সরাইলে শীতের আমেজে মুছার পিঠা বানানোর আয়োজন

মো: তাসলিম উদ্দিন সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া): গ্রাম বাংলার ইতিহাস আর ঐতিহ্যের শীতের আমেজে পিঠা বানানোর ধুম।কালের পরিবর্তে আর তা এখন দেখা যাচ্ছে না, শীতের আগমনে কুটুম আসবে সেই তাগিদে ঘরে ঘরে চাউল গুটার ঢেকির আওয়াজ এলাকায় মুখরিত হত। তা যেন আজ বিলীন হয়ে স্বপ্ন আর রূপকথা মালা হয়ে গেছে। সন্ধ্যার হিমেল বাতাস ভাঁপা পিঠার গরম সুগন্ধি ধোঁয়ায় মন আনচান করে ওঠে। সরিষা বা ধনে পাতা বাটা অথবা শুটকির ভর্তা মাখিয়ে চিতই পিঠা মুখে দিলে ঝালে কান গরম হয় শীত পালায়।

শীতের আমেজ শুরুর সাথে সরাইল উপজেলায় অলিগলির ফুটপাতের বিভিন্ন জায়গায় এখন চলছে পিঠা তৈরীর বেচাকেনার ধুম। পিঠা প্রেমি মানুষ শীতের পিঠার স্বাদ গ্রহণ করতে ফুটপাতের এসব পিঠার দোকানে প্রতিদিন সন্ধ্যায় সকাল ভির করছেন।আবার অনেকেই দেখা যাচ্ছে পিঠার দোকানের চুলার পাশে বসেই গরম পিঠা খাওয়ার রেওয়াজে পরিণত করেছেন।শীত এলেই হরেক রকম মুখরোচক পিঠা বানানোর আয়োজন।

বর্তমানে শীতের সময় এই উপজেলায় ভাপা পিঠার জনপ্রিয়তা বেশি। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে হিমেল হাওয়ার প্রভাবে বেড়ে যায় শীতের তীব্রতা। শীতের শুরুতে গোধূলি বেলায় হালকা কুয়াশা নেমে আসার আগেই এ উপজেলার বিভিন্ন বাজারের রাস্তার ধারে পিঠা বানানোর আয়োজন শুরু করে দেন মৌসুমি পিঠা বিক্রেতারা। ভ্যানগাড়ি অথবা রাস্তার পাশে ছোট চুলা, মাটির পাতিল, আটা-ময়দা ও ঘুরি বিভিন্ন সরঞ্জামসহ বসে পড়ে নানা ধরনের পিঠার কারিগররা।

উপজেলার সফর হোসেন। তিনি পেশায় পিঁয়াজু বিক্রেতা। তবে শীতের মৌসুমে শুরু করেছেন ভাপা পিঠার ব্যবসা। সারাদিন পিঁয়াজু বিক্রি করে বাড়ি ফেরেন। তড়িঘড়ি করে ছুটে চলেন বাজারে। তৈরি করেন ভাপা পিঠা। গরম গরম মজাদার এ পিঠা খেতে দূর-দূরান্ত থেকে চলে আসেন সব বয়সের মানুষ। রাত পর্যন্ত চলে বেচাকেনা। প্রতিদিন খরচ-খরচা বাদে হাজারখানেক টাকা পকেটে আসে। প্রতি শীতকালে তার এ ব্যবসা চলে।

শুধু সফর হোসেন নয়, তার মতো অনেকেই বিভিন্ন বাজার ঘাটে শীতের পিঠা বিক্রি করছেন। গতকাল উপজেলা কালিকচ্ছ বাজারে রাস্তার পাশে মো. মুছার সাথে কথা হয়। তিনি তার কথা বলতেই বলেন,আমি লেখা পড়া করেছি। আগে ব্যবসা করতাম করোনা সময় আর্থিক ভাবে অনেক লস হয়েছে। এখন শীতের সময় আমার এখানে অনেক রকমের পিঠা আছে।তিনি তৈরি করছিলেন ভাপা পিঠা।

এ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মুছা জানান, ঘুরি পিঠা বানানোর উপযোগী করে ভাঙিয়ে নিতে হয়। প্রতিপিচ ভাপা পিঠা তিনি ১০ টাকা করে বিক্রি করেন। সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত ১০ কেজি দিয়ে ভাপাসহ বিভিন্ন পিঠা বানান।পিঠা তৈরি করে প্রতিদিন হাজার টাকা উপার্জন করতে পারেন।