সময়ের নিউজ ডেস্কঃ শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস-২০২২ উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এক আলোচনা সভা আজ ১৪ ডিসেম্বর বুধবার সকাল ১১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মু. মাহমুদ উল্লাহ মারুফের সভাপতিত্বে ও আগ্রাবাদ সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) গালিব চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের পুলিশ সুপার (এসপি) উজ্জ্বল কুমার রায়, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের এমওসিএস ডা. মোঃ নওশাদ খান, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ ও জেলা ইউনিটের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম সরোয়ার কামাল দুলু, মহানগরীর ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ শহীদুল হক চৌধুরী সৈয়দ, সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সাধন চন্দ্র বিশ্বাস, সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা এফ.এফ আকবর খান, জেলা সংসদের সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আহমদ হোসেন, চিটাগাং চেম্বারের সাবেক পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ আক্তারুজ্জামান, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ আবদুল কাদের, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফারহানা লাভলী, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সৌমেন মন্ডল প্রমূখ।
সভায় চট্টগ্রামের সর্বস্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধা, সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার আল-বদর, আল-শামসসহ যারা এদেশের স্বাধীনতা সহ্য করেনি তারাই বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করতেই বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে। দেশ বিরোধী পরাজিত শক্তি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট একই কায়দায় জাতির পিতাকে স্বপরিবারে হত্যা করেছে। তারা বেছে বেছে অসংখ্য শিক্ষাবিদ, গবেষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, কবি ও সাহিত্যিকদের হত্যা করে। যারা জাতির শ্রেষ্ট সন্তানদের হত্যা করেছে এ দেশের মাঠিতে তাদের অনেকের বিচার হয়েছে। অনেকের মৃত্যুদন্ড ইতোমধ্যে কার্যকর হয়েছে। যারা বিদেশে লুকিয়ে আছে তাদেরকে অতিদ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের আওতায় আনার জন্য সরকার উদ্যোগ নিয়েছে।
বক্তারা আরও বলেন, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লাখ শহীদের মধ্যে বুদ্ধিজীবীদের বেছে বেছে হত্যার ঘটনা বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। তারা শহীদ হন এক সুদ‚রপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ হিসাবে। পাকিস্তানী রাজাকার বাহিনী একত্রিত হয়ে সে দিন বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যার মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতাকে কলংকিত করতে চেয়েছিল। আজ জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ উন্নয়নের রোল মডেল। আমরা সকলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের মহাসড়কে সামিল হলে আগামী ২০৪১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের উন্নত রাষ্ট্র সোনার বাংলা গড়তে পারবো। বক্তারা বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তে অর্জিত বাংলা কারো দানে পাওয়া নয়। লক্ষ কোটি প্রাণের বিনিময়ে পেয়েছি এ দেশ। দেশটি ছোট্ট হলেও প্রতি বর্গকিলোমিটার অর্জিত হয়েছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তের বিনিময়ে। পাকিস্তানি হানাদারেরা ১৯৭১ সালে চালিয়েছিল নারকীয় ও শতাব্দীর ঘৃণ্যতম হত্যাযজ্ঞ। বাঙালির চূড়ান্ত বিজয়ের মাত্র দুই দিন আগে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর, আল শামসের সদস্যরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নিধনে মাঠে নামে।
তিনি যুদ্ধাপরাধী জামায়াত ও মৌলবাদীচক্রের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহŸান জানিয়েছেন। আসুন যুদ্ধাপরাধী জামায়াতচক্রের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সবাই ঐক্যবদ্ধ হই, এটাই হোক ২০২২ সালের শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে আমাদের অঙ্গীকার। বক্তারা আরও বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী চক্র বুঝতে পেরেছিল, তাদের পরাজয় অনিবার্য। তাই জাতিকে মেধাহীন করতে বরেণ্য ব্যক্তিদের বাসা এবং কর্মস্থল থেকে রাতের অন্ধকারে চোখ বেঁধে ধরে নিয়ে হত্যা করে। তারা দেশের নানা জায়গায় হত্যাযজ্ঞ চালালেও মূল হত্যাকান্ড ঘটায় রাজধানীর রায়ের বাজারের বধ্যভূমিতে। অসা¤প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক সমাজ গড়তে পারলেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ সার্থক হবে।