
প্রায় তিন বছর আগে মাদ্রাসার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়ে যান চৌদ্দ বছর বয়সী হাফেজ মুয়াজ বিন তাহের। বহু খোঁজাখুঁজি করেও পরিবার তাকে পায়নি। সেই থেকে তার মায়ের চোখের জল যেন ঝরণার মতো। ঝরছেতো ঝরছেই। আজও ছেলের পথে বসে আছেন আর কান্নায় বুক ভাসাচ্ছেন মা রাহেলা বেগম।
শুধু মা নয় মুয়াজের বাবা আবু তাহেরও তার ছেলের নিখোঁজ সংক্রান্ত ব্যাগভর্তি কাগজপত্র নিয়ে থানা থেকে শুরু করে শহরের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত বছরের পর বছর ছুটে বেড়াচ্ছেন। এরপরও মায়ের কান্না থামাতে পারছেন না তিনি।
জানা যায়, নিখোঁজ হাফেজ মুয়াজ বিন তাহের চট্টগ্রাম আদর্শ বায়তুশ শরফ কামিল মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেনীর শিক্ষার্থী। নগরের হালিশহর এলাকার বাসিন্দা আবু তাহের ও রাহেলা খানম লাকী দম্পতির চার সন্তানের মধ্যে সবার ছোট তাহের। ২০২২ সালের ২৬ জুলাই সকালে প্রতিদিনের মত হালিশহর নিউ আই ব্লকের বাসা থেকে ধনিয়ালা পাড়া চট্টগ্রাম আদর্শ বায়তুশ শরফ মাদ্রসার উদ্যেশ্যে বের হয়। এরপর সে আর বাসায় ফিরেনি। সেই থেকে হাফেজ মো মুয়াজ বিন তাহেরের আর কোন খোঁজ পাননি। পরদিন হালিশহর থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। কিন্তু অদ্যবদি ছেলেটির খোঁজ পাওয়া যায়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, থানা পুলিশের পাশাপাশি পুলিশের বিশেষ সংস্থা পিবিআই, সিআইডি, কাউন্টার টেরোরিজমে অভিযোগ দিয়েছেন নিখোঁজ শিশুর বাবা। কিন্তু কেউ তাঁর খোঁজ দিতে পারেনি।
বাবা আবু তাহের এখন নিখোঁজ ছেলে মুয়াজের ছবি, থানার ডায়রিসহ তার স্মৃতির কাগজপত্র ব্যাগ সঙ্গে নিয়ে এপার-ওপার ছুটে বেড়ান। ছেলের খোঁজ পেতে তিনি কখনো বড় মাহফিলে বা বড় সমাবেশে ছুটে যাচ্ছেন। কিন্তু এখনো তাঁর প্রাণপ্রিয় সন্তানের দেখা পায়নি।
জানতে চাইলে হালিশহর থানার উপ পুলিশ পরিদর্শক ইমন দত্ত বলেন, বিষয়টি অনেক আগের এবং তদন্তকারী কমর্কতা অন্যজন ছিলেন। এখন আমরা আবার বিষয়টা নিয়ে খোঁজ খবর নিবো।
নিখোঁজ হাফেজ মো.মুয়াজ বিন তাহেরের বাবা বাবা আবু তাহের বলেন, আমার ছেলে যখন ২০২২ সালে নিখোঁজ হয় তখন আমার ছেলে হাফেজ ও মাদ্রসায় পড়ার কারণে প্রশাসন খুব একটা আন্তরিক ছিলো না। ২০২৪ সালে ছাত্র আন্দোলনের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আমার ছেলে উদ্ধারে সকলের সহযোগীতা চাই।
তিনি আরো জানান, নিখোঁজ ছেলের মা রাহেলা খানম লাকী ছেলের জন্য পাগল প্রায়। কেঁদে কেঁদে চোখের জলে হাফেজ ছেলের জন্য এখনো পথ চেয়ে আছেন। হয়তো নিখোঁজ ছেলে হাফেজ মো মুয়াজ বিন তাহের মায়ের কাছে ফিরবে।