কখন যাকাত ফরজ, কখন যাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ

যার কাছে নিসাব পরিমান সম্পদ হিজরি ১ বছর পরিমাণে থাকবে তাকেই যাকাত দিতে হবে। যার কাছে নিসাব পরিমান সম্পদ আছে কিন্তু সে যাকাত দিলো না। তাহলে তার সম্পূর্ণ সম্পত্তি হারামের সম্পদে পরিণত হবে এবং সে মুসলিম হিসেবে গণ্য হবে না। কারণ, এটি মহান আল্লাহর অবশ্যপালনীয় বিধান।

পবিত্র কোরাআনে আল্লাহ বলেন, “আর যারা সোনা ও রূপা পুঞ্জীভূত করে রাখে, আর তা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করে না, তুমি তাদের বেদনাদায়ক আযাবের সুসংবাদ দাও। যেদিন জাহান্নামের আগুনে তা গরম করা হবে, অতঃপর তা দ্বারা তাদের কপালে, পার্শ্বে এবং পিঠে সেঁক দেওয়া হবে। (আর বলা হবে) ‘এটা তা-ই যা তোমরা নিজদের জন্য জমা করে রেখেছিলে। সুতরাং তোমরা যা জমা করেছিলে তার স্বাদ উপভোগ কর’’। [সূরা আত-তাওবাহ: ৯, আয়াত: ৩৫, ৩৬]।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “সোনা রূপার মালিক যদি এর যাকাত আদায় না করে, তবে কিয়ামতের দিন এ ধন সম্পদকে আগুনের পাত বানানো হবে এবং জাহান্নামের আগুনে তা উত্তপ্ত করা হবে। তারপর এগুলো দ্বারা তার পার্শ্ব, ললাট ও পিঠে দাগ দেওয়া হবে। যখনই ঠাণ্ডা হবে পূণরায় তা উত্তপ্ত করা হবে -এমন দিন যেদিনের পরিমাণ দুনিয়ার পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান হবে। এভাবে বান্দার পরিণতি জান্নাত বা জাহান্নাম নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত শাস্তি চলতে থাকবে”।[সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৯৮৭]।

যাকাতের নিসাব পরিমাণ সম্পদ কোনো মুসলমানের নিকট যদি চাঁদের হিসাবে পূর্ণ এক হিজরী বছর অর্থাৎ ৩৫৪ দিন সময়কাল ধরে অতিক্রম করে পূর্ণ মালিকানা ভূক্ত থাকে তাহলে ঐ মুসলমানের জন্য মোট যাকাত যোগ্য সম্পদের থেকে চল্লিশ ভাগের এক ভাগ সম্পদ অর্থাৎ ২.৫% (আড়াই শতাংশ) হারে যাকাত যোগ্য সম্পদের যাকাত দিতে হবে ।

সাড়ে সাত(৭.৫) তোলা সোনা অথবা সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) তোলা রূপা অথবা এর সমতুল্য সম্পদ অথবা এর সমতুল্য টাকা হলো যাকাতের নিসাবের পরিমাণ।

রূপার নিসাবে ১,৩৫,০০০/- (এক লক্ষ পয়ত্রিশ হাজার টাকা বা তদূর্ধ্ব টাকা থাকলে) টাকার যাকাত দেওয়া সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ এবং সোনার নিসাবে ১১,৩০,০০০/-(এগারো লক্ষ ত্রিশহাজার টাকা বা তদূর্ধ্ব থাকলে) টাকার যাকাত দেওয়া ফরজ।

যাকাত প্রতিবছর একবারই প্রদান করতে হয়। সাহাবায়ে কিরাম সাধারণত রমজান মাসেই যাকাত আদায় করতেন। তাই রমজান মাসে যাকাত আদায় করা উত্তম।

প্রতিবছর একই তারিখে ও একই সময় যাকাতের হিসাব করতে হবে। যেমন ২০ রমজান সন্ধ্যা ৬টা। এই সময়ের এক সেকেন্ড আগে যে সম্পদ আসবে, তা যাকাত হিসাবের অন্তর্ভুক্ত হবে। এই সময়ের এক সেকেন্ড পর যে সম্পদ আসবে, তা পরবর্তী বছরের হিসাবে যাবে।

 

লিখেছেন: এডভোকেট শাহাদাত হোসেন, সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি, সময়ের নিউজ