স্বপ্ন একদিন ইঞ্জিনিয়ার হবো

মাসুদ পারভেজ, রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : পা দিয়ে লিখেই পড়াশোনা করে স্বপ্ন একদিন ইঞ্জিনিয়ার হবে। বলছিলাম বগবান্দা ব্যাপাড়ী পাড়া গ্রামের আলমাছ আলীর ছেলে প্রতিবন্ধী ৭ম শ্রেণীর ছাত্র দুখু মিয়া (১৩) এর কথা। ইচ্ছা শক্তির মাধ্যমে পড়াশোনা করে ইঞ্জিনিয়ার হয়ে গ্রামের মানুষ কে আরো সম্মানিত করতে চায় ৭ম শ্রেণীর এই শিক্ষার্থী। গত কয়েকদিন থেকে প্রতিবন্ধী দুখু মিয়া পা দিয়ে লেখা লেখি ও
পড়াশোনা নিয়ে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেট্রনিক্স মিডিয়ায় খবর প্রকাশ হলে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের নজরে আসে। এমতাবস্থায় গত বুধবার বিকালের দিকে উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, স্থানীয় মেম্বার, উপজেলা সমাজসেবা দপ্তরের প্রতিনিধি, বগবান্দা স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সাংবাদিক দুখু মিয়ার বাড়িতে যান। এ সময় দুখুর পা দিয়ে লেখা স্বচোখে দেখে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল্ল্যাহ্ধসঢ়; ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল ইমরান।

দুখুর পড়ালেখা চালিয়ে যেতে সার্বিক খরচের দায়িত্ব নেন উপজেলা প্রশাসন। তার পায়ের লেখা দেখে উপস্থিত সকলেই আশ্চার্য্য হন। ইতোমধ্যে উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে দুখুর নামে শিক্ষা উপবৃত্তি ও প্রতিবন্ধি ভাতার নাম দেওয়া হয়েছে এবং সে এই সুবিধা ভোগ করছেন বলেও জানা গেছে। শারীরিক প্রতিবন্ধী মেধাবী ছাত্র মো. দুখু মিয়া বর্তমান বগবান্দা দ্বিমুখী উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীতে পড়ালেখা করছে। পরিবারের সকলের সহযোগিতায় এ পর্যন্ত লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে। তার আশা অনেক পড়ালেখা করে মানুষের মত মানুষ হওয়া তার স্বপ্ন। দুখু মিয়া কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের বকবান্দা গ্রামের খেটে খাওয়া আলমাছ আলীর প্রথম ছেলে। তার মা গুলেনুর বেগম। দুখুর ৩ ভাই ১ বোন। ছোট ভাই আরিফুল ইসলাম, আল আমিন ও ছোট বোন আলফুলি খাতুন।

বকবান্দা বহুমুখী উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহমান বিএসসি বলেন, দুখু আমার স্কুলে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই তার পড়ালেখার দিকে খুবই আগ্রহ রয়েছে। সে প্রতিদিন অনেক কষ্ট করে অন্যের সহযোগিতায় স্কুলে আসে। আমি সম্পন্ন বিনা খরচে তার পড়ালেখার দায়িত্ব নিয়েছি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল ইমরান জানান, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুখুর লেখাপড়ার সমস্থ খরচ দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে তার জন্য শিক্ষা উপবৃত্তি, প্রতিবন্ধি ভাতা, শিক্ষা উপকরণ, খাদ্য সামগ্রী ও হুইল চেয়ার দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও তার পরিবারের খাদ্য নিশ্চিত করতে ভিজিডি কার্ড করে দেওয়া হবে এবং সরকারি সকল সুবিধা সে পাবে।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল্লাহ বলেন, প্রতিবন্ধি দুখুর প্রতিভা, আমি ইঞ্জিনিয়া হতে চাই, আমি তার জন্য দোয়া করি, সে যেন ইঞ্জিনিয়ার হয়। তাছাড়া পড়াশোনা করতে  সার্বিক সহযোগিতা করবো আমার উপজেলা পরিষদ থেকে।