সুবর্ণচরে নদী ভাঙ্গনে বিলীন হচ্ছে ঘর-বাড়ি “আঙ্গোরে নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে বাঁচান”

মোঃ ইমাম উদ্দিন সুমন, নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ  নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার  আমিন বাজার থেকে জনতা ঘাট পর্যন্ত মেঘনা নদীর তীব্র ভাঙ্গনে গত ১২ বছরে  ৩০ হাজার পরিবারের ঘর-বাড়ি, ভিটা-মাটি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,  মসজিদ-মাদ্রাসা, হাট-বাজারসহ কৃষি জমি বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙ্গন কবলে  সর্বোচ্চ হারিয়ে বর্তমানে মানবেতর জীবনযাপন করছেন অসহায় পরিবারের  সদস্যরা।

বৃহস্পতিবার (২ জুন) বিকালে উপজেলার  সোলেমান বাজারের সৈয়দপুর এলাকায়  ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শনে যান সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও  জেলা আওয়ামী লীগের আহŸায়ক অধ্যক্ষ খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম। এসময় নদী  ভাঙ্গনের শিকার অসহায় মানুষগুলো আকুতি জানিয়ে বলেন, ‘আঙ্গোরে নদী  ভাঙ্গনের হাত থেকে বাঁচান, নদীয়ে দুই-তিন বার করি আঙ্গো ঘর-বাড়ি ভাঙ্গি
লই গেছে। এখন আবার ভাঙ্গলে আমরা কোনাই যামু, কার কাছে যামু? আঙ্গো  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারে কয় (বলে) পাথরের বøক ও জিও ব্যাগ দিই নদীর  ভাঙ্গন বন্ধ করেন।’   এসময় উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. বাহার  চৌধুরী, চরক্লার্ক ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. সাহাব উদ্দিন,  ইউপি সদস্য মাহে আলম, সামছুল আলম বাহারসহ ভাঙ্গন কবলিত এলাকার শত শত  মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

স্থানীয় বাসিন্দা নুর নবী, মো.কবির, সামছুন নাহার, মো. রফিক অভিযোগ করে  বলেন, ভাঙ্গন রোধে বিগত কয়েক বছর পর্যন্ত নানা প্রতিশ্রæতি পেলেও কার্যতmকোন পদক্ষেপ তারা পাননি। এমপি-মন্ত্রীর নিয়মিত প্রতিশ্রæতি দিনদিন হতাশ  করে দিচ্ছে তাদের। তারা জানান, নদী ভাঙ্গনের কারণে আশ্রয়ের তেমন ব্যবস্থা  করা হচ্ছে না। দ্রæত এ ভাঙন বন্ধ করতে না পারলে ভবিষ্যতে সুবর্ণচরের  বিস্তীর্ণ এলাকা ও স্বর্ণদ্বীপ নদী গর্ভে হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

চরক্লার্ক ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. সাহাব উদ্দিন বলেন, ২০১০  সাল থেকে মেঘনা নদীর এই ভাঙ্গন শুরু হয়। গত ১২ বছরে প্রায় ৮  কিলোমিটার  এলাকা ভাঙ্গনের শিকার হয়ে প্রায় ৩০ হাজার পরিবারের ঘর-বাড়ি নদী গর্ভে  বিলীন হয়ে গেছে। এখনো হাজার হাজার পরিবার ভাঙ্গন আতঙ্কে দিনাতিপাত  করছে।অনতিবিলম্বে নদী ভাঙ্গনরোধে ব্যবস্থা না নিলে সুবর্ণচর এবং   স্বর্ণদ্বীপ নদী গর্ভে হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের আহŸায়ক অধ্যক্ষ খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম বলেন, এখানে বিস্তীর্ণ এলাকা নদী ভাঙ্গনের কারণে  হাজার হাজার মানুষ ভিটে-মাটি হারিয়ে সর্বোচ্চ হারা হয়ে গেছ।নদী  ভাঙ্গারোধে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সহানুভূতিশীল। আমি পানি উন্নয়ন   বোর্ডের সাথে কথা বলেছি, তারা বলেছেন এখানে নদী ভাঙ্গনরোধে ব্যবস্থা  নিবেন। কিন্তু এখনো কোন ব্যবস্থা নেননি। এ অবস্থায় এখানে নদী যদি শাসন   করা না হয়,  তাহলে সহায়-সম্বলহীন মানুষের সংখ্যা আরো বাড়বে। বর্তমান   সরকার উন্নয়নের সরকার। মাননীয় সরকার প্রধান সুদৃষ্টি দিয়ে পাথর বøক ও জিও
ব্যাগ পেলে নদী শাসনের ব্যবস্থা করলে হাজার হাজার অসহায় মানুষ উপকৃত হবে।  তাই অবিলম্বে নদী ভাঙ্গনরোধে ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছি।   মোঃ ইমাম উদ্দিন সুমন, নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