সীতাকুণ্ডে আওয়ামী ব্যবসায়ী নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও মার্কেট ভাংচুরের অভিযোগ

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড পৌরসদর ব্যবসায়ী দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বেলাল হোসেনের বিরুদ্ধে দেড় লাখ টাকা চাঁদাবাজি ও শপিংমল ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শপিংমল মালিক থানা, ভূৃমি অফিস, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ও সেনাবাহিনীর কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মো. ইসমাইল হোসেন সেলিম কলেজ রোড়স্থ আহছানুজ্জামান শপিং কমপ্লেক্সের মালিক ও আমিরাবাদের বাসিন্দা। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ সেপ্টেম্বর বেলা এগারোটার দিকে ব্যবসায়ী সমিতির সেক্রেটারি বেলাল একদল সন্ত্রাসী নিয়ে আহছানুজ্জামান শপিং কমপ্লেক্সে হামলা চালায়। এসময় তারা ভবনের চারতলা থেকে নিচ তলা পর্যন্ত পাইপ, বাথরুম ফিটিংস ভেঙে ফেলে। ওইসময় বেলাল মার্কেটের মালিক সেলিমকে খোঁজ করতে থাকে এবং প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেয়। কিন্তুু সেলিম বাইরে অবস্থান করায় প্রাণে বেঁচে যান। অভিযোগ পত্রে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, তিনতলা বিশিষ্ট আহছানুজ্জামান শপিং কমপ্লেক্স ২০১২ সালে নির্মিত৷ চলতি বছরের জুলাইয়ে অর্থাৎ আওয়ামী সরকারের আমলে মার্কেটের চার ও পাঁচতলার নির্মাণ কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। বিষয়টি জানতে পেরে পৌরসদর ব্যবসায়ী দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ বেলাল হোসেন সেলিমের কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।চাঁদা না দিলে নির্মাণ কাজ করতে পারবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়। এমতাবস্থায় তিনি বেলালকে দেড় লাখ টাকা দিয়ে শান্ত করে এবং কাজ শুরু করে। এরপর দুইমাস ধরে নির্মাণ কাজ করে চারতলার কাজ এখন প্রায় শেষের দিকে। কিন্তুু বেলাল আবারও চাঁদা দাবি করে। পরিবর্তিত পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে সেলিম তাকে চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ৩ সেপ্টেম্বর বেলাল সদলবলে আহছানুজ্জামান শপিং কমপ্লেক্সে হামলা করে ভাঙচুর চালায়।

মো. ইসমাইল হোসেন সেলিম বলেন, আমি এসে দেখতে পাই আমার মার্কেটের সবকিছু তছনছ করে দিয়েছে বেলাল। তাকে চাঁদা না দেওয়ায় সে এগুলো করেছে। আমি কেন তাকে চাঁদা দিব। বাজারের মালিক কি বেলাল নাকি? আমার দুই লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি করেছে সে। আমার ও মার্কেটের সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে। ব্যবসায়ীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তিনি আরও বলেন, আমি সব দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছি। আমার কাছ থেকে নেওয়া চাঁদার দেড় লাখ টাকা ফেরত ও মার্কেট ভাঙচুরের বিচার চাই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোহাম্মদ বেলাল হোসেন বলেন, আমিতো আইনের উর্ধ্ব নয়৷ আপনারা এসে দেখে যান এই অভিযোগগুলো কেন করা হয়েছে। আমি এ ধরণের কিছুতে জড়িত থাকলে লিখিয়েন।

প্রসঙ্গত, প্রীতি স্টোরের মালিক মোহাম্মদ বেলাল হোসেন সীতাকুণ্ড ব্যবসায়ী সমিতির নেতা হয়ে পুরো বাজারে আধিপত্য বিস্তার করে থাকেন বলে অভিযোগ আছে। এর আগে থানার সামনে এক ভূষি দোকানীকে মারধরের অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া রাস্তায় যানজট সৃষ্টি করে পণ্যের ট্রাক পার্কিং, বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের তুচ্ছতাচ্ছিল্যের সুরে কথা বলা, ধমক, হুমকি বেলালের নিত্য নৈমিত্তিক অভ্যাস বলে জনশ্রুতি আছে। বেলাল আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বাকের ভূঁইয়ার ছত্রছায়ায় ছিলেন। গেল পাতানো ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান হতে চেয়েছিলেন এই বেলাল। বাজার দর সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণের অভিযোগের তীরও বেলালের দিকে।