কিশোরী ও মায়ের সুস্বাস্থ্যের জন্য পরিমিত পুষ্টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণঃ লাইন ডাইরেক্টর

প্রেস বিজ্ঞপ্তিঃ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় পুষ্টি সেবা প্রতিষ্ঠানের (এনএনএস) লাইন ডাইরেক্টর ডা. এস.এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, অপুষ্টি একটি জাতীয় সমস্যা। বাল্যবিবাহ ও অন্যান্য কারণে অনেক শিশু ও কিশোর-কিশোরী অপুষ্টিসহ রক্তশূন্যতায় ভূগছে। তা সমাধানের পথ খুঁেজ বের করা সকলের দায়িত্ব। কিশোরী ও মায়ের সুস্বাস্থ্যের জন্য পরিমিত পুষ্টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রকৃতপক্ষে ভ্রƒণ ও শিশুর বেঁচে থাকা, শারীরিক বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশ পরিমিত পুষ্টির উপর নির্ভও করে। মায়েদেও পুষ্টি ও স্বাস্থ্যের জন্য গর্ভধারণের আগে, গর্ভাবস্থায়, দুগ্ধদানকালে পর্যাপ্ত খাদ্যগ্রহণ, সািঠক খাদ্যাভাস ও পুষ্টিসেবা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।অপুষ্টির কারণে গর্ভাবস্থায় ও প্রসবের সময় জঠিলতা বাড়ে। পাশাপাশি মা, নবজাতক ও শিশুর অসুস্থতা বৃদ্ধি পায়। আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজির গোল অর্জনসহ কিশোর-কিশোরীদেরকে স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিষয়ে সচেতন করতে বর্তমান সরকার সারাদেশে একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে সর্বত্র ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা অব্যাহত রাখতে হবে।  ১৩ মার্চ ২০২২ ইংরেজি রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়স্থ দি পেনিনসুলা হেটেলে অনুষ্টিত “বাংলাদেশে মাতৃপুষ্টির জন্য জাতীয় নির্দেশিকা সংক্রান্ত বিভাগীয় অভিমুখীকরণ” বিষয়ক বিভাগীয় কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এনএনএস, আইপিএইচএন ও ইউনিসেফ’র সহযোগিতায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয় দিনব্যাপী কর্মশালার আয়োজন করেন। সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর বলেন, খাদ্যের কথা ভাবলে পুষ্টির কথাও ভাবতে হবে। শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের জন্য পুষ্টিকর খাবার অত্যন্ত প্রয়োজন। নতুবা জন্মের পর শিশু অপুষ্টিতে ভূগে বিকলাঙ্গসহ নানা রোগে আক্রান্ত হতে পারে। সকলের আন্তরিকতা ও সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে বাল্যবিবাহ রোধসহ সারাদেশে মাতৃপুষ্টি কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা সম্ভব। জন্মের পর পর যে শিশুকে মায়ের দুধ ছাড়া অন্য কোন বিকল্প খাবার দেয়া হবেনা সে শিশু ভবিষ্যতে সুস্থ ও মেধাবী হবে। কর্মশালায় অন্যান্য বক্তারা বলেন, জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা বর্তমান সরকারের স্বাস্থ্যবান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সারাদেশে পুষ্টিসেবা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। দেশের সকল বিশেষায়িত জেলা সদর হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কমিউনিটি ক্লিনিকে পুষ্টি কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে সর্বত্র স্বাস্থ্য ও পুষ্টির ক্ষেত্রে দৃশ্যমান পরিবর্তন আনা হচ্ছে। পাশাপাশি দেশের অনুমোদিত স্কুল, মাদ্রাসা ও এতিমখানাগুলোতে পুষ্টি কার্যক্রম বেগবান করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্যাকেজ প্রোগ্রামের মাধ্যমে জাতীয় নিউট্রিশন কার্যক্রম জোরদার করতে সংশ্লিষ্টদেরকে আরও আন্তরিক হতে হবে। সুস্থ সবল জাতি গঠনে পুষ্টিকর খাবারের কোন বিকল্প নেই।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীরের সভাপতিত্বে ও শিওর সেল চট্টগ্রামের হেড অব অপারেশন জয়নব রুমার সঞ্চালনায় অনুষ্টিত কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিবার পরিকল্পনা চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক মোঃ হাবিবুর রহমান (যুগ্মসচিব), চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আক্তার চৌধুরী, চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপ-পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. মোঃ শাখাওয়াত উল্ল্যাহ, ইউনিসেফ’র চীফ অব ফিল্ড মিসেস মাধুরী ব্যানার্জী ও বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ডা. সুমন বড়–য়া। উন্মুক্ত আলোচনায় অয়শ নেন। মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এনএনএস, আইপিএইচএন’র প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. মোঃ মনিরুজ্জামান ও ইউনিসেফ’র নিউট্রিশন অফিসার ডা. উবাসুই চৌধুরী। কর্মশালায় উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী, শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. আবু জাফর মোঃ সাদেক, শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ রেজাউল করিম, শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. জেবীন চৌধুরী, শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. বাবলী মল্লিক, গাইনী রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মাফরুহা খানম, গাইনী রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. সিরাজুম নুর, চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াস চৌধুরী, খাগড়াছড়ি জেলা সিভিল সার্জন ডা. নুপুর কান্তি দাশ, রাঙ্গামাটি জেলা সিভিল সার্জন ডা. বিপাস খীসা, বান্দরবান জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ নিহার রঞ্জন নন্দী, কক্সবাজারের উপ-পরিচালক (পরিবার পরিকল্পনা) ডা. এম. রাকিব উল্ল্যাহ, চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক (পরিবার পরিকল্পনা) ডা. ছেহেলী নারগিস, চাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডা. নুসরাত জাহান মিথেন, সুবর্ণচর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডা. মোঃ মিজানুর রহমান প্রমূখ। চট্টগ্রাম বিভাগের অধীন ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ৬টি জেনারেল হাসপাতালের গাইনী ও পেডিয়াট্রিক কনসালট্যান্ট, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক, সহকারী পরিচালক, চমেক হাসপাতাল, মা- শিশু জেনারেল হাসপাতাল ও ইউএসটিসি’র গাইনী ও পেডিয়াট্রিক কনসালট্যান্টগণ কর্মশালায় অংশ নেন।