মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন, গণহত্যার বিচার ও রোহিঙ্গা গণহত্যা স্মরণ দিবসের ৫ম বার্ষিকী উপলক্ষে মানব বন্ধন অনুষ্ঠিত

মোঃ রাশেদ, উখিয়া, কক্সবাজারঃ মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন, গণহত্যার বিচারের দাবী ও রোহিঙ্গা গণহত্যা স্মরণ দিবসের ৫ম বার্ষিকী উপলক্ষে শান্তি পূর্নভাবে মানব বন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৫আগস্ট বৃহঃস্পতি বার কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলা কুতুপালং সংলগ্ন ক্যাম্প গুলোতে অনুষ্ঠিত উক্ত মানববন্ধনে প্রায় সহস্রাধিক রোহিঙ্গা অংশগ্রহণ করে।

মানব বন্ধনে বক্তব্য রাখেন- ক্যাম্প-৩ হেড মাঝি জমুল হক, হেড মাঝি আয়াছ, শিক্ষক খাইর হোসেন, মোহাম্মদ রফিক, মাওলানা মোহাম্মদ হোসেন ও  তরুণ রোহিঙ্গা নেতা রো ওসমান জোহর আব্দুল্লাহ সহ অন্যান্য রোহিঙ্গা নেতৃবৃন্দ।

এসময় বক্তারা বলেন, আমরা মিয়ানমারের নির্যাতিত রোহিঙ্গা জনগণ। মিয়ানমার আমাদের মাতৃভূমি কিন্তু আমরা দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারে নিপীড়নের শিকার হয়েছি। ১৯৭৮ সাল থেকে, আমরা নির্যাতন, ধর্ষণ, হত্যা সহ আমাদের গ্রাম ও বাড়িঘর পুড়িয়ে ছাই করে দেওয়া হয় । শুধুমাত্র ২০১৭ সালের গণহত্যার সময় ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে বিতাড়িত করা হয়েছে। আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ মানবিক ভিত্তিতে আমাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য।  কিন্তু, বাংলাদেশ আমাদের দেশ নয়। আমরা আমাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে ফিরে যেতে চাই।

বক্তারা আরও বলেন, আমরা রোহিঙ্গারা এখন জোরপূর্বক রাষ্ট্রহীন মানুষ। ২০১৭ সালের দেশত্যাগের পর পাঁচ বছর কেটে গেছে। আর কত দিন আমরা গৃহহীন থাকব? আমরা আর গৃহহীন থাকতে চাই না। আমরা আমাদের এবং আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের ভবিষ্যত নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা মিয়ানমারে আমাদের মাতৃভূমি আরাকানে ফিরে যেতে চাই এবং সেখানে যথাযথ অধিকার নিয়ে নাগরিক হিসেবে বসবাস করতে চাই। তাই, আমরা বিশ্ব নেতৃবৃন্দ এবং সম্প্রদায়ের প্রতি আন্তরিকভাবে আহ্বান জানাচ্ছি যে তারা এগিয়ে আসুন এবং আমাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে ফিরে যেতে এবং সঠিক অধিকার নিয়ে মিয়ানমারে বসবাস করতে আমাদের সহায়তা করুন।

এসময় তারা বিশ্ব সম্প্রদায় ও জাতিসংঘের কাছে  বিভিন্ন দাবী তুলে ধরেন বলেন, অবিলম্বে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে তাদের নিজ গ্রামে পুনর্বাসন করতে হবে, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের অধিকার, নিরাপত্তা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে, রাখাইন রাজ্যে আইডিপি ক্যাম্প বন্ধ করে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন করা, মায়ানমারে নিরপরাধ মানুষের উপর নির্যাতন বন্ধ করা।

মানব বন্ধন শেষে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির মঙ্গল কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।