আমরা এখন ডিজিটাল বাংলাদেশে, শেখ হাসিনাকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারেনি : বিভাগীয় কমিশনার

প্রেস বিজ্ঞপ্তি :  মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গতকাল ২৬ মার্চ রোববার বিকেল ৪টায় সার্কিট হাউজ সম্মেলন কক্ষে “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এঁর ঐতিহাসিক নেতৃত্ব এবং দেশের উন্নয়ন” শীর্ষক আলোচনা, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গালিব চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার ড. আমিনুর রহমান এনডিসি। মূখ্য আলোচক ছিলেন সাবেক নিবূাচন কমিশনার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মোবারক।

বিশেষ অতিথি ছিলেন সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি মোঃ আনোয়ার হোসেন, জেলা পুলিশ সুপার এস.এম শফি উল্লাহ, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) একেএম সরোয়ার কামাল। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মহানগরীর ১৩০ জন ও জেলার ২২০ জনসহ মোট ৩৫০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে উত্তরীয় পরিয়ে দিয়ে ফুলের শুভেচ্ছাসহ সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।

এসময় চট্টগ্রাম জেলার অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা, প্রশাসনের পদস্থা কর্মকর্তাবৃন্দ, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. আমিনুর রহমান এনডিসি বলেন, আহমদ ছফা লিখেছিলেন, চর্যাপদ শ্রেষ্ট গীতিকাব্য নয়, মধ্যযুগের পদাবলীও শ্রেষ্ট কাব্য নয়। শ্রেষ্ট গীতিকাব্য হল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ “আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না”। আজকে বাংলাদেশের যে উন্নতি হয়েছে তা বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের মধ্যে দিয়ে। আমরা এখন ডিজিটাল বাংলাদেশে পৌঁছে গেছি এবং শেখ হাসিনাকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারেনি।

বিভাগীয় কমিশনার বলেন, মুক্তিযুদ্ধ শেষ হয়েছে কিন্তু মুক্তিরযুদ্ধ এখনো চলমান। আমরা এমন এক বাংলাদেশে বাস করছি যেখানে জোয়ার-ভাটা দুটোই আছে। এখানে ছিল নবাব সিরাজ-উদ- দোল্লা আবার মীরজাফরও ছিল। এখানে ছিল মুক্তিযোদ্ধা আবার রাজাকারও। এখনও আমাদের দেশে কিছু মানুষ আছে যারা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের পক্ষ নিয়ে কথা বলে। তাই আমি বলি মুক্তিযুদ্ধ শেষ হয়েছে কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ চলমান।

অন্যান্য অতিথিবৃন্দ বলেন, আজকের এ ডিজিটাল বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান। মুক্তিযোদ্ধারা ভয়ভীতি উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছিল বলে তাদের ফাসি
কার্যকর হয়েছে। এ সরকার যাতে নির্বাচনে জয় লাভ করে দেশের উন্নয়নকে অব্যাহত রাখতে পারে  তার জন্য আমাদের কাজ করে যেতে হবে। এ আগে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপনের লক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন বর্ণাঢ্য কর্মসূচির অয়োজন করেছেন। ২৬শে মার্চ সূর্যোদয়ের সাথে সাথে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে শেখ রাসেল চত্বরে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে দিবসের
কর্মসূচি শুরু হয়।

এসময় নগরীর মিউনিসিপ্যাল মডেল স্কুল এন্ড কলেজে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. আমিনুর রহমান এনডিসি, সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি মোঃ আনোয়ার হোসেন, জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, জেলা পুলিশ সুপার এস.এম শফি উল্লাহ, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) একেএম সরোয়ার কামালসহ বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠান। এর পর সকল সরকারি, আধা- সরকারি, স্বায়ত্ত¡শাসিত ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এদিন সকাল ৮টায়
এম. এ আজিজ স্টেডিয়ামে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, পুলিশ, কারারক্ষী, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, আনসার- ভিডিপি, বিএনসিসি, বাংলাদেশ স্কাউটস, গার্লস গাইড কর্তৃক কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান পরিদর্শন শেষে সালাম গ্রহণ।

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সালাম গ্রহণ করেন বিভাগীয় কমিশনার ড. মোঃ আমিনুর রহমান, এনডিসি। এর পর বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের শুভ উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি। জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি মোঃ আনোয়ার হোসেন, জেলা পুলিশ সুপার এস.এম শফি উল্লাহ, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) একেএম সরোয়ার কামাল।

শেষে জেলা শিশু একাডেমিসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় মনোমুগ্ধকর ডিসপ্লে (শারীরিক কসরত) অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া সুবিধাজনক সময়ে হাসপাতাল, জেলখানা, এতিমখানা, শিশু পরিবার, ভবঘুরে প্রতিষ্ঠান ও শিশু কেন্দ্রসমূহে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন, জাতির শান্তি ও অগ্রগতি এবং মুক্তিযুদ্ধে শহিদদের আত্মার শান্তি কামনায় মসজিদ, মন্দির, গীর্জা প্যাগোডা ও অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা। বিকেল ৪টায় শিশুপার্ক, যাদুঘর ও চিড়িয়াখানায় বিনা টিকিটে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রামাণ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়।