অন্তঃসত্ত্বা জা আর শ্বাশুড়িকে পিটিয়ে আহত করেছে পুত্রবধূ ও স্বজনরা

পেকুয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি:

 

কক্সবাজারের পেকুয়ায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে অসুস্থ শ্বাশুড়ি ও অন্তঃসত্ত্বা ছোট জাকে মারধর করে গুরুতর আহত করেছে পুত্রবধূ ও তার স্বজনরা। দুই দফায় ঘটে যাওয়া এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ এবং আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে পেকুয়া সদর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মুরার পাড়া এলাকায়।

 

স্থানীয় সূত্র ও অভিযোগে জানা যায়, গত ১৪ নভেম্বর সকালে মৃত আবুল হাসেমের স্ত্রী রোকেয়া বেগম এর সঙ্গে তার পুত্রবধূ তাসমিন সোলতানা তানজিনা এর কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তানজিনা শ্বাশুড়িকে কিল-ঘুষি ও লাথি মেরে আহত করে। পরে তাকে পেকুয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এদিকে মাকে মারধরের ঘটনাটি জানতে পেরে সৌদি প্রবাসী ছেলে হাবিবুর রহমান তার স্ত্রীর বড় বোন নিলুফা আক্তার মুন্নিকে ফোন করে মাকে দেখভাল করতে হাসপাতালে পাঠান। চিকিৎসা শেষে তারা বাড়িতে ফেরেন।

 

পরদিন ১৫ নভেম্বর পুত্রবধূ তানজিনা তার পিতা মোহাম্মদ গোসাইন, মা মনোয়ারা বেগম এবং বড় বোনের স্বামী আব্দু রহমানকে বাড়িতে ডেকে আনেন। এরপর আবারও শ্বাশুড়ির সঙ্গে বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হলে তানজিনা ও তার স্বজনরা মিলে রোকেয়া বেগমকে বেধড়ক মারধর করে।শ্বাশুড়িকে উদ্ধার করতে এগিয়ে গেলে ছোট পুত্রবধূ নিসরাত সোলতানা নিসু (২০) এবং তার বড় বোন নিলুফা আক্তার মুন্নিকেও মারধর করা হয়। তাদেরকে ঘর থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

 

প্রথম ঘটনার পর ১৪ নভেম্বর রোকেয়া বেগম বাদী হয়ে পেকুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দেন, যেখানে পুত্রবধূসহ পাঁচজনকে বিবাদী করা হয়েছে। দ্বিতীয় ঘটনায় ২০ নভেম্বর চকরিয়া নিলুফা আক্তার মুন্নি বাদী হয়ে চকরিয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চারজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। আদালত বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য পেকুয়া থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।পুলিশ দুই দফায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

আহত রোকেয়া বেগম (৫০) বলেন, আমার দুই ছেলে দেশের বাইরে থাকে। বড় ছেলে মালয়েশিয়ায়, ছোট ছেলে সৌদিতে। ছোট ছেলের বিয়ে হয়েছে তিন মাস আগে। পুত্রবধূ তানজিনা তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমাকে মারধর করেছে। পরে তার স্বজনদের এনে আবারও মারধর করেছে। ছেলের নির্দেশে আমাকে নিয়মিত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে।

 

মামলার বাদী নিলুফা আক্তার মুন্নি বলেন, ছোট বোনের শ্বাশুড়িকে মারধর করলে আমি হাসপাতালে দেখতে যাই। পরে তাকে নিয়ে বাড়িতে যাই। বাড়িতে তাদের দেখভাল করতে গিয়ে আমাকে ও আমার বোন নিসুকে কয়েক দফা মারধর করা হয়েছে। এমনকি আমার ৬০ হাজার টাকা, স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং ঘর থেকে বের করে দিয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। সারা রাত উঠোনে থাকতে হয়েছে। এখনো আমাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয়রা জানায়, মাত্র তিন মাস আগে ছোট বোন নিসুর বিয়ে হয়েছে। এর মধ্যে এমন নির্যাতনের ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

 

পেকুয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ও তদন্ত কর্মকর্তা উগ্যজা এর কাছে জানতে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া যায়নি।