সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে পাথররশ্রমিক আহত

পঞ্চগড় প্রতিনিধি : পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় বিএসএফের গুলিতে এক পাথর শ্রমিক গুলিবিদ্ধের  খবর পাওয়া গেছে। মহানন্দা নদীর মধ্যে পাথর তুলতে বিএসএফের গুলিবিদ্ধ মো: হুমায়ূন ফরিদের বাড়ি তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা ইউনিয়নের জায়গীর জোত গ্রামের পাথর শ্রমিক। তিনি ওই এলাকার তমিরুল ইসলামের ছেলে। ঘটনাটি ঘটেছে ওই ইউনিয়নের কদমতলা এলাকার বাংলাদেশ ভারত সীমান্তে ৭৩১ মেইন পিলারের ৭ আর সাব পিলারে কাছে।
বিজিবি ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, বুধবার ৮ জানুয়ারি সকালে স্থানীয় পাথর শ্রমিকদের সঙ্গে বাংলাদেশ ভারত সীমান্তের মহানন্দা নদীতে পাথর উত্তোলন করতে নদীতে নামেন হুমায়ূন ফরিদ। মহানন্দা নদীতে পাথর উত্তোলনের প্রস্তুতি নেওয়া মাত্রই বাংলাদেশ সীমান্তের নদীতে প্রবেশ করে ওই পাথর শ্রমিক। ওই সময়ে পায়ে গুলি করে পালিয়ে যান ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। এসময় গুলিটি ওই পাথর শ্রমিকের ডান পায়ে লেগে বাঁ পা দিয়ে বের হয়ে যায়। পরে স্থানীয়দের পাথর শ্রমিকদের সহায়তায় পরিবারের সদস্যরা উদ্ধার করে তেতুঁলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান গুরুত্বর হওয়ায় পরে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনার পরপরই প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ
বর্ডার গার্ড বিজিবি, বিএসএফকে পতাকা বৈঠকের আহব্বান জানায় বিজিবি। পরে বুধবার দুপুরে পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্টে ৭৩২ মেইন পিলারের ১ এস সাব পিলার এলাকায় ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক পর্যায়ের পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহফুজুল হক ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের ১৭৬ ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্ট এস এস শিরোহীসহ বিজিবি-বিএসএফের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় পাথর শ্রমিক তরিকুল ইসলাম (২৩) বলেন, আমি ফরিদসহ কয়েকজন মিলে দীর্ঘ ১৫ দিন পরে মহানন্দা নদীতে পাথর উত্তোলন করতে যাই। নদীতে নেমে পাথর উত্তোলনের কাজ শুরু করা মাত্রই বাংলাদেশের সীমান্তে ঢুকে বিএসএফের দুই সদস্য। এসময় তারা ফরিদের পায়ে গুলি করে পালিয়ে যায়। এতে আমরা ভীত হয়ে পড়ি। পরে ফরিদকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করি।
ফরিদের ফুফু রহিমা আক্তার (৪৫) বলেন, আমরা গরীব মানুষ। আমাদের এখানকার সবাই নদীতে পাথর তুলে জীবিকা চালায়। আজ (বুধবার) আমার ভাতিজার পায়ে গুলি লেগেছে। তার সংসার এখন কীভাবে চলবে।
বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের সদস্য জামিরুল ইসলাম বলেন, আমি সকালে শুনতে পাই এক পাথর শ্রমিককে গুলি করেছে বিএসএফ। পরে ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। আমি বর্তমানে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ফরিদের সঙ্গে রয়েছি। তার দুই পায়ের অবস্থা খুবই খারাপ। ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহফুজুল হক বলেন, আমি সংবাদ পাওয়া মাত্রই দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। পরে এ নিয়ে বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পতাকা বৈঠকে বিএসএফ দুঃখ প্রকাশ করেছে। এ ঘটনায় কোনো বিএসএফ কোন সদস্য জড়িত থাকলে তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন।