চুরির অভিযোগে শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে আহত করায় অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ

লালমনিরহাটঃ লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলায় ক্যারাম বোর্ডের গুটি চুরির অভিযোগ এনে তামজিদ ইসলাম (১৮) নামের এক কলেজ শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারধর করে আহত করার অভিযোগ উঠেছে। আহত শিক্ষার্থী তামজিদ স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সোমবার (৪ এপ্রিল) রাতে নির্যাতনের শিকার ওই শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে হাতীবান্ধা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। ভুক্তভূগী শিক্ষার্থীর কলেজের অফিস সহকারী ফরিদুল ইসলামকে প্রধান আসামী করে মোট তিনজন কে আসামী করা হয় এই অভিযোগ পত্রে। সোমবার বেলা ১২টার দিকে হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নের বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতাহার হোসেন কলেজে এ ঘটনাটি ঘটে। ভুক্তভোগী তামজিদ ওই কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। সে একই ইউনিয়নের মধ্য-গড্ডিমারী এলাকার আশরাফ আলীর (৫৫) ছেলে৷

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনের মতো সোমবার সকাল দশটার দিকে পড়াশোনার জন্য ওই কলেজে আসে তামজিদ। এ সময় ক্লাস না থাকার ফাঁকে ল্যাব রুমে বন্ধুদের সঙ্গে ক্যারাম বোর্ড খেলেছিলো সে৷ পরে ক্লাসের সময় হলে তামজিদ ও তার সহপাঠীরা তাদের রুমে চলে যায়। এ সময় ওই কলেজের অফিস সহকারী ফরিদুল ইসলাম শিক্ষার্থী তামজিদ ও তার সহপাঠী মারুফ হোসেনকে ক্যারাম বোর্ডের গুটি চুরির অপরাধে ল্যাব রুমে ডেকে নিয়ে যায়। তামজিদকে রুমের ভেতরে আটকে রেখে ল্যাব রুমের দরজা থেকে অপর শিক্ষার্থী মারুফ হোসেনকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেন অফিস সহকারী ফরিদুল। রুমের ভেতর প্রভাষক ছায়েদ আলী ও তবারক হোসেনের উপস্থিতিতে শিক্ষার্থী তানজিদকে বাঁশের লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি ভাবে পিটিয়ে জখম করে ওই অফিস সহকারী। এ সময় তামজিদ অমানবিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেয়ে চিৎকার করলে অন্যান্য শিক্ষার্থীরা এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।

অভিযোগ উঠেছে, তানজিদের আর্তনাত শুনে তাকে বাঁচাতে মারুফ হোসেন (১৮) ও সবুজ ইসলাম (১৮) নামে অপর দু’জন শিক্ষার্থী এগিয়ে এলে তাদেরকেও মারধর করে অফিস সহকারী ফরিদুল ও পিওন আবু সাঈদ। হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তারা প্রাথমিক ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে। এদিকে এ নির্যাতনের ঘটনায় ওই এলাকা জুড়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষার্থী তানজিদ বলেন, ফরিদুল স্যারকে অনেক বলেছি যে আমি ক্যারাম বোর্ডের গুটি চুরি করিনি। তারপরও স্যার কথা না শুনে ল্যাব রুমে নিয়ে গিয়ে বাঁশের লাঠি দিয়ে আমাকে মারধর করে। আমার চিৎকার শুনে বন্ধুরা এগিয়ে এলে তাদের সহযোগীতায় হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছি৷

তবে এ বিষয়ে অভিযুক্ত অফিস সহকারী ফরিদুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় কলেজে আমরা একটি মিটিংয়ে বসেছি। কলেজের উর্ধতন কর্মকর্তা আছে তারা এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন। হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এরশাদুল আলম অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।