
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল- আশুগঞ্জ)আসনটি বিএনপির ঘাটি হিসেবে পরিচিত হলেও।এবার দ্বাদশ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সব নেতা কর্মীরা বিভিন্ন সভায় দাবী করে আসছেন নৌকার প্রার্থী দেখতে চাই সরাইল-আশুগঞ্জ আসনে। এ আসনটি নিয়ে যত নির্বাচন এগিয়ে আসছে।আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের মধ্যে বেড়েছে জল্পনা কল্পনা। নৌকা দিলে কে হবে নৌকার প্রার্থী? আলোচনা আছে, নৌকার প্রার্থী যেই হোক’নৌকা দিলে সকলেই এক সাথে কাজ করবে।এমন কথা নেতাকর্মীদের মুখে মুখে।ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলও আশুগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসন। দুই উপজেলায় রয়েছে ১৭টি ইউনিয় এর মধ্যে সরাইল উপজেলায় রয়েছে ৯ ইউনিয়ন ও আশুগঞ্জ উপজেলা রয়েছে ৮ টি ইউনিয়। ব্রাহ্মনবাড়িয়া-২ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৭০ হাজার ১২৩ জন। এর মধ্যে সরাইল উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৩৭ হাজার ১৫৩ জন এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২৪ হাজার ৩৬৮ জন। মহিলা ভোটার ১ লাখ১২ হাজার ৭৮৫জন।
আশুগঞ্জ উপজেলা ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৩২ হাজার ৯৭০ জন। পুরুষ ভোটার ৬৯ হাজার ২৬৯ জন ও মহিলা ৬৩ হাজার ৭০১ জন।আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল- আশুগঞ্জ) আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তৎপরতা শুরু হয়েছে। নানা সভা- সমাবেশ, গনসংযোগ, দোয়া চেয়ে পোস্টার,ব্যানার ও ফেস্টুন প্রচারণা চোখে পড়ছে। সেই সাথে প্রয়াত নেতাদের কবর জিয়ারতসহ এলাকায় সফর করে নিজের অবস্থান জানান দিচ্ছেন অনেকেই। অনেকেই দলের অবহেলিত, বঞ্চিত কর্মীদের খোঁজ খবরও নিচ্ছেন।
জানাগেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা তৎপর হয়ে ওঠেন। প্রার্থী হতে এলাকায় জানান দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন তারা। নির্বাচনী তৎপরতায় বিএনপি নেতৃবৃন্দও কর্মব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। উৎসবে শুভেচ্ছা বিনিয়ম ছাড়াও এলাকায় সফর বাড়িয়েছেন সম্ভাব্য প্রার্থী ও নেতা কর্মীরা। অপর দিকে ইসলামী ঐক্যজোট তাদের কর্ম তৎপরতা শুরু করেছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২আসনের আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টির ও ইসলামী ঐক্যজোট মনোনয়ন প্রত্যাশীরা মাঠে নেমেছেন। এ আসনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ৩১২ সংরক্ষিত নারী সংসদ সরাইল উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম শিউলি আজাদ, তিনি এলাকার মানুষের মাঝে সরকারের উন্নয়ণ কর্মকান্ডের লিফলেট বিতরণ ও এলাকায় শুভেচ্ছা ব্যানার দিয়েছেন। তিনি বলেন,আমি বঙ্গবন্ধুর গড়া সংগঠন আওয়ামীলীগের রাজনীতি করি। সবসময়ই নির্বাচন করি দলের পক্ষে। দল যাকে মনোনয়ন দিবে তার পক্ষে বিগত দিনেও কাজ করেছি ভবিষ্যতেও করব। আমাদের অভিবাবক দলের প্রধান যে সিদ্ধান্ত দিবেন তা মেনে নিয়ে স্থানীয় জনমানুষের কল্যাণে কাজ করে আসছি।সরাইল-আশুগঞ্জ এলাকার তৃণমূল নেতা কর্মীদের দীর্ঘদিনের দাবি নৌকার প্রার্থী দেখতে চাই।
জানাগেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামীলীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মাহবুবুল বারী মন্টু গনসংযোগ করছেন। তিনি এলাকায় নানা মানবিক উন্নয়নে সহায়তাসহ এলাকায় গণসংযোগ করে চলেছেন। তিনি এবার এ আসনে দলীয় মনোনয়ন চাইবেন এটা পরিষ্কার। এ বিষয়ে তিনি বলেন,দল যাকেই নৌকা মনোনয়ন দিবেন তার পক্ষেই আমি কাজ করব ইনশাল্লাহ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের অভিভাবক আমি বলেছি সরাইল আশুগঞ্জে নৌকা দেওয়ার জন্য। নেত্রী যাকে নৌকা দিবে আমরা সবাই মিলে নৌকার কাজ করব। ইনশাল্লাহ সকল নেতাকর্মীদের হৃদয়ের চাওয়া এ আসনে নৌকার প্রার্থী দেখতে চাই।