ডেস্ক রিপোর্টঃ অলি স্যার ও Teaching-Aid এর সকল শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে বরণ, বিদায়, কৃতি সংবর্ধনা এবং বার্ষিক আনন্দ অনুষ্ঠান-২০২২, বন্দর নগরী চট্টগ্রামের জিইসি মোড়স্ত কাজী রেস্টুরেন্টে ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে অনুষ্ঠিত হয়।
Teaching-Aid এর কর্ণধার এবং শিক্ষক ও মেন্টর মোঃ অলি উদ্দিন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশ এর পরিদর্শক এবং পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রো (প্রশাসন) এর চৌকস কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর জনাব আবু জাফর মোঃ ওমর ফারুক, বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম ইউনাইটেড স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ জনাব মোঃ সোহরাব হোসেন এবং অলি স্যারের পিতা জনাব মোঃ ফজলুল হক।
আরো উপস্থিত ছিলেন অলি সারের প্রাইভেট ব্যাচের এইচএসসি থেকে এমবিএ পর্যন্ত বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবক বৃন্দ। অলি স্যারের বিবিএ দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মোঃ মাহফুজ এর সঞ্চালনায় সকাল ১০ টায় পবিত্র ধর্ম গ্রন্থ তেলাওয়াত এর মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। তারপর সম্মিলিত কন্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। এরপর প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথির উপস্থিতিতে প্রত্যেক ব্যাচের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে কেক কাটা হয়।
দিনব্যাপী উক্ত অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বলেন: ” অলি স্যার দক্ষতা ও যোগ্যতার সাথে শিক্ষার্থীদের কল্যাণে যে মানবিক কাজগুলো করে যাচ্ছেন তা দেশের অন্যান্য শিক্ষকদের জন্য অনুকরণীয় সেই একজন দক্ষ শিক্ষক ও মেন্টর ।সেই হচ্ছে শিক্ষার্থীদের কাছে এবং আমি মনে করি সারা দেশের কাছে রিয়েল হিরো। বিভিন্ন বড় বড় কোচিং সেন্টার যা করতে পারে না অলি স্যার একাই তা করে দেখাচ্ছেন।”
তিনি আরো বলেন “আজকে যেমন অলি তোমাদের জন্য এবং দেশ ও জাতির জন্য যে মেধাবী তৈরি করছে এবং তাদের গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন আমি আশা করব তোমরাও “Teaching-Aid প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী পরিষদ” নামে একটি অ্যাসোসিয়েশন গড়ে তুলবে এবং তোমাদের এই প্রিয় স্যার কে এই মানবিক কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ সংবর্ধিত করবে”। তিনি অলি স্যারকে অনুরোধ করেন প্রতিবছর ওনার যে সকল শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হচ্ছে এবং বিবিএ ও এমবিএ শেষ করে যারা স্বাবলম্বী হচ্ছে সবার জন্য রেজিস্ট্রার সংরক্ষণ করতে।
বিশেষ অতিথি অধ্যক্ষ মোঃ সোহরাব হোসেন অলি স্যারকে আইনস্টাইনের সাথে তুলনা করে বলেন “আমরা হলাম আনইনস্টাইনের ড্রাইভার এর মত আর তোমাদের আইনস্টাইন তোমাদের অলি স্যার”। তিনি আরো বলেন:” দুটি যমজ পাখি যেমন দুইটি মনিবের তত্ত্বাবধানে থেকে দুই রকম চরিত্রের অধিকারী হয় একটি ভালো আরেকটি খারাপ। ঠিক অলি স্যার হচ্ছেন তোমাদের সেই ভালো মনিবের মত যার সংস্পর্শে এবং তত্ত্বাবধানে থেকে তোমরাও যথার্থ এবং প্রকৃত ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে উঠবে ইনশাআল্লাহ”।
