প্রেস বিজ্ঞপ্তি : সারা দেশে কিশোর গ্যাং কালচার ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বিভিন্ন ছত্রছায়ায় নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ডে কিশোররা ব্যবহৃত হচ্ছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাদের অপরাধের ধরনও পাল্টে যাচ্ছে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, চুরি-ছিনতাই থেকে শুরু করে খুনাখুনিসহ নানা অপরাধে কিশোর-তরুণরা জড়িয়ে পড়ছে। মাদক ব্যবসা ও দখলবাজিতেও তাদের ব্যবহার করা হচ্ছে। নানা অপরাধে জড়িয়ে কিশোররা ক্রমেই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে। অধিকাংশ কিশোর গ্যাং গড়ে ওঠার পেছনে স্থানীয় এলাকার একটি চক্রের মদদ রয়েছে। ‘হিরোইজম’ প্রকাশ করতেও পাড়া-মহল্লায় কিশোর গ্যাং গড়ে উঠছে।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ০৪ এপ্রিল ২০২৩ ইং তারিখ ইফতারের পর হতে অদ্য ০৫ এপ্রিল ২০২৩ ইং তারিখ সেহেরীর পূর্ব পর্যন্ত র্যাব-৭, চট্টগ্রামের বিশেষ সাড়াশি অভিযানে চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন
স্থানে অভিযান পরিচালনা করে সানি গ্যাং এবং পিচ্ছি সাকিব গ্যাং নামে কিশোর গ্যাং গ্রæপের গ্যাং প্রধান সহ সর্বমোট ১১জন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে।ক। সানি গ্যাং। এই গ্রুপটি সাধারণত বায়েজিদ এলাকায় সানী গ্যাং নামে পরিচিত। এরা স্থানীয়ভাবে রাস্তায় সংঘবদ্ধ হয়ে মারামারি, ছিনতাই, চাদাবাজী ও এলাকায় প্রভাব বিস্তার করাসহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত। এই গ্যাংটির লীডার রিয়াজুদ্দিন সানী বায়েজিদ এলাকার ১টি হত্যা মামলার আসামী। সে জামিনে এসেও এই গ্যাং লালন-পালন করার মাধ্যমে তার প্রভাব বিস্তারসহ বিভিন্ন সময় এলাকায় মারামারি-হানাহানি করার মাধ্যমে শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘœ ঘটানোর সাথে জড়িত। এছাড়াও এই গ্যাং এর সদস্যদের প্রকাশ্যে দিনে-দুপুরে বায়েজিদ বোস্তামী এলাকায় ছিনতাই ও চাঁদাবাজী করতে দেখা গেছে। এই গ্যাং এর সদস্যরা সকলেই মাদকাসক্ত বলে জানা যায়। গ্রেফতারকৃত কিশোর গ্যাং সদস্যরা হলো ১। রিয়াজ উদ্দিন সানি (২৪) (২০২০ সালের হত্যা মামলার এজাহার নামীয় আসামি), ২। সাদ্দাম হোসেন (২০), ৩। আব্দুল মান্নান (২০), ৪। তানভীর (২০), ৫। সোহেল রানা (২১), ৬। রবিউল হোসেন (১৮) এবং ৭। আল রাব্বি (২৪)। উল্লেখ্য, সিডিএমএস পর্যালোচনা করে গ্রেফতারকৃত রিয়াদ, তানভীর এবং আল রাব্বির নামে চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়েজিদ বোস্তাামী থানায় চুরি এবং হত্যা সংক্রান্ত মামলা পাওয়া যায়।
খ। পিচ্চি শাকিব গ্যাং। এই গ্রুপটি পিচ্চি শাকিব গ্যাং নামে পরিচিত। এই গ্রুপটি সাধারনত পাহাড়তলী থানাধীন সরাইপাড়া এলাকায় ছিনতাই, চাদাবাজি এবং ভাড়ায় মারামারি, টাকার বিনিময়ে জমি দখল করার মতো সংঘাতে জড়ানোর মত কাজে লিপ্ত থাকে। তবে এদের মুল কার্যক্রম হলো সন্ধ্যার পর একত্রিত হয়ে রাস্তায় চলাচলকারী মানুষদের কাছে থেকে ছিনতাই করা। এরা বিভিন্ন দোকানদারদের কাছে চাঁদা আদায় করত। এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করত। এদের ভয়ে এলাকার মানুষ স্বাভাবিক কার্যক্রম করতে পারত না। এদের সবার নামে পাহাড়লী থানায় ছিনতাই ও মারামারির মামলা আছে জানা যায়। এছাড়াও, পিচ্চি সাকিবের নামে হত্যা মামলা আছে বলে জানা যায়। গ্রেফতারকৃত কিশোর গ্যাং সদস্যরা হলো ১। মো: জসিম (২৫) (গ্যাং লীডার), ২। মো: রাকিব(১৯), ৩। বেলাল মিয়া সাজু (২৩) এবং ৪। মো: সাকিব(১৫)। উল্লেখ্য, সিডিএমএস পর্যালোচনা করে গ্রেফতারকৃত আসামী জসিম, রাকিব এবং বেলাল এর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম মহানগরীর পাহাড়তলী থানায় ০১টি করে এবং গ্রেফতারকৃত আসামী সাকিবের নামে চট্টগ্রাম মহানগরীর পাহাড়তলী এবং আকবরশাহ থানায় ০১টি করে মোট ০২টি ছিনতাই, চাদাবাজি ও মারামারি সংক্রান্ত সংক্রান্ত মামলা পাওয়া যায়।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।