফটোকপি করা কাজে টাকা গুলো খরচ করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, এখানে অনেকে দুর্গম পাহাড়ে অঞ্চলে শিক্ষক – শিক্ষিকা রয়েছে। একজন শিক্ষক যদি দাপ্তরিক কাজে রুমা সদরে আসেন সেক্ষেত্রে তার অনেক খরচ হয়। যেমন তার যাতায়াত, খবার, রাত্রিযাপন খরচ গুলো কম করে হলে চার-পাঁচ হাজার টাকা হয়। সেটা বিবেচনা করে আমরা সবাই মিলে ১৫শত টাকা উত্তোলন করা সিদ্ধান্ত নিয়ে টাকা গুলো উত্তোলন করা হয়েছে। এটা আমার একার সিদ্ধান্ত নয়। এই পর্যন্ত ৪০জনের ১৫শত টাকা দিয়েছে। সর্বমোট ৬০হাজার টাকা আদায় করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী শিক্ষকেরা জানায় সরকারি গেজেটে প্রকাশের পরপরই মংবাসা মার্মা , মংক্যচিং মার্মা, জিংরাম বম ও উসা মারমা এই চারজন শিক্ষক অন্য সহজ সরল শিক্ষকদের কাছে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নাম ভাঙ্গিয়ে নতুন শিক্ষকের দাপ্তরিক চলমান কার্য সম্পাদনের জন্য টাকা দাবি করতে থাকে। এই চারজন শিক্ষক অন্য সহকর্মীদের কাছে দাবি টাকা নিয়ে অতিষ্ঠ হতে থাকে। প্রতিবাদ করতে গেলে সহজ সরল শিক্ষক শিক্ষিকাদেরকে চাকুরি/ বেতনের অসুবিধা হয়ে যাবে বলে জানান এই চারজন শিক্ষক নেতা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নতুন নিয়োগ পাওয়া শিক্ষক/ শিক্ষিকা বলেন সরকারি চুড়ান্ত গেজেটের পর ১৩গ্রেটের জন্য আমাদের তথ্য গুলো অনলাইনের পরণের কথা জানিয়ে মোট ৫৮জন থেকে প্রতিজনে পাঁচ হাজার টাকা আদায় করা হয়। অন্যায়ভাবে এসব টাকা কথিত শিক্ষক নেতা মংবাসা মারমা, উষা মারমা ও জিংরাম বম আদায় করেছেন বলে ভূক্তবোগীরা জানিয়েছেন । মোট দুই লক্ষ ৭০হাজার টাকা অন্যায়ভাবে এসব টাকা কথিত শিক্ষক নেতা মংবাসা মারমা, উষা মারমা ও জিংরাম বম উত্তোলন করেছেন বলে ভূক্তবোগীরা জানিয়েছেন ।

সূত্রে আরও জানা যায় – গত আগস্ট মাস দ্বিতীয় সপ্তাহে ১৫ গ্রেট বেতন পাওয়ার জন্য সরকারি কর্মচারি তথ্যাদি অনলাইনে ডাটা এন্ট্রির নাম করে প্রতিজনের কাছ থেকে ১৫ শত টাকা হাতিয়ে নেয়। কেউ প্রতিবাদ করলে ওসব সহজ সরল শিক্ষকদের সাথে বাকবিতন্ডায় তর্কে জড়িয়ে পরেন কথিত শিক্ষক নেতা মংক্যচিং মার্মা, মংবাসা মার্মা উসা মার্মা। কথিত শিক্ষক নেতাদের কর্তৃক অন্যায় ভাবে টাকা মেরে খাওয়ার বিষয়টি ক্ষোভের সঞ্চার বাড়তে থাকে। এ নিয়ে চা দোকান থেকে অফিস পাড়া / মহল্লা পর্যন্ত আলোচনা – সমালোচনা কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়ছে। ওই সময় সহজ সরল শিক্ষকদের হুশিয়ার করে বলা হয়, আইবাস (IBas- Integrated accounting sysmtem) ডাটা এন্ট্রি নিয়ে টাকা নেয়ার ব্যাপারে কেউ মুখ খুললে তার অবস্থা ভাল হবেনা বলে কয়েকজনকে ধমক দিয়ে সাশিয়ে দেন মংবাসা মার্মা।

এই বিষয়ে উপজেলা প্রথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশীষ চিরান কাছে জানতে চাইলে স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, প্রথম ধাপে পাঁচ হাজার টাকা উত্তোলনের বিষয়ে অবগত রয়েছি,। তবে দ্বিতীয় ধাপে ১৫শত টাকা উত্তোলনের বিষয়ে আমরা অবগত নয়। তারা কি কারনে নিয়েছে তা শিক্ষা অফিসে অবগত করা হয়নি। এ উত্তোলনের বিষয়ের সঠিক তথ্য উদ্ঘাটন করে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন।