মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে উপজেলার মৌসুমের শেষ সময়েও নদীতে পর্যাপ্ত পানি না পাওয়ায় প্রায় বোরো আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। লাঘাটা নদীর উজানে আলীনগর ইউনিয়নের চিতলীয়া এলাকায় ক্রসবাঁধ দিয়ে অন্যত্র পানি নেয়ায় নিন্মাঞ্চলে পাওয়া যাচ্ছে না পানি। ফলে শমশেরনগর ও পতনউষার ইউনিয়নের পাঁচ গ্রামের ৬শ’ হেক্টর জমিতে প্রায় পাঁচশ’ কৃষক বোরো চাষাবাদ করতে না পারায় হতাশ হয়ে পড়ছেন। জানা যায়, বোরো মৌসুমের শেষ সময়ে শমশেরনগর কেছুলুটি, ভাদাইর দেউল, সতিঝির গ্রাম, মরাজানের পার, মুন্সীবাজার রামপুর এবং পতনউষার ধূপাটিলা গ্রামে বিস্তীর্ণ জমি খাঁ খাঁ করছে। অন্যান্য বছরের এই সময়ে কৃষকরা চারা রোপন করলেও এবছর এখনও জমিতে পানির দেখা নেই। বিচ্ছিন্নভাবে কিছু স্থানে সেলু মেশিনের মাধ্যমে নদী থেকে সেচ দিয়ে কৃষকরা চাষবাস করছেন। সতিঝিরগ্রামে লাঘাটা নদীর সুইচগেট আটকানোর পরও পর্যাপ্ত পানি পাওয়া যাচ্ছে না। এতে জমি চাষের জন্য তৈরি করাও সম্ভব হচ্ছে না। অনেকের তৈরি বীজতলাও বিনষ্ট হতে চলেছে। ফলে এই ছয় গ্রামের প্রায় পাঁচ থেকে সাতশ’ একর বোরো জমি অনাবাদি রয়েছে। অধিকাংশ কৃষকরা জমি তৈরি করতে না পারায় তারা হতাশ হয়ে পড়ছেন। কয়েক জন কৃষকের সাথে কথা বললে জানায়, ধূপাটিলা গ্রামের মানিক মিয়া, আক্তার মিয়া, রামপুর গ্রামের মো. শাহাজানসহ কৃষকরা বলেন, অন্যান্য বছরের এই সময়ে জমিতে চারা রোপন করে ফেলতাম। এবছর পানি না থাকায় জমিও তৈরি করা যাচ্ছে না। রোপনের সময়টুকুও চলে হচ্ছে। জমিতে ধানের সবগুলো চারাও নষ্ট হচ্ছে। পানি পাওয়া যাবে কি না তা নিয়ে চিন্তায় দিন কাটছে। তবে মৌসুম চলে যাওয়ার সময় হলেও কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারাও এসব বিষয় নিয়ে কেউ মাথা ঘামাচ্ছেনা না বলে তারা অভিযোগ তুলেছেন। সমাজকর্মী ও কৃষক দুরুদ আলী, লাঘাটাছড়া পাবসস লি: এর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, লাঘাটা নদীর সতিঝিরগ্রামে সুইসগেট আটকানোর একমাস হয়ে গেলেও চাহিদা অনুযায়ী পানি পাওয়া যাচ্ছে না। উজানে চিতলীয়া এলাকায় ক্রস বাঁধ দিয়ে পানি অন্যত্র সরিয়ে নেয়ায় চাষাবাদ উপযোগী পানির সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে না। তারা আরও বলেন, প্রায় ৫শ’ হেক্টর এলাকায় চাষাবাদ সম্ভব হচ্ছে না বিষয়ে দু’দফা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে। তারপরও পানির কোন ব্যবস্থা হচ্ছে না। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জনি খাঁন বলেন, উজানের বাঁধের বিষয়টি তদন্তক্রমে পানির ব্যবস্থা করা হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন, নদীতে পানি সমস্যার বিষয়টি প্রথম শুনলাম। কৃষি কর্মকর্তার সাথে আলোচনা করে কৃষকদের চাষাবাদের ব্যবস্থা করা হবে। খুব দ্রুত এর সমাধান করার আশ্বাস প্রদান করেন।