বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেছেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার গণআন্দোলন দমন করতে হাসিনা সরকার হত্যা, সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের পথ বেছে নিয়েছিল। জনতার শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ ও আওয়ামীলীগের সন্ত্রাসীদের গুলিতে সারা দেশে শত শত বিরোধীদলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থী নিহত ও আহত হয়েছেন। গ্রেপ্তারও করা হয়েছে হাজার হাজার নেতাকর্মীকে। আওয়ামীলীগের সন্ত্রাসীদের নামিয়ে দিয়ে সমগ্র দেশকে রণক্ষেত্রে পরিণত করেছিল। কিন্তু ছাত্র জনতার দুর্বার প্রতিরোধের মুখে আওয়ামীলীগের সেই স্বপ্ন তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছে। শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। শেখ হাসিনা পালানোর পরে ছাত্র জনতার এই বিজয়কে কালিমাযুক্ত করার ষড়যন্ত্র আবার শুরু হয়ে গেছে। তাই নৈরাজ্য সৃষ্টির অপচেষ্টাকারীদের সম্পর্কে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। অপতৎপরতাকারীদের সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া গেলে সেটি তাৎক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করার জন্য দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি শুক্রবার (৯ আগষ্ট ২০২৪) বাদে জুমা কাজীর দেউরী নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয় সংলগ্ন জামে মসজিদে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যে সমস্ত ছাত্র জনতা শহীদ হয়েছেন তাঁদের রুহের মাগফিরাত এবং আহতদের আশু সুস্থতা কামনায় চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
দোয়া মাহফিলে ছাত্র জনতার আন্দোলনে নিহত সবার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। পাশাপাশি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সারা দেশে অসুস্থ বিএনপি নেতাকর্মী ও আহত সাধারণ শিক্ষার্থীদের সুস্থতা কামনায় দোয়া করা হয়। দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন জামে মসজিদের খতিব মাওলানা এহসানুল হক।
এতে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক আলহাজ্ব এরশাদ উল্লাহ ও সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান।
এসময় মীর হেলাল বলেন, ইতোমধ্যে দুষ্কৃতিকারীরা পরিকল্পিত অরাজকতা সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছে। বাড়ি ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ডাকাতি, হামলা, ভাংচুর ও লুটতরাজে লিপ্ত হয়েছে। অনেককে ভয় দেখিয়ে বাড়ি ও এলাকা ছাড়া করার মতো সন্ত্রাসী কাজে লিপ্ত দুষ্কৃতিকারীদের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রেখে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। আইনকে যাতে কেউ নিজ হাতে তুলে নিতে না পারে সেজন্য গণতন্ত্রকামী মানুষ সার্বিক সহায়তা প্রদান করবেন। দেশকে পরিকল্পিতভাবে অস্থিতিশীল করার চক্রান্তকে প্রতিহত করতে হবে।
এরশাদ উল্লাহ বলেন, দীর্ঘ দিনের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয়েছে মুক্ত নিঃশ্বাস নেয়ার পরিবেশ। ছাত্র জনতার দুর্বার আন্দোলনে অভূতপূর্ব সাফল্যের ফলশ্রুতিতে দেশ আজ ফ্যাসিবাদ মুক্ত। সাধারণ ছাত্র ছাত্রীদের সাহস ও দৃঢ়তায় গণমানুষের বহু কাঙ্খিত প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা বাস্তবায়নের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তাই ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে অর্জিত বিজয়কে সংহত করে দেশের জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। শান্তির সমাজ গড়তে বিএনপি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
নাজিমুর রহমান বলেন, সুযোগ সন্ধানী অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করতে হবে। কেউ যাতে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে অপতৎপরতা চালাতে না পারে সে সম্পর্কে বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন সমূহের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীকে সাবধান থাকতে হবে। বিএনপির নাম ভাঙিয়ে অপকর্মকারীরা যাতে পার পেতে না পারে সেজন্য সার্বক্ষণিক পাহারা দেয়ার জন্য দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপি নেতা আলহাজ্ব এম এ আজিজ, এস কে খোদা তোতন, জয়নাল আবেদীন জিয়া, হারুন জামান, শফিকুর রহমান স্বপন, নাজিম উদ্দীন আহমেদ, ইকবাল চৌধুরী, এস এম সাইফুল আলম, কাজী বেলাল উদ্দিন, আর ইউ চৌধুরী শাহীন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল, জাহাঙ্গীর আলম দুলাল, মন্জুর আলম চৌধুরী মন্জু, মো. কামরুল ইসলাম, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান, সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু, ছাত্রদলের আহবায়ক সাইফুল আলম, সদস্য সচিব শরিফুল ইসলাম তুহিন, ওলামাদলের মাওলানা আবদুল হান্নান জিলানী, তাতীদলের আহবায়ক মনিরুজ্জামান টিটু, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব এড. আবদুল আজিজ প্রমূখ।