চট্টগ্রাম বিভাগীয় গণসমাবেশকে ঘিরে সব বিভাগের জনগণের মধ্যে জাগরণ উঠেছে : আমীর খসরু

রিয়াজুর রহমান রিয়াজঃ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বুধবার (১২ অক্টোবর) বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় গণসমাবেশকে ঘিরে সব বিভাগের জনগণের মধ্যে জাগরণ উঠেছে, আমাদের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত। সবাই যার যার এলাকায় মাঠে আছেন। সবাই কার্যক্রম চালিয়েছেন, এই গণসমাবেশকে সফল করার জন্য। আমরা জনগণের বিশাল উদ্দীপনা আগ্রহ দেখে,  চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় মাঠ রেলওয়ে পলোগ্রাউন্ড মাঠে গণসমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড ময়দানের গণসমাবেশ শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে বিপুল জনসমাগমের মাধ্যমে শেষ হবে ইনশাল্লাহ। আমরা কোনো ধরনের ফাঁদে পা দেব না। অনেকে চেষ্টা করবে এদিক সেদিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার জন্য, আমাদের শক্তি ক্ষয় করার জন্য অনেককিছু করবে, অনেককিছু বলবে, অনেক গুজব ছড়াবে। এতে কর্ণপাত করবেন না, ধৈর্য্য ধরবেন। পূর্ণমাত্রার ধৈর্য্য ধরতে হবে। ধৈর্য্যরে যাতে কোনো অভাব না হয়। আমরা আমাদের লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাব। ওরা চাচ্ছে আমাদেরকে ডাইভার্ট করার জন্য। আমাদের সেদিকে ডাইভার্ট হওয়ার প্রয়োজন নেই। জনগণের জোয়ার যেখানে নামে সেখানে কোনো শক্তি বাধা দিতে পারে না।

মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে চট্টগ্রামের নাসিমন ভবনে দলীয় কার্যালয়ে বুধবার (১২ অক্টোবর) বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় গণসমাবেশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

আমীর খসরু বলেন, বিএনপির শক্তি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষের শক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর বাংলাদেশের মানুষের শক্তি বৃদ্ধি পাওয়া মানে বিএনপির শক্তি বৃদ্ধি পাওয়া।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গণসমাবেশ নিয়ে আমাদের মধ্যে কোনো আতঙ্ক নেই। যদি অন্য কারো মধ্যে আতঙ্ক থাকে তারা তা বলতে পারবে। যাদের মধ্যে আতঙ্ক আছে তারা চেষ্টা করবে এই সভাকে অন্যদিকে ড্রাইভার্ট করার। যারা জনগণকে ভয় পায়, জনসমাবেশকে ভয় পায় তারা অনেক কিছু করবে। প্রশাসন আশ্বস্ত করেছে সমাবেশে তারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো রাখবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, আজ বাংলাদেশ যে অবস্থায় গিয়েছে, সে অবস্থা থেকে মানুষ মুক্তি পেতে চাইছে। যে গর্ত থেকে বেরিয়ে আসতে মানুষ সংগ্রামে নেমেছে, সেটার প্রতিফলন আগামীকাল পলোগ্রাউন্ডের মাঠে ঘটবে। দেশের মানুষ আগামীকালের পলোগ্রাউন্ড মাঠের সমাবেশের দিকে তাকিয়ে আছে। চট্টগ্রামবাসী মানুষের প্রত্যাশা-আশা পূরণ করবে আগামীকাল।

সমাবেশে কোনো রূপরেখা থাকবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, এই ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। নিরপেক্ষ সরকার নির্বাচনী সব ব্যবস্থার যে জঞ্জাল, সেটা পরিষ্কার করে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করবে। জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সংসদ হবে। যারা জনগণের কাছে জবাবদিহি থাকবে। এটা হচ্ছে মূল মেসেজ।

আমীর খসরু বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা জ্বলে পুড়ে খাঁটি সোনায় পরিণত হয়েছে। এই কথাটা আমরা বারবার বলছি এবং বারবার বিএনপি নেতাকর্মীরা সেটা পরিপূর্ণভাবে প্রমাণ করছেন। তারা জ্বলে পুড়ে খাঁটি সোনা হয়ে গেছেন। কত ধরনের বাধা-বিপত্তি আছে, কত ধরনের চাপ আছে কিন্তু সবকিছুকে উপেক্ষা করে তারা বুধবারের সভাকে সফল করার জন্য এগিয়ে যাচ্ছে।

বিএনপির এ নেতা বলেন, জনগণের জোয়ার যেখানে নামে, কোনো শক্তি সেখানে বাধা দিতে পারে না। যেখানে বাঁধ ভেঙে গেছে জোয়ার, জোয়ার চলছে, সেখানে কেউ বাধা দিতে পারবে না। সুতরাং এসবের চিন্তা করার আমাদের দরকার নেই। আমরা আমাদের কাজ নিয়ে এগিয়ে যাব। আগামীকাল গণসমাবেশ বাংলাদেশের অন্যতম একটি জনসভায় পরিণত হবে। মানুষের স্মৃতিতে থাকবে। বাংলাদেশের আন্দোলনের ইতিহাসে এ সমাবেশ মাইলফলক হিসেবে থাকবে।

আমীর খসরু বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার দায়িত্ব দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। কোনো দলের দায়িত্ব না বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার। আমি আশা করব যাদের দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার তারা যেন সেই দায়িত্ব পালন করেন, কোনো দলের ওপর যেন ন্যস্ত না করেন। এতে তাদের দুর্বলতা প্রকাশ পাচ্ছে। আমরা যে সভা সমাবেশ করেছি ইতোমধ্যে তা অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে। আমাদের নেতৃত্ব থেকে পরিষ্কারভাবে বলা আছে, প্রতিটি সভা-সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, এখন নির্বাচন কমিশন নিয়ে কোনো বক্তব্য নেই আমাদের। এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার কোনো প্রশ্ন আসছে না। নির্বাচন হতে হবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলে একটা নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। সেই নির্বাচন কমিশন দেশের নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করবে। সুতরাং যতক্ষণ সেই নির্বাচন কমিশনার না আসে, এই অবৈধ সরকার ও এই অবৈধ নির্বাচন কমিশনার নিয়ে আমরা মন্তব্য করতে চাই না। এই সরকারের অধীনে আগামীতে কোনো নির্বাচন হতে পারবে না। এগুলো আলোচনার বিষয় না।

কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিভাগীয় সমাবেশের সমন্বয়কারী মাহবুবের রহমান শামীমের পরিচালনায় এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহাজাহান, মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, চেয়ারর্পাসনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার, এস এম ফজলুল হক, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা.শাহাদাত হোসেন, সদস্য সচিব আবুল হাসেম বক্কর, সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ভিপি হারুনর রশীদ, সহ গ্রাম সরকার সম্পাদক বেলাল আহমেদ, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান, খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ব্যারিস্টার মীর হেলাল উদ্দীন, হুম্মাম কাদের চৌধুরী, কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ সভাপতি নুরুল ইসলাম নয়ন, ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু আফসান ইয়াহিয়া, কৃষকদলের সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল হাসান পলাশ প্রমূখ।