
মাহমুদা নাঈমা; জাককানইবি প্রতিনিধি:
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়) এনভায়রমেন্টাল সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়রিং বিভাগসহ ৬টি বিভাগের শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে ‘Exploring the Blue Earth: Marine Geohazards, Carbon Dynamics & Observation Technologies’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০৪ ডিসেম্বর) সকালে পুরনো প্রশাসনিক ভবনের কনফারেন্স কক্ষে আন্তর্জাতিক কর্মশালার উদ্বোধনীপর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
এসময় প্রফেসর ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “সমুদ্র পৃথিবীর ৭০ শতাংশেরও বেশি অংশ জুড়ে রয়েছে এবং তা আমাদের জীবনের জন্য অত্যন্তগুরুত্বপূর্ণ। সামুদ্রিক ভূ-ঝুঁকি, যেমন ভূমিকম্প ও ভূমিধস, উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষের জন্য গুরুতর হুমকি সৃষ্টি করে। বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে প্রায় ৩ কোটি ৫০ লাখ মানুষের বসবাস। এর পাশাপাশি দূষণ ও বর্জ্য সমুদ্রগামী হওয়ার প্রবণতা পরিবেশগত ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষিত রাখতে আগাম সতর্কীকরণ ব্যবস্থা শক্তিশালী করা এবং এসব ঝুঁকি সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক উপলব্ধি আরও উন্নত করা অত্যন্ত জরুরি।”
তিনি আরও বলেন,”বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশে দ্রুত নগরায়ণ জলবায়ু সম্পর্কিত সমস্যার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। সমুদ্র পৃথিবীর জলবায়ু নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, কারণ এটি বিপুল পরিমাণ কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে। টেকসই জলবায়ু পূর্বাভাস এবং কার্যকর জলবায়ু উদ্যোগের জন্য এসব জ্ঞানকে এগিয়ে নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর টেকসই উন্নয়নের জন্য আমাদের অবশ্যই সমুদ্রের কার্বন গতিশীলতা নিয়ে গবেষণায় বিনিয়োগ করতে হবে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, চীনের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশের সঙ্গে যৌথ গবেষণা মূল্যবান ফলাফল এনে দেবে এবং আমাদের বৈজ্ঞানিক সক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করবে। আমরা যেসব চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করছি, সেগুলো কোনো একটি দেশের বিষয় নয়। এগুলো মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, ডেটা বিনিময় এবং চীনসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে শক্তিশালী অংশীদারিত্ব অত্যন্ত প্রয়োজন। আমি আশা করি, এই কর্মশালা আমাদের পৃথিবীকে সুরক্ষিত রাখার জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
উক্ত কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মো. মিজানুর রহমান। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. এ এইচ এম কামাল।উদ্বোধনীপর্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. জয়নুল আবেদীন সিদ্দিকী একং চীনের ফার্স্ট ইন্সটিটিউট অব ওশানোগ্রাফী (এফআইও) এর বিজ্ঞানী ড. জিন শান। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাশুরেন্স সেল (আইকিউএসি) আয়োজিত কর্মশালার উদ্বোধনীপর্বে সভাপতি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আইকিউএসি-এর পরিচালক প্রফেসর ড. মো. সাহাবউদ্দিন।
আন্তর্জাতিক এই কর্মশালায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইমদাদুল হুদা, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. বখতিয়ার উদ্দিন, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. সাখাওয়াত হোসেন সরকার এবং চারুকলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মুহাম্মদ এমদাদুর রাশেদ (রাশেদ-সুখন)। রিসোর্স পার্সন (সম্পদ ব্যক্তি) হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চীনের ফার্স্ট ইন্সটিটিউট অব ওশানোগ্রাফী (এফআইও) এর বিজ্ঞানী ড. জিন শান, ড. ইয়োংগুই ইউ, ড. শুমিন জিয়াং এবং জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রমেন্টাল সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়রিং বিভাগের প্রফেসর ড. আশরাফ আলী সিদ্দিকী ও প্রভাষক মো. হাবিবুর রহমান হাবিব।
প্রশিক্ষকণ কর্মশালার উদ্বোধনী পর্ব সঞ্চালনা করেন ইন্সটিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাশুরেন্স সেল (আইকিউএসি)-এর অতিরিক্ত পরিচালক প্রফেসর ড. তুষার কান্তি সাহা। এসময় বিভিন্ন অনুষদীয় ডিন, বিভাগীয় প্রধানসহ শিক্ষক এবং এনভায়রমেন্টাল সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়রিং বিভাগ, ফোকলোর বিভাগ, লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিদ্যা বিভাগ, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক এস এম হাফিজুর রহমান কর্তৃক স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উপরোক্ত তথ্যগুলো জানা যায়।












