ফ্ল্যাট ভাড়ার ১ কোটি ৯৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগে চট্টগ্রামের এক কৃষক দল নেতা সদ্য ক্ষমতাচ্যূত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া’র ছোট ভাই বিদ্যুৎ বড়ুয়াসহ একটি ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানের দুই মালিক কে আসামি করে আদালতে মামলা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট চতুর্থ আদালত-এর বিচারক আবু বক্কর ছিদ্দিক মামলাটি আমলে নিয়ে অভিযোগটি তদন্ত করে ২০২৫ সালের ২১ জানুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী সিরাজুল ইসলাম। মামলাটির বাদি কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার এম সাইফুদ্দিন সৈয়দ।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন-চট্টগ্রাম ভিত্তিক নিপকো প্রপার্টিজ লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাউজানের বাসিন্দা মোহাম্মদ মহিউদ্দিন (৪৮), তার ছোট ভাই একই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান এইচএম জামাল উদ্দীন (৪৫) ছাড়াও আসামি করা হয়েছে আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ও চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-পরিচালক বিদ্যুৎ বড়ুয়া (৪৬) কে।
মামলার ফৌজদারি অভিযোগে বলা হয়, চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী মৌজায় বাদি সাইফুদ্দীন সৈয়দ তাঁর মালিকানাধীন একটি জায়গায় ৭ তলাবিশিষ্ট বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য নিপকো প্রপার্টিজ লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন। এরপর প্রতিষ্ঠানটি নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করার বিষয়টি বাদির নজরে এলে তিনি তাতে বাঁধা দেন।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আসামিরা তাঁদের ব্যবসায়িক সহযোগী বিদ্যুৎ বড়ুয়ার বড় ভাই সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়ুয়ার ভয় দেখিয়ে নানা হুমকি দেন।
অভিযোগে আরো বলা হয়, ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানটি চুক্তির শর্ত মতে কাজ না করায় চুক্তিপত্র বাতিল মর্মে ২০১৩ সালের ৩১ মার্চ বাদি একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠান ১ নম্বর আসামির বরাবরে। কিন্তু এরপরও আসামিরা গায়ের জোরে কাজ করে যেতে থাকে। ২০১৬ সালের ৩১ অক্টোবর বিল্ডিংয়ের নির্মাণকাজ শেষ করে ৬টি ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দিতে না পারায় ফ্ল্যাটগুলোর মোট ৭৮ মাসের ভাড়া বাবদ ১ কোটি ৯৫ হাজার টাকা প্রাপ্য দাবি করে আরও একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠান ২০২৩ সালের ৩ মে।
এতে আসামিরা ক্ষিপ্ত হয়ে বাদিকে প্রাণে মেরে ফেলবে বলে ভয়ভীতি দেখান। এর জের ধরে বাদি সাইফুদ্দীন সৈয়দ আসামিদের বিরুদ্ধে ওই বছরের ১৫ জুন খুলশী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি দাখিল করেন। পরে বাদি ব্যাংক ঋণ নিয়ে তার ভাগে পাওয়া ৬টি ফ্ল্যাটের নির্মাণকাজ সম্পন্ন করেন।
অভিযোগে বলা হয়, চলতি বছরের ২০ জুলাই বাদি সাইফুদ্দীন ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানটির অফিসে গেলে সেখানে তিনি মহিউদ্দিন ও এইচএম জামাল উদ্দীনের সঙ্গে বিদ্যুৎ বড়ুয়াকেও দেখতে পান।
এ প্রসঙ্গে বাদীপক্ষের আইনজীবী সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ফ্ল্যাট ভাড়ার ১ কোটি ৯৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বিদ্যুৎ বড়ুয়াসহ একটি ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানের দুই মালিকের বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়েছে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।’