বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ১৩ বছরের শিশুকে অপহরণ করেছে ৪০ বছরের যুবক

নিজস্ব প্রতিবেদক :

বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ১৩ বছরের শিশুকে অপহরণ করেছে ৪০ বছরের যুবক। সম্প্রতি চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন রুবিগেইট এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। অপহৃত শিশু পাঁচলাইশ থানাধীন রুবি গেইট এলাকার মৃত কাজী সিফাত উল্লাহর মেয়ে আইরিন কাজী (১৩)। সে চট্টগ্রাম ডিজিটাল স্কুল এন্ড কলেজের ৮ ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। অপহরণের পর শিশুটির মামা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল আদালত-৭ চট্টগ্রামে অপহরণ মামলা দায়ের করেন।

 

আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)কে তদন্তের নির্দেশ দিলে পিবি আই পরিদর্শক মুহিদুল অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে সিএমপি’র ডবলমুরিং থানার অধীন ভিক্টিম সাপোর্ট সেন্টারে হস্তান্তর করে। উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন পিবিআই পরিদর্শক মুহিদুল। তবে মামলায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, আদালতে প্রতিবেদন পাঠানোর পর আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

মামলায় অভিযুক্তরা হলেন বায়েজিদ বোস্তামী থানা এলাকার আনন্দবাজার কাইয়ুমের বিল্ডিং এর বাসিন্দা রাজু (৪০), সাংবাদিক পাহাড় ৩ নং রোড়ের বাসিন্দা আব্দুল মালেকের ছেলে মতিউর রহমান (৩৮) ও পাঁচলাইশ থানাধীন সিএমবি কলোনী রুবি গেইট এলাকার ফজল আহমদের স্ত্রী বেবি আক্তার (৩৮)।

 

অপহৃত শিশুর মা পারভীন জানান, অভিযুক্ত রাজু (৪০) দীর্ঘদিন যাবৎ শিশু আইরিন কাজীকে বিয়ে করার জন্য তাদের কাছে প্রস্তাব দেন। আইরিন নাবালিকা হওয়ায় এবং রাজুর আগের আরো দুটি স্ত্রী থাকায় তারা প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। এতে রাজু ক্ষিপ্ত হয়ে আইরিনকে অপহরণ করে বিয়ে করার হুমকি দেয় পরিবারের কাছে। গত ২৪/০৫/২০২৫ তারিখে অন্যান্য অভিযুক্তদের সহযোগিতায় রাজু ভিক্টিম আইরিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায় এবং পরবর্তীতে খবর পেয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করা হয়। এনিয়ে ভুক্তভোগীর মামা পাঁচলাইশ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।

 

আইরিনের মামা মামুন জানান, গত ২৬ শে সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় অভিযুক্ত রাজু ও অন্যান্য অভিযুক্তদের সহযোগিতায় শিশু আইরিনকে অপহরণ করা হয়। খবর পেয়ে আইরিনের পরিবার আইরিনকে উদ্ধারের চেষ্টা করলে উল্টো তাদের হুমকি প্রদান করা হয়। এবিষয়ে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা না নিয়ে আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেন। এতে ভুক্তভোগী আইরিনের মামা মামুন বাদি হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল আদালত-৭ চট্টগ্রামে অপহরণ মামলা দায়ের করেন। তবে ভিক্টিম উদ্ধার হলেও মংগলবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে অপহৃত শিশুকে আইরিনকে আদালতে জবানবন্দি দিতে নিয়ে গেলে তাকে দেখতে তার পরি গেলে তাদের উপর মামলার আসামিরা হামলা চালায় বলে জানান বাদি পক্ষ। যদিও আদালত ভিক্টিমের জবানবন্দি শেষে তাকে সেইফ কাস্টুরিতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

 

জানা যায়, অপহরণকারী রাজু বিগত আওয়ামী সরকারের প্রভাব খাটিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থের মালিক হয়েছেন। আওয়ামী সরকার পতনের পর বায়েজিদ এলাকার এক বিএনপির আশ্রয় প্রশ্রয়ে সে এখনো এলাকায় প্রভাব বিস্তার করছেন। অথচ এই রাজু সৈরাচার আওয়ামী লীগের এমপি মহিউদ্দিন বাচ্চুর আস্থাভাজন হিসেবে দাপিয়ে বেডিয়েছেন। এছাড়াও জানা গেছে আওয়ামী দোষর ইমরান নামের আরো একজনের যোগসাজশ রয়েছে এই অপহরণের পেছনে।