চবি’র নাট্যকলা বিভাগের জিয়া হায়দারে বারবার বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।

মোঃ শোয়াইব, হাটহাজারীঃ নাট্যকলা বিভাগের অন্তর্ভুক্ত জিয়া হায়দার স্টুডিওতে নাটক চলাকালীন সময়ে পরপর দুই শিক্ষার্থীর বিদ্যুৎস্পৃষ্টের ঘটনা ঘটেছে। এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
বুধবার রাতে ও বৃ্হস্পতিবার দুপুরে নাট্যকলা বিভাগের জিয়া হায়দার স্টুডিওতে এ ঘটনা ঘটে। এতে বুধবার বিদ্যুতায়িত হন নাট্যকলা ১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের মো. শামীম ও বৃহস্পতিবার ১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের আসলাম উদ্দিন।
আহতদের অভিযোগ, নাট্যকলা বিভাগের জিয়া হায়দার স্টুডিওর অবস্থা খুবই নাজুক যা নাটক করার অনুপযোগী। নাটক করতে গিয়ে অনেক শিক্ষার্থী নানা প্রতিবন্ধকতার শিকার হচ্ছে। বর্ষায় বৃষ্টির পানি গ্রীষ্মে গরমের তীব্র দাবদাহে শিক্ষার্থীরা অতিষ্ঠ। নাটক চলাকালীন সময়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো লাইট আর বিদ্যুত নিয়ন্ত্রণের উপর চলে পুরো নাটক এর ব্যাপ্তিকাল অথচ নেই কোন টেকনিশিয়ান নেই যথাযথ তড়িৎ চলাচলের ব্যবস্থা। শিক্ষার্থীদেরই সব কাজ করতে হয়।
নাট্যকলা বিভাগের (১৪-১৫) শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সোলাইমান রাফি বলেন, ‘আমি একটা নাটকে নির্দেশনা দিচ্ছিলাম। আমাদের নাট্যকলার জিয়া হায়দার যে স্টুডিও, সেটা একটা সময় নাটকের জন্য উপযোগী ছিল। কিন্তু বর্তমানে এটা কোনোভাবে উপযোগী না। এটা ডিজিটাল না, এই রকম মানহীন জায়গায় কাজ করা খুব মসিবত। এখানে নেই কোনো লাইটরুম, বৈদ্যুতিক তারগুলো এলোমেলো। এর আগে আমাকে একবার দেয়াল থেকে শক করেছিল।
‘আজকে এক শিক্ষার্থী শক খেয়ে মরোমরো অবস্থা। গতকালও আরেক শিক্ষার্থী শক খেয়ে মেডিক্যালে ভর্তি হয়। এই ভঙ্গুর অবস্থা নিয়ে আর কতদিন চলা যায়। যে কাজটা এক ঘণ্টা লাগে করতে, সেটা এখানে পাঁচ ঘণ্টা পরিশ্রম করে করতে হয়। নাটক করার জন্য কোনো সুযোগ সুবিধাই নেই এখানে।’
নাট্যকলা ১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ফয়েজ রাকিন বলেন, ‘আজকে দুপুর ১টা থেকে আমাদের নাটকের শো ছিল। নাটক চলার এক পর্যায়ে একটা লাইটের তার  ছুটে যায় এবং আসলামের গায়ে গিয়ে লাগে। সে প্রায় ৮-১০ সেকেন্ড শকের মধ্যে ছিল। সেখান থেকে পরে তাকে মেডিক্যাল পাঠানো হয়। গতকালও একজন আহত হয়েছেন। অল্পের জন্যই তারা দুজন বেঁচে গেছেন।’
নাট্যকলা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ড. কুন্তল বড়ুয়া বলেন, ‘জিয়া হায়দার স্টুডিওতে শেষ বর্ষের একটা পরিবেশন ছিল। সেখানে বৈদ্যুতিক শক খেয়ে একটা ছেলের খুব মুমূর্ষু অবস্থা হয়। এটা বহুদিন ধরে এভাবে পড়ে আছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বেশ কয়েকবার বলেছি এটি সংস্কার করে দেয়ার জন্য। তারা আশ্বাস দিলেও এখনও করে দেয়নি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে এটি সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত আমরা সেখানে আর কোনো ব্যবহারিক পরীক্ষা নেব না। সংস্কার না হলে যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটবে। এবার দুইবার হয়েছে, এর আগে বেশ কয়েকবার দুর্ঘটনা হয়েছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান বলেন, ‘এইরকম যাতে আর না হয় সেই জন্য প্রধান প্রকৌশলীকে বলে দেব। আমি আজকে খোঁজ নেব।’