সরাইল উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও আওয়ামীলীগ নেতা এড. আশরাফ উদ্দিন মনতু এবার মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে এলকায় নানা কাজে যুক্ত থেকে জনমানুষের মাঝে নিজেকে তুলে ধরছেন।তিনি বলেন, আওয়ামীলীগের রাজনীতি করি দলের প্রতি পূর্ন আস্থা রেখেই পথ চলি। যে দিন থেকে রাজনীতি শুরু করেছি সেদিন থেকেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে লালন করি,মনে প্রানে ধারন করি এলাকাবাসীর পাশে থাকার চেষ্টা করি। দ্বাদশ নির্বাচনে এ আসনে নৌকা মার্কা চাই। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা উপ-কমিটির সদস্য, ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সরাইল সদরের কৃতি সন্তান ডা: আশীষ কুমার চক্রবর্তী শুভেচ্ছা জানিয়ে ব্যানার দিয়েছেন। ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আবু শামীম পেয়ার পলাশ সরাইল- আশুগঞ্জ আসনের বিভিন্ন এলাকা সফর করে নেতাকর্মী সমর্থকদের সাথে দেখা স্বাক্ষাত করেছেন। তিনি বলেন,আমার পিতা ছিলেন বঙ্গবন্ধুর একজন সহচর ও প্রিয় কর্মী। আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ রাজনীতি করি।মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করতে এলাকায় বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে কাজ করে যাচ্ছি।সাংবাদিক এমডি জালাল মিয়া, তিনি এলাকার মানুষের মাঝে সরকারের উন্নয়ণ কর্মকান্ডের লিফলেট বিতরণ করেন এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার পক্ষে ভোট প্রার্থনা করেন। অপর দিকে সরাইল উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এড. নুরুজ্জামান লস্কর তপু, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২ আসনের তৃণমূল নেতা কর্মীদেরকে নিয়ে মাঠে ময়দানে কাজ করে যাচ্ছেন বিএনপির এ নেতা।জাতীয় পার্টি পক্ষ থেকে নিজকে জানান দিয়ে ব্যানার দিয়েছেন এড.আব্দুল হামিদ বাসানী এদিকে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে নাম শুনা গেলেও মাঠে অনেকেরই দেখা মিলেনি। তবে সরাইল- আশুগঞ্জ উভয় দলের বিভেদ ও কোন্দল থাকায় সাধারন জনগন থেকে শুরু করে নেতা কর্মীদের মধ্যে অনেকটাহতাশা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আ’লীগ,বিএনপি ও অন্যান্য দলের প্রার্থীরা বিভিন্ন কৌশলে আগাম নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
তারা স্ব-স্ব অবস্থান থেকে সামাজিক রাজনৈতিক, সেবামূলক বিভিন্ন কর্মকান্ডসহ ভোটারদের নিকট শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন।
নির্বাচনী এলাকায় বড় দু দল আওয়ামীলীগ ও বিএনপি একাধিক প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে (সরাইল-আশুগঞ্জ) মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন-বর্তমান এমপি ও বিএনপির দলছুট নেতা উকিল আব্দুস সাত্তার ভুঁইয়া, আওয়ামী লীগের মঈন উদ্দিন মঈন, শাহজাহান আলম সাজু, অ্যাডভোকেট নাজমুল হক, অ্যাডভোকেট সৈয়দ তানভীর হোসেন কাউসার, অ্যাডভোকেট কামরুজ্জামান আনসারী, মোহাম্মদ হানিফ মুন্স বিএনপির নির্বাহী কমিটির সহ- আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা মনোনয়ন চাইবেন বলে এলাকায় আলোচনা আছে।শেখ মোহাম্মদ শামীম, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাড. আবদুর রহমান, আক্তার হোসেন, তরুণ দে, আহসান উদ্দিন খান শিপন, আবু আসিফ; জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা, অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া,ইসলামী ঐক্যজোটের হাফেজ মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী; জাকের পার্টির জহিরুল ইসলাম জুয়েল; ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) রাজ্জাক হোসেন।