ফৌজদারহাটে জামায়াতের কর্মী সম্মেলন

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাটে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (১ নভেম্বর) বিকাল তিনটায় ফৌজদারহাট ঈদগাঁ মাঠে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন উত্তর জেলা জামায়াতের সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার সিদ্দিক চৌধুরী। ফৌজদারহাট ইউনিট সভাপতি রেজাউর রহমান রাজুর সভাপতিত্বে এতে বিশেষ বক্তা ছিলেন, উপজেলা জামায়াতের এসিসটেন্ট সেক্রেটারি কুতুব উদ্দিন শিবলী, অফিস সম্পাদক আবু হাফস মো. নোমান, সলিমপুর ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর মো. ফরহাদ হোসেন, সেক্রেটারি মো. মহিউদ্দিন চৌধুরী। সলিমপুর ইউনিয়ন জামায়াতের এসিসটেন্ট সেক্রেটারি মো. মাহবুবুর রহমান তারেকের সঞ্চালনায় এতে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সাবেক শিবির নেতা মুবিন উদ্দিন, উপজেলা শিবিরের সভাপতি আব্দুল মান্নান, এড, মহিউদ্দিন হাশেমী, আকবরশাহ থানা জামায়াতের আমীর আব্দুল হান্নান চৌধুরী, মুনতাসির মাহমুদ, আরাফাত সালেহীন রুবেল, আব্দুল কাদের, শাহ রুবেল, আলী আক্কাস প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আনোয়ার সিদ্দিক চৌধুরী বলেন, বিগত ১৭ বছর ধরে আমাদের দেশে এমন এক জালেম সরকার গেঁড়ে বসেছিল তারা মানুষকে কথা বলতে দেয়নি। স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশ করতে পারেনি। যত শিক্ষক আছেন তারা সঠিক শিক্ষা দিতে পারেননি, খতিবরা সঠিক খুতবা দিতে পারেননি, আলেমরা কোরআনের কথা মানুষকে বলতে পারেননি। কেউ সঠিক দাওয়াতি কাজ করতে পারেননি। অবৈধ ফ্যাসিস্ট আমাদের উপর চেপে বসেছিল। তারা গণতন্ত্র আর সংবিধানের দোহায় দিয়ে অবৈধভাবে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করেছিল। সংসদ থেকে শুরু টয়লেট পর্যন্ত তারা তাদের বাবার আদর্শ বাস্তবায়ন করেছিল। কেউ খেলাধূলা করতে গেলে, বাজার করতে গেলে, লেখাপড়া করতে গেলে, কেউ যদি টয়লেটে যেতে চাই সেখানেও তারা তাদের বাবার নাম দিয়েছিল। এতো নিকৃষ্ট ছিল স্বৈরাচার হাসিনা সরকার।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইআইইউসি’র এই ট্রাষ্টি সদস্য আরও বলেন, সবকটি ব্যাংক লুট করেছে। দেশ থেকে কোটি কোটি টাকা তারা পাচার করেছে। কানাডায় বেগম পাড়ায় তারা বাড়ি করেছে। তাদের একজন মন্ত্রীই বিদেশে ৫০০ বাড়ি করেছে। আজকে দ্রব্যমূল্যের যে উর্ধ্বগতি এটার জন্য তারাই দায়ী। পতিত দলের কয়েকজন মন্ত্রী-এমপি মিলে সিন্ডিকেট করে দরবেশ সেজে এদেশের চাষাদের জুলুম করেছে। ঢাকার কারওয়ান বাজারে সবজির বাজার থেকে তারা দৈনিক এক কোটি ৬০ লাখ টাকা মাশোয়ারা নিতো। আমাদের এই সীতাকুণ্ডে বিগত সময়ে আওয়ামী লীগের একেকজন ইউপি সদস্য, কাউন্সিলর ফুলে ফেঁপে ওঠেছিল। তারা অবৈধ টাকায় সবকিছু করেছে, মানুষের উপর শোষণ করেছে। মামলা-হামলা করেছে, জুলুম করেছে।

তিনি আরও বলেন, বিগত সরকার কুলাঙ্গারের মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থা পরিচালনা করেছে। নওফেল পড়াশোনা করেছে ভারতে। যেখানে ‘’র’’ এর এজেন্ট সেখানেই তার পড়াশোনা। ফলে এই শিক্ষার্থীদেরকে সে কলমের পরিবর্তে দিয়েছে অস্ত্র, পড়ালেখার পরিবর্তে দিয়েছে ইয়াবা, চরিত্রের পরিবর্তে দিয়েছে তার চরিত্র-নৈতিকতা ধ্বংস করে দিয়েছে। সংস্কৃতির নামে ভারত থেকে অপসংস্কৃতি আদানি করে আমাদের সংস্কৃতি ধ্বংস করে দিয়েছে। যে কারণে যুব সমাজ মুরুব্বীদেরকে দেখলে সালাম দিতো না। আদাব করতো না।

এজন্য তারা উলঙ্গপনা, বেহায়াপনা ও অপসংস্কৃতির সাথে সম্পৃক্ত ছিল। ইয়াবা-গাজায় আসক্ত হয়ে পড়েছিল যুবসমাজ। এসবের জন্য দায়ী ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার।

তিনি আরও বলেন, যেই আওয়ামী লীগ ১ আগস্ট জামায়াতকে নিষিদ্ধ করেছে সেখানে সেই আওয়ামী লীগকে জনগণ নিষিদ্ধ করে দিয়ে দেশ থেকে বিদায় করে দিয়েছে। আপনাদের আর জনসম্মুখে আসা উচিত হবেনা। যেভাবে এদেশের ছাত্র-জনতা আপনাদের খেদিয়েছে, দেশ থেকে বিতাড়িত করে, উৎখাত করে ভারতে নিক্ষেপ করেছে। সেই মুখ নিয়ে আর কখনও জনগণের সামনে আসা উচিত হবে না। নাম নিলেও ৬ মাসের জেল হবে। জনগণ আপনাদেরকে ক্ষমা করবে না।

এসময় তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, প্রতিটি ঘরে ঘরে আমরা ইসলামের দাওয়াত পৌঁছাতে হবে। সময় এসেছে আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠা করার। আমরা প্রথমে আমাদের নিজকে বাঁচাব, ঘরকে বাঁচাব, আমার এলাকাকে বাঁচাব। এজন্য সকলকে ইসলামের ছায়াতলে আনতে, রাসূলের আদর্শ ও কোরআানের আইনকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য কাজ করতে হবে। এসব করতে গিয়ে আমরাদেরকে পরীক্ষার মুখে পড়তে হবে এবং ঈমানের সেই পরীক্ষায় পাশ হতে হবে। আগামী নির্বাচনে আমাদেরকে ইসলামের জন্য কাজ করতে হবে। আর কোন রাতের ভোট হতে দেওয়া যাবে না। জনপ্রতিনিধি হিসেবে সৎ, যোগ্য, দেশপ্রেমিক আল্লাহভীরু মানুষ চাই আমরা।