উক্ত অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা মনোজ্ঞ সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে। এরপর অলি স্যারের পক্ষ থেকে প্রত্যেক বর্ষের একজন সেরা শিক্ষার্থীর হাতে বর্ষসেরা পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। যারা এই বছর এইচএসসি পরীক্ষা (২০২২) দিয়েছে এবং বিবিএস তৃতীয় বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা দিয়েছে প্রত্যেকের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য অলি স্যারের বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি ব্যাচের ৩৩ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ২৭ জন শিক্ষার্থী ঢাকা-চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সহ দেশ সেরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হয়েছে। যারা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হয়েছে তাদের প্রত্যেকের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় ছিল ২০২২ সালের সেরা শিক্ষার্থী নির্বাচন। অলি স্যারের এইচএসসি থেকে এমবিএ পর্যন্ত প্রায় হাজার খানেক চলমান স্টুডেন্টদের মধ্য থেকে ২০২২ সালের সেরা শিক্ষার্থী নির্বাচিত হয়েছেন ঢাকা-চট্টগ্রাম-রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী অলি স্যারের এইচএসসি প্রাইভেট স্পেশাল ব্যাচ ২০২০,২০২১ এবং বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি ব্যাচের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিশেষ অতিথি এবং অলি স্যার নিজেই সম্মিলিতভাবেই 2022 সালের সেরা শিক্ষার্থীর হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন। উল্লেখ্য ২০০৮ সাল থেকে এই পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে।
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন তার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন “আমার জীবনে সেরা শিক্ষক হলেন আমার প্রিয় অলি স্যার। স্যার আমাদের জন্য যা করে যাচ্ছেন আমাদের মধ্যে যদি নূন্যতম মনুষ্যত্ব ও থাকে তাহলে সারা জীবন স্যারকে মনে রাখতে হবে কখনো ভুলে যেতে পারবোনা।তিনি আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক ,অভিভাবক এবং মেন্টর”।
এছাড়াও উক্ত অনুষ্ঠানে রেফেল এবং বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা তাদের জীবনের সেরা শিক্ষক প্রিয় অলি স্যারের পড়ালেখা করানোর চমৎকার ও সহজ কৌশল এবং মানবিক কার্যাবলী তুলে ধরেন। সবাই মিলে মধ্যাহ্নভোজে অংশগ্রহণ করে।
অনুষ্ঠানের শেষে উক্ত অনুষ্ঠানের সভাপতি মোঃ অলি উদ্দিন তার প্রিয় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন : “একজন আদর্শ শিক্ষক হতে হলে প্রয়োজন আদর্শ শিক্ষার্থীর তোমরা আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ সম্পদ এবং আদর্শ শিক্ষার্থী। তোমরা যেমন আমাকে শ্রদ্ধা কর এবং ভালোবাসো আমিও তোমাদেরকে অনেক বেশি ভালোবাসি এবং শ্রদ্ধা করি। আল্লাহর কাছে তোমাদের সফলতা কামনা করছি।সৃষ্টিকর্তার কাছে দোয়া করবে সৃষ্টিকর্তা যতদিন বাঁচিয়ে রাখবেন যাতে সারাদেশের শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করে যেতে পারি এবং তাদের বিভিন্ন মানবিক কাজে সহযোগিতা করতে পারি”। অনুষ্ঠানের শেষে প্রধান অতিথি এবং বিশেষ অতিথির হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য অলি স্যার ২০০৮ সাল থেকে এসএসসি থেকে এমবিএ পর্যন্ত ছাত্র ছাত্রীদের শিক্ষা সহায়তা দিয়ে আসছেন।যেখানে বেশিরভাগ শিক্ষক এখন শিক্ষা কে ব্যাবসায়িক পণ্যে রুপান্তর করে ফেলছেন, সেখানে অলি স্যার সম্পূর্ণ ব্যাতিক্রম মাস শেষে সামান্য সম্মানি নিচ্ছেন, এছাড়া ছাত্র/ছাত্রীদের অনলাইন অথবা অফলাইনে যেকোনো প্রয়োজনে সহযোগিতা চাইলে হাসিমুখে করে যাচ্ছেন। এছাড়া স্যার গরীব ও অসহায় শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন এবং বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে নিয়মিত অংশগ্রহণ করে থাকেন। এককথায় মানবিক এক শিক্ষকের আদর্শ নাম সবার প্রিয় অলি স্যার।
