চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ দিবস পালন

প্রেস বিজ্ঞপ্তি: চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘ঐতিহাসিক ৭ মার্চ দিবস’ উপলক্ষে গতকাল ৭ মার্চ ২০২২ ইংরেজি সোমবার বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করা হয়েছে। কর্মসূচীর মধ্যে ছিল-সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকল সরকারী-বেসরকারী ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সুবিধাজনকসময়ে বিভিন্নস্থানে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ডকুমেন্টারী, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, জেলা শিল্পকলা ও শিশু একাডেমিতে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ, রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, সকাল ৯টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমির বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, সকাল ১০টায় নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠান সম্প্রচার, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণ ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মোঃ আশরাফ উদ্দিন। মূখ্য আলোচক ছিলেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল মোবারক। বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি মোঃ আনোয়ার হোসেন, সিএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) শ্যামল কতুমার নাথ, জেলা পুলিশ সুপার এস.এম রশিদুল হক, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম সরোয়ার কামাল দুলু। বক্তব্য রাখেন মহানগর সংসদের ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল হক চৌধুরী সৈয়দ, সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সাধন চন্দ্র বিশ্বাস, বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ নূর আলম। শেষে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে আয়োজিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ। সবশেষে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এ দিকে ‘ঐতিহাসিক ৭ মার্চ দিবস’ উপলক্ষে সকাল ৯টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমির বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বিভাগীয় কমিশনার মোঃ আশরাফ উদ্দিন, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি মোঃ আনোয়ার হোসেন, সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর, জেলা পুলিশ সুপার এস.এম রশিদুল হক, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা
সংসদের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার একেএম সরোয়ার কামাল, জেলা শিল্পকলা একাডেমি, জেলা শিশু একাডেমি, পিবিআই, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ, রেলওয়ে পুলিশ, শিল্প পুলিশ, টুরিস্ট পুলিশ, আনসার-ভিডিপি, আর.আর.এফ কমাড্যান্ট, সমাজসেবা, বন বিভাগ, গণপূর্ত দপ্তর, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্টানের কর্মকর্তাবৃন্দ। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মোঃ আশরাফ উদ্দিন বলেন, ৭ মার্চের ভাষন হলো রাজনীতির কবি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অমর কাব্যমালার অনন্য নিদর্শন। ঐতিহাসিক ৭ মার্চেও ভাষণ শুধু ১৯৭১ সালে বাঙালী
জাতিকেই অনুপ্রাণিত করেছিল তা নয়, বরং এ ভাষণ যুগে যুগে বিশ্বের সব অবহেলিত, বঞ্চিত ও স্বাধীনতাকামী জাতি গোষ্ঠীকে অনুপ্রেরণা যোগাতে থাকবে। ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর ইউনেস্কো ঐতিহাসিক এ ভাষণকে বৈশ্বিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ায় আর্ন্তজাতিক পরিমন্ডলেও এ ভাষণের তাৎপর্য ও গুরুত্ব অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।   তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক ১৯৭১ সালের ৭ মার্চে প্রদত্ত ভাষণের দিনটিকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ‘ঐতিহাসিক ৭ মার্চ দিবস’ হিসেবে ঘোষনা করে।

সভায় অন্যান্য বক্তারা বলেন, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে (তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান) ভাষণের মাধ্যমে বাঙালি জাতিকে স্বপ্নে বিভোর করেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর এই ঐতিহাসিক ভাষণ বাঙালি জাতিসত্তার বিকাশ ও স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় অনন্য অবদান রেখেছে। এই ভাষণের মাধ্যমে জাতির পিতা নিরীহ ও নিরস্ত্র বাঙালিকে সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রস্তুত
করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর প্রেরণাদায়ে সেই ভাষণ বাঙালি জাতির কাছে সব সময়ই বিশেষ কিছু। ২০১৭ সালে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেস্কো বিশ্ব ইতিহাসের প্রামাণ্য দলিল হিসেবে গ্রহণ করে ভাষণটিকে। সংস্থাটি বিশ্বের ৭৮টি ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ দলিল, নথি ও বক্তৃতার মধ্যে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণও অন্তর্ভুক্ত করে। এর পর সরকারিভাবে দিবসটি আড়ম্বরের সঙ্গে পালন করা হয়। বক্তারা ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তরুণ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে স্ব স্ব অবস্থান থেকে  কাজ করার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান।