চিটাগাং চেম্বারে “ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড বিজনেস” শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত

প্রেস বিজ্ঞপ্তিঃ দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি এবং ভারতীয় হাই কমিশন, চট্টগ্রাম’র যৌথ উদ্যোগে “ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড বিজনেস” শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক ৩১ মার্চ বিকালে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারস্থ চেম্বার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। চিটাগাং চেম্বার সহ-সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর’র সভাপতিত্বে চট্টগ্রামস্থ ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার ডাঃ রাজীব রঞ্জন (উৎ. জধলববা জধহলধহ), চেম্বারের প্রাক্তন সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আলী আহমেদ, চেম্বার পরিচালকবৃন্দ মোঃ অহীদ সিরাজ চৌধুরী (স্বপন), অঞ্জন শেখর দাশ ও মোঃ শাহরিয়ার জাহান, বিএসআরএম গ্রুপ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমীর আলীহুসেইন, চেম্বারের প্রাক্তন পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, চেম্বার সেক্রেটারী ইনচার্জ প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফারুক, রিলায়েন্স শিপিং এন্ড লজিস্টিক লিঃ’র চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রাশেদ, শান ট্রেডিং কর্পোরেশন’র পরিচালক মোঃ হাসান, বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিঃ’র হেড অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল সৈয়দ মোহাম্মদ নাসিম, আরামিট লিঃ’র ডিজিএম (সিমেন্ট) এ.কে.এম. মারুফ, ম্যানগো লাইন লিঃ’র ম্যানেজার হাবিবুর রহমান ও বাংলাদেশ সেন্টার অব এক্সিলেন্স’র প্রধান নির্বাহী ওয়াসফি তামিম অংশগ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইন্ডাষ্ট্রি’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট রাজকিরণ কানাগালা (গৎ. জধলশরৎধহ কধহধমধষধ) ও ঢাকাস্থ ভারতীয় হাই কমিশনের দ্বিতীয় সচিব (কমার্স) ড. প্রমেশ বাসল। ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার ডাঃ রাজীব রঞ্জন বলেন-ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগে সহযোগিতার লক্ষ্যে এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। যাতে করে দু’দেশের ব্যবসায়ীরা খোলামনে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা সম্পর্কে বিস্তারিত মতবিনিময় করতে পারেন। তিনি ভবিষ্যতে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সেক্টর নিয়ে এ ধরণের কর্মসূচী আয়োজনের মধ্য দিয়ে আলাপ আলোচনার ভিত্তিতে বিভিন্ন জটিল সমস্যার সমাধান এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক পরিবেশে উন্নয়ন করা সম্ভব হবে বলে প্রত্যাশা করেন। দু’দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে সম্পর্কোন্নয়নে ভিসা সংক্রান্ত যেকোন সমস্যা সমাধানে আশ্বাস প্রদান করেন। চিটাগাং চেম্বার সহ-সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক সম্প্রসারণে চারটি মূল বিষয়ের উপর গুরুত্বারোপ করেন। যেমনঃ বেসরকারি খাতের আরো বেশী অংশগ্রহণের মাধ্যমে সমন্বয়ের ক্ষেত্রে উন্নয়ন, উভয়দেশের মধ্যে সৃষ্ট যেকোন ব্যবসায়িক বিরোধ নিষ্পত্তিতে চট্টগ্রামে চিটাগাং চেম্বার এবং সিআইআই’র যৌথ উদ্যোগে একটি বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি কেন্দ্র স্থাপন করা, ব্যবস্থাপনাগত সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ‘নলেজ কোঅপারেশন’ এবং সম্মিলিত উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে নতুন প্রজন্মের অংশগ্রহণ ও অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করা।

হাই কমিশনের দ্বিতীয় সচিব (কমার্স) ড. প্রমেশ বাসল তাঁর প্রবন্ধে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে চলমান সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের উপর বিস্তারিত আলোচনা করেন। কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইন্ডাষ্ট্রি’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট রাজকিরণ কানাগালা তাঁর প্রবন্ধে জিটুজি পর্যায়ের অংশীদারিত্বের উদাহরণ অনুকরণপূর্বক উভয়দেশের বেসরকারি খাতের মধ্যে অংশীদারিত্ব আরো জোরদার করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। চেম্বারের প্রাক্তন সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আলী আহমেদ বলেন-বে-টার্মিনাল, কর্ণফুলি টার্মিনাল ও গভীর সমুদ্র বন্দরসহ চট্টগ্রামে চলমান অবকাঠামো উন্নয়নের সুবিধা গ্রহণ করতে পারে ভারত। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির ভিশন বাস্তবায়নে চট্টগ্রাম থেকে উত্তরাঞ্চলে যাওয়ার সড়ক পথের উন্নয়ন, রেলওয়ে যোগাযোগ এবং নৌ-পথের যোগাযোগের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করার পরামর্শ দেন।

চেম্বার পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ বাংলাদেশ ও ভারতের টেক্সটাইল ও এ্যাপারেল শিল্পে সমন্বিতভাবে সাপ্লাই চেইন গড়ে তোলাকে প্রাধান্য দিয়ে সম্পূরক সামর্থ্য ও সক্ষমতার সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন। চেম্বার পরিচালক মোঃ শাহরিয়ার জাহান উভয়দেশের শিল্পোদ্যোক্তাদের নিয়ে আরো বেশী মতবিনিময় সভা আয়োজনের মাধ্যমে পিপল টু পিপল যোগাযোগ বৃদ্ধি বাণিজ বৃদ্ধিতে সহায়ক হতে পারে বলে মন্তব্য করেন। বিএসআরএম গ্রুপ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমীর আলীহুসেইন আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূর করে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধির আহবান জানান। তিনি সাফটা সার্টিফিকেশন ডিজিটালাইজ করা, বাংলাদেশী পণ্যের উপর এন্ট্রি ড্রাম্পিং ট্যারিফ প্রত্যাহার করা, বিএসটিআই সনদের স্বীকৃতি প্রদান, উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অঞ্চলের বাংলাদেশী পণ্যের ব্যবহার এবং মেডিকেল ও ট্রানজিট ভিসা সহজীকরণের অনুরোধ জানান চেম্বারের প্রাক্তন পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সহযোগিতার ভিত্তিতে আঞ্চলিক বাণিজ্য বৃদ্ধির আহবান জানান।

চেম্বার সেক্রেটারী ইনচার্জ প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফারুক বলেন-চিটাগাং চেম্বারের ছোট বড় সব মিলিয়ে প্রায় ৮ হাজার মেম্বার রয়েছে। এই চেম্বার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সফলতার সাথে সরকারি ও বেসরকারি খাতের মধ্যে ব্রিজ হিসেবে কাজ করছে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়নে বিভিন্ন নীতি সংক্রান্ত ডায়ালগ আয়োজন করে থাকে। এমনকি মহামারীর সময়ে চেম্বার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে এবং প্রায় ২৫ হাজারেরও বেশী রপ্তানি কনসাইমেন্ট প্রেরণে সার্টিফিকেট অব অরিজিন ইস্যূর মাধ্যমে সহায়তা করেছে। শান ট্রেডিং কর্পোরেশন’র মোঃ হাসান ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বর্তমানে বিদ্যমান সমস্যাগুলোর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং ব্যবসায়িক বিরোধ নিষ্পত্তিতে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করেন। রিলায়েন্স শিপিং এন্ড লজিস্টিক লিঃ’র চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রাশেদ কলম্বো বন্দরের পরিবর্তে ভারতের পূর্ব অথবা পশ্চিমাংশের সাথে সরাসরি চট্টগ্রামের মধ্যে বড় জাহাজ চলাচলের প্রস্তাব করেন এবং এতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে সময় এবং ব্যয় হ্রাস পাবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।