চট্টগ্রাম বইমেলা শুরু, শেষ হয়নি স্টল নির্মাণ

চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেসিয়াম মাঠে ২৬ দিনব্যাপী অমর একুশে বইমেলা শুরু হয়েছে। তবে এখনও শেষ হয়নি মেলার স্টল নির্মাণ। প্রথম দিনে দর্শনার্থীর সাড়া মিললেও বইয়ের দোকানগুলো প্রস্তুুত না হওয়ায় বিক্রি কম হয়েছে।

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে একুশে বইমেলার শুভ উদ্বোধন করেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

শনিবার মেলায় গিয়ে দেখা গেছে, প্রবেশ ফটকে বদলে যাওয়া বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পতন হয়েছে স্বৈরশাসক হাসিনার। রাজপথের আন্দোলনে রক্ত ঝরেছে হাজারো মানুষের। সে রক্তের ঋণের কথা স্মরণ করতেই আয়োজকেরা এমন উদ্যোগ নেন। মূল গেইটের দুই প্রান্তে রাখা হয়েছে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদ আর ওয়াসিম আকরামের ছবি।

মেলার ভেতরেও নানাস্থানে আছে জুলাই আন্দোলনের অসংখ্য স্মৃতি। জুলাই আন্দোলনের স্মৃতিকে সামনে রেখে সাজানো হয়েছে স্টলগুলোও। ২৬ দিনব্যাপী বইমেলায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, এই বইমেলার ন্যারেটিভ (বয়ান) আলাদা হবে। দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনের পতন ঘটিয়ে জুলাইয়ের ৩৬ দিনে ছাত্র–জনতা রক্ত দিয়ে বাংলাদেশ বদলে দিয়েছেন। বদলে যাওয়া ন্যারেটিভের ওপর দাঁড়িয়ে আজকের এই বইমেলা। বাংলাদেশে তো বইমেলা বায়ান্ন সাল থেকেই হচ্ছে, একুশ উদ্‌যাপন করা হচ্ছে। পাশাপাশি খুবই ছোট আঙ্গিকে প্রচারণার জন্য স্মরণিকা বের করে নিজেদের পাড়ায় পাড়ায় অনুষ্ঠান ছিল। ব্যাপকভাবে বাংলা একাডেমি অনেক পরে করেছে।

উপদেষ্টা আদিলুর রহমান আরও বলেন, আজকের যে বাস্তবতা, বদলে যাওয়া বাংলাদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের যে সংগ্রাম, অন্যায়–অবিচারের বিরুদ্ধে যে সংগ্রাম, একটা ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে যে সংগ্রাম, এটার ওপরে দাঁড়িয়ে আজ বইমেলা হচ্ছে।

আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের সংগ্রামের কথা লেখার অনুরোধ জানিয়ে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা আশা করি, এ সংগ্রামে অংশ নেওয়া সমস্ত ছাত্র ও শহীদদের কথা আপনারা লিখবেন। আমাদের প্রতিনিয়ত যেন মনে থাকে, রক্তের ওপরে দাঁড়িয়ে আমরা আজকের বাংলাদেশে আছি। আমাদের যেন প্রতিনিয়ত মনে থাকে, যে ঐক্য রচিত হয়েছিল ৫ আগস্ট, সে ঐক্য যেন কোনো অবস্থাতেই কোনো শক্তি ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করতে পারে। আমাদের যেন এ কথা মনে থাকে, যেকোনো দুর্বলতার সুযোগে ফ্যাসিবাদ ফিরে আসার চেষ্টা করতে পারে। আমাদের মনে রাখতে হবে, আগ্রাসন ও বিভিন্ন ধরনের আক্রমণের থেকে কিন্তু আমরা মুক্ত নই।

মেলা ঘুরে দেখা গেছে এখনো বেশ কয়েকটি স্টলের নির্মাণ কাজ চলছে। প্যাভিলিয়নগুলোতে নানা সাজ সজ্জার কাজে ব্যস্ত কর্মীরা। তবে অনেক স্টল প্রস্তুত হয়েছে। বইয়ের তাকের খাঁচে খাঁচে সাজানো হয়েছে নানা বই। দেশবরেণ্য বিখ্যাত কথা শিল্পী, সাহিত্যিক, কবি, লেখকদের নতুন বের করা বই ও পুরোনো বই পাওয়া যাচ্ছে অমর একুশে বইমেলায়। গোয়েন্দা সিরিজ থেকে শুরু করে কবিতা সমূহ, গল্পগ্রন্থ, ইতিহাস ও ধর্মীয় বইসহ সব ক্যাটেগরির বই মিলছে এবারের ববইমেলায়।

উল্লেখ্য গতবছর একুশে বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছিল নগরের সিআরবিতে।