ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের আধিক্যে অতিষ্ঠ খুলনাবাসী। ৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে প্রতিদিনই নগরীতে ইজিবাইকের সংখ্যা বাড়ছে।
মহানগরের বাইরের ইজিবাইক শহরে ঢুকে পড়ায় ইজিবাইকের সংখ্যা বেড়েছে। দিন দিন ইজিবাইকের সংখ্যা বাড়ার কারণে নগরীতে লেগে আছে লাগাতার যানজট।
এ অবস্থায় শহরে ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণের জন্য খুলনা মহানগরের বাইরের ইজিবাইক শহরে প্রবেশ করা ও নগরের বাইরের ইজিবাইক শহরে ঢোকায় নিষেধাজ্ঞা কার্যকর শুরু করেছে কেএমপি।
মহানগরে ইজিবাইকের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ও রুট নির্ধারণে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) ট্রাফিক বিভাগ ও খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) গৃহীত পদক্ষেপ অনুযায়ী রোববার (৬ অক্টোবর) থেকে ইজিবাইক প্রবেশ ও বের হওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর শুরু হয়েছে।
সকাল থেকে মহানগরের অন্যতম প্রবেশদ্বার গল্লামারীতে কেএমপির ট্রাফিক পুলিশ ও কেসিসির লাইসেন্স শাখার কর্মকর্তা যৌথভাবে এ কাজ তদারকি করছে। এ কাজে সহযোগিতা করছে ট্রাফিক কন্ট্রোলিং বিভাগ খুলনা জেলা, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়সহ (খুবি) বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা ও নিরাপদ সড়ক চাইয়ের (নিসচা) খুলনা মহানগর শাখার সদস্যরা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী প্রধান ট্রাফিক কন্ট্রোলিং সমন্বয়ক মো. নাঈম মল্লিক, নিরাপদ সড়ক চাইয়ের (নিসচা) খুলনা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান মুন্না, কেসিসির সিনিয়র লাইসেন্স অফিসার মনিরুল ইসলাম রহিম, মো. দেলোয়ার হোসেন, লাইসেন্স ইন্সপেক্টর মোল্লা সেলিম রেজা, খুলনা সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ শিক্ষার্থী নূর মোহাম্মদ আদর, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী রনি গাজী, লায়ন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস জান্নাত, সুন্দরবন আদর্শ কলেজের শিক্ষার্থী আসিফ হোসেন আরিক, খুলনা পাবলিক কলেজের শিক্ষার্থী সাদমান সাকিব সিহাব, নর্দান ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদসহ ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তারা।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী প্রধান ট্রাফিক কন্ট্রোলিং সমন্বয়ক মো. নাঈম মল্লিক বলেন, যানজট সমস্যার দ্রুত ও কার্যকর সমাধান করতে সবাই মিলে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আগস্ট থেকে পরবর্তী বেশ কয়েক দিন বাংলাদেশের সড়কগুলোতে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ (ট্রাফিক) ব্যবস্থা বলতে গেলে পুরোপুরিই অকার্যকর ছিল। এ সময়ে সারা দেশের অধিকাংশ সড়কে শিক্ষার্থীরা স্বপ্রণোদিত হয়ে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালন করেছেন। ৫ আগস্ট বিকেল থেকে এ দায়িত্ব পালন সীমিত পরিসরে শুরু হলেও পরবর্তী দিনগুলোতে তা ব্যাপক পরিসরে বাড়ে এবং ক্রমান্বয়ে তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। খুলনাও সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে শিক্ষার্থীরা ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে। কুড়িয়েছে প্রশংসা। আমি মনে করি শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা অভিজ্ঞতা সম্পন্ন তাদের পার্টটাইম ট্রাফিক বিভাগে চাকরি করার সুযোগ দিলে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে দ্রুত।
নিসচার খুলনা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান মুন্না বলেন, সম্প্রতি সময় শহরে ইজিবাইক ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার সংখ্যা ব্যাপকভাবে বেড়ে দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নগরবাসীর চলাচলে সুবিধা আনতে ও যানজট নিরসনের জন্য ইজিবাইক ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচলে শৃঙ্খলা আনার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। যা সত্যিই প্রশংসনীয়।
তিনি মনে করেন, শহরের যানজট কমাতে নগরীতে দিনে ও রাতে দুই শিফটে ইজিবাইক চলাচলের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। দিনে সবুজ রঙের ইজিবাইক ও রাতে লাল রঙের ইজিবাইক।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) শাহরিয়ার মোহাম্মদ মিয়াজী জানান, সড়কে ইজিবাইক ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার দৌরাত্ম্য কমাতে ও সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে নগরের বাইরের ইজিবাইক শহরে ঢুকতে ও শহরের ইজিবাইক বাইরে যেতে পারবে না। মহানগরীর প্রবেশ পথগুলোতে অভিযান পরিচালনা হচ্ছে। অবৈধ ইজিবাইক, ইঞ্জিনচালিত রিকশা বন্ধের জন্য ইতোমধ্যে মাইকিং করা হয়েছে। যারা নিয়ম মানবে না তাদের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।