
তেতুলিয়া প্রতিনিধি: পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় পুলিশে চাকরি দেওয়ার নামে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার এমন অভিযোগ উঠেছে হাইওয়ে পুলিশের এক গাড়ি চালক কনস্টেবল জুয়েল খন্দকারের বিরুদ্ধে। এব্যাপারে শনিবার (১৩ আগস্ট) সকালে তেঁতুলিয়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম খাঁন এ খবরের সত্যতা স্বীকার করেন। অভিযুক্ত ওই কনস্টেবলকে বর্তমানে আটক রেখে তদন্ত চলছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।তদন্তের স্বার্থে বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) তেঁতুলিয়া হাইওয়ে থানা পরিদর্শন করেছেন হাইওয়ে পুলিশের রংপুর সার্কেল এসপি জাহিদ চৌধুরী।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ভজনপুর ইউনিয়নের ভদ্রেশ্বর গ্রামের নাজির নামে থানার এক পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে পুলিশে চাকরি দেওয়ার লোভ দেখান কনস্টেবল জুয়েল খন্দকার। এ জন্য নাজিরের কাছ থেকে ১১ লাখ ৯৩ হাজার টাকা ঘুষ নেন জুয়েল। এ ঘটনায় দীর্ঘদিন পার হলেও জুয়েলের কোনো হুদিস না থাকায় থানায় বিষয়টি জানিয়ে হাইওয়ে পুলিশের বগুড়া রিজিয়নের এসপি বরাবর অভিযোগ করেন নাজির। অভিযোগের ভিত্তিতে জুয়েলকে প্রথমে বগুড়া এসপি অফিসে ক্লোজড করার পর রংপুর সার্কেল অফিসে রাখা হয়েছে। বিষয়টির তদন্ত করতে রংপুর সার্কেল জাহিদ চৌধুরী বৃহস্পতিবার সরেজমিনে তেঁতুলিয়া হাইওয়ে থানায় এসে অভিযোগকারী ও সাক্ষীদের জবানবন্দী নিয়ে যান।
অভিযোগকারী নাজির জানান আমি দীর্ঘদিন ধরে থানায় কাজ করে আসছি। জুয়েল প্রায় সময়েই আমাকে পুলিশে চাকরি নিয়ে দেবেন বলতেন। বিষয়টিতে প্রথমে তেমনভাবে কান দেইনি। পরে হঠাৎ একদিন তিনি বলেন যে তার পঞ্চগড় পুলিশ সুপারসহ উপরের সবার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক আছে। এভবে বিভিন্ন লোভ দেখিয়ে তিনি কাগজপত্র এবং প্রথমে ৭০ হাজার টাকা নেন। পরে ধাপে ধাপে আমি তাকে ১১ লাখ ৯৩ হাজার টাকা দেই।
তিনি আরও বলেন, একসময় চাকরি হয়েছে এমন বলে ঢাকায় নিয়ে গিয়ে মাঝ রাস্থায় ফেলে পালিয়ে যান তিনি। কিন্তু পরে তার কোনো খবর না থাকায় আমি অভিযোগ করি। এছাড়া চাকরি দেওয়ার কথা বলে থানায় কর্মরত বাবুর্চি বিলকিস বেগমের কাছে ১৮ হাজার টাকা, সরকারি রেশন দেওয়ার নামে ভজনপুর বাজারের সেলুন ব্যবসায়ী সুবলের কাছ থেকে ২৫ হাজার ২০০ টাকা, মোবাইল ব্যবসায়ী জিয়ার কাছ থেকে বাবার অসুস্থ্যতার কথা বলে ১০ হাজার ২০০ টাকা, শালবাহান রোডের এক বাঁশ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ১ লাখ টাকাসহ আরও বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে টাকা নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে ওই কনস্টেবলের বিরুদ্ধে।
তেঁতুলিয়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম খাঁন জানান অভিযুক্ত জুয়েল খন্দকারকে বগুড়া এসপি অফিসে ক্লোজড করে রংপুর সার্কেল অফিসে রাখা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে রংপুর সার্কেল এসপি তদন্ত করছেন। অভিযোগারী ও সাক্ষীদের জবানবন্দী নেওয়া হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, টাকা লেনদেনের বিষয়সহ সবকিছু তদন্ত চলছে। জুয়েলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। বিভাগীয়ভাবেও মামলা করা হবে। এখন পর্যন্ত একটি অভিযোগ করা হয়েছে এবং সেটির তদন্ত চলছে। বাকিরাও দুই-এক দিনের মধ্যে অভিযোগ পাঠাতে পারেন।