
প্রেস বিজ্ঞপ্তিঃ চকবাজার ওয়ার্ডের চকবাজার, কাপাসগোলা, বাদুরতলা ও পূর্বষোলশহর ওয়ার্ডের বহদ্দার হাট পর্যন্ত পায়ে হটে ভারী বর্ষণে জলমগ্ন এলাকা পরিদর্শন ও ক্ষতিগ্রস্থ’ ২০০০ হাজার পরিবারের মাঝে খাদ্য বিতরণ করলেন মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। খাদ্য বিতরণকালে মেয়র ক্ষতিগ্রস্থ’দের উদ্দেশ্যে বলেন, আষাঢ়ের প্রথম দিন থেকে সারা বাংলাদেশে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের কারণে বন্যা ও জলাবদ্ধতায় লাখো মানুষ পানি বন্দি হয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে দুঃসহ জীবন যাপন করছেন। এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে বাটালি হিলস্থ অস্থায়ী নগর ভবনের সম্মেলন কক্ষে দুর্যোগ নিয়ন্ত্রন কক্ষ খোলা হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ দুর্যোগপূর্ণ এলাকা হলেও দীর্ঘসময় ধরে দুর্যোগ মোকাবেলার সাহস ও সক্ষমতা রয়েছে আমাদের। বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মৌসুম ছাড়াও প্রাকৃতিক দুর্যোগের আবির্ভাব হচ্ছে। জলাবদ্ধতা চট্টগ্রাম মহানগরীর বড় একটা সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগর এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনে সরকার মেগাপ্রকল্পের মাধ্যমে বিগত কয়েক বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছে। সিডিএ এ মেগা প্রকল্পের জন্য খালে বাঁধ দিয়েছিল, যেগুলোর বেশিরভাগই অপসারণ করা হয়েছে। কিন্তু কিছু নিম্নাঞ্চলে এখনো কয়েকটি বাধ থেকে যাওয়ায় দ্রুততার সাথে পানি অপসারণ হচ্ছে না। ফলে বেশ কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে এবং মানুষের অবর্ণনীয় কষ্ট হচ্ছে।
তিনি বলেন, কাজ শতভাগ শেষ না হওয়া পর্যন্ত জলাবদ্ধতা সমস্যা থাকবে। তবে মেগা প্রকল্পের আওতার বাহিরে যে সমস্ত খাল ও নালা রয়েছে সেই সব স্থানে পরিস্কার রাখার কাজ সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মীদের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হচ্ছে। তিনি বলেন পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মীরা আজ পূর্ব বাকলিয়া, গোসাইল ডাঙ্গা, দক্ষিণ পতেঙ্গা, জালালাবাদ ও পাথরঘাটা ওয়ার্ডে বৃষ্টির কারণে নালা ও খাল দিয়ে স্বাভাবিক পানি চলাচলের বাধা সৃষ্টি হওয়ায় সেখানে স্কেভেটর দিয়ে পরিস্কার করে দিয়েছে। এ ছাড়াও পূর্ব-বাকলিয়া ওয়ার্ডের গুপ্তখালের ব্রীজের কাজের কারণে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্থ হয়েছিল, যা আমার নির্দেশে আজ সকালে পরিস্কার করে পানির প্রবাহ সুনিশ্চিত করা হয়েছে।
মেয়র বলেন, পাহাড় কাটা বন্ধ না হলে পলি মাটি গিয়ে নালা ও খাল ভারাট হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। বিশ্বের অনেক বড় বড় শহরে পানি উঠে, আবার তা সরেও যায়। আমরাও তেমনটা চাই। বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রের উচ্চতা বেড়েছে যার কারণে উপকুলীয় শহর হিসেবে জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ জোয়ারের পানি, এটাকেও ব্যাবস্থাপনায় আনতে হবে। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম নগরীতে এক সময় ৭৬টি খাল ছিল এখন আছে ৫৭টি। অনেক খাল ভুমিদস্যুরা দখল করে নিয়েছে। সেই খালগুলো উদ্ধার করা দরকার। তিনি জলাবদ্ধতার মেগাপ্রকল্প বহির্ভূত ২১ টি খাল ভূমিদস্যুদের কবল থেকে উদ্ধার করে খনন করার প্রকল্প বান্তবায়নের লক্ষ্যে মন্ত্রণালয়ের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন বলে উল্লেখ করেন। তিনি জলাবদ্ধতায় ও পাহাড় ধ্বসে ভোগান্তিদের যে কোন সমস্যা নিয়ে চসিকের বাটালি হিলস্থ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করার জন্য নগরবাসির প্রতি আহবান জানান।
মেয়র বলেন, জলমগ্ন এলাকা জালালাবাদ, চাঁন্দগাও, পূর্বষোলশহর, শুলকবহর, লালখান বাজার, উত্তর আগ্রাবাদ ও দক্ষিণ আগ্রাবাদ ওয়ার্ডে কাউন্সিলদের মাধ্যমে রান্না করা ও শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর নূর-মোস্তাফা টিনু, আবদুস সালাম মাসুম, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাসেম, স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা আমিনুল হক রঞ্জু, তৌহিদুল আলম, ওয়ার্ড সচিব তারেক সুলতান প্রমুখ।