সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতি ও সংস্কৃতি বিষয়ক গবেষনাধর্মী সংগঠন সমাজ সমীক্ষা সংঘের আয়োজনে নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে গান, নাচ ও কবিতায় বর্ষাবরণ অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে বর্ষা বন্দনায় বিশিষ্ট কবি ও সাহ্যিতিক কামরুল হাসান বাদল জীর্ণ
পুরানোকে পিছনে ফেলে নতুনের জয়গান গ্রহণের আহবান জানান। সমাজ সমীক্ষা সংঘের সভাপতি কাজী মাহমুদ ইমাম বিলুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী পর্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমাজ সমীক্ষা সংঘের নির্বাহী পরিচালক কল্লোল দাশ। মঞ্চে অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সমাজ সমীক্ষা সংঘের নির্বাহী সভাপতি দেবাশীষ রায়, যুগ্ম নির্বাহী পরিচালক সাইফুদ্দিন আহমেদ মিনহাজ, বর্ষামঙ্গল প্রস্তুতি কমিটির যুগ্ম আহবায়ক মিটু কুমার শীল, সদস্য সচিব পার্থ প্রতিম বড়–য়া প্রমুখ। অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী পর্বের শেষে সমাজ সমীক্ষা সংঘের বর্ষামঙ্গল উপলক্ষ্যে প্রকাশিত সংকলন সমবীক্ষণ বর্ষামঙ্গল সংখ্যা উম্মোচন করেন বিশিষ্ট কবি ও সাহ্যিতিক কামরুল হাসান বাদল এবং সমবীক্ষণ এর সহ সম্পাদক সৌরভ চৌধুরী।
বর্ষা বন্দনায় কবি ও সাহ্যিতিক কামরুল হাসান বাদল বলেন, জীর্ণ পুরানোকে পিছনে ফেলে নব কুড়ির মত জেগে উঠতে হবে। তিনি বলেন, বর্ষা প্রেরণার ঋতু, বর্ষায় প্রকৃতি আমাদের ব্যর্থতার গøানি ভরা অতীত, হিংসা, হানাহানি ভুলে গিয়ে নতুনভাবে বাঁচার শিক্ষা দেয়। লোকসাহিত্যর আতুড়ঘর বর্ষা, নদীমাতৃক ও কৃষিপ্রধান এই দেশে বর্ষার অবসরে কৃষাণ-কৃষাণিরা রচনা করত বিভিন্ন লোক গল্প, গান, পুথিঁ ইত্যাদিও এবং এসব থেকে প্রেরণা নিত পরবর্তী কস্টকর এবং শ্রমসাধ্য কৃষিকাজের। তিনি বলেন, সেই কৃষি প্রধান সংস্কৃতি থেকে সরে এসে আমরা আমাদের অতীত ভুলে গেছি। আকাশ সংস্কৃতির আগ্রাসনে আমরা ভুলতে বসেছি আমাদের সমৃদ্ধ কৃস্টি ও সংস্কৃতিকে। বর্ষা বরণের স্থান দখল করেছে বিভিন্ন কর্পোরেট দিবস। অতীত ভুলেছি বলেই আজ প্রশ্ন উঠে বিভিন্ন ঋতুভিত্তিক দিবস পালন ধর্মীয়ভাবে স্বীকৃত কিনা ? তিনি বলেন, এমন হওয়ার কথা ছিল না। এই দেশ, এই জাতিকে নিজ স্বত্তা, আতœ পরিচয় এবং আগামীর সমূহ বিপদ থেকে রক্ষা পেতে শিকড়ের কাছে ফিরে যেতে হবে। তিনি নতুনের জয়গানের বলিয়ান হওয়ার আহবান জানান।
সংগীত শিল্পী বিটু শীল ও পূরবী বড়–য়া এর মনোম্ধুসঢ়;গ্ধকর বর্ষার পরিবেশনা হল ভর্তি দর্শক উপভোগ করেন। তারা একে একে বর্ষার গান, প্রকৃতি বন্দনা, রবীন্দ্রনাথ-শচিন দেববর্মন- ডিএল রায় সহ পঞ্চ কবির গান পরিবেশন করেন। প্রকৃতি-রোমান্টিকতা-বিরহ-আনন্দ-বাঙ্গালীর সুখ দুঃখের প্রতিচ্ছবি তুলে ধরেন গানের মূর্চ্ছনায়। অনুষ্ঠানের শুরুতে নৃত্য পরিবেশন করেন ওডিসি এন্ড টেগর ডান্স মুভমেন্টের শিল্পীবৃন্দ। নৃত্যশিল্পীবৃন্দ নৃত্যর তালে তালে মিলনায়তনের দর্শকদের মুগ্ধ করে রাখেন। মনোমুগ্ধকর দ্বৈত আবৃত্তি নিয়ে মঞ্চে আসেন আবৃত্তিশিল্পী মিলি চৌধুরী ও মুজাহিদুল ইসলাম।
কবিতায় বর্ষা আবাহন করেন আবৃত্তিশিল্পী প্রণব চৌধুরী। এরপর বর্ষার গান গেয়ে শোনান শিল্পী মিঠুন ঘোষ ও গানের দল বন্দর।