
মোঃ শোয়াইব, হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ চট্টগ্রাম রাঙ্গামাটি-খাগড়াছড়ি মহাসড়কের দুই পাশ সহ সড়কের এক তৃতীয়াংশ জায়গা সিএনজি,অটোরিকশা,টেম্পু,জীপ,কার- মাইক্রো সহ অবৈধ স্থাপনা বসিয়ে দখলের রাজত্ব করার অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘ সময় এ অবৈধ দখলের কারনে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়ছে প্রতিদিনেই হাজার হাজার যাত্রী ও পথচারীরা। ওইসব এলাকায় যানজটের কারণে পৌরবাসীকেও চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। গত দেড় বছর আগে কয়েকবার উচ্ছেদ অভিযান হলে যানজট কিছুটা মুক্ত হলেও আবারো দখল রাজত্ব চলে যায় অদৃশ্য কারনে।উপজেলা প্রশাসন,পুলিশ প্রশাসন সহ ট্রাফিক বিভাগ এ অবৈধ দখল উচ্ছেদ করতে হিমশিম খাচ্ছে।ওই বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করে জানতে চাইলে ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য আসে সড়ক দখল রাজত্ব নিয়ে। তবে বেশীর ভাগ কথিত শাখা সংগঠনের নাম দিয়ে অবৈধ ভাবে,সিএনজি,কার- মাইক্রো,জীপ,ট্রাক পার্কিং করে সড়ক দখল করছে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মকর্তা জানান।এমন কি তাদের জন্মের আগে থেকেই নাকি এভাবে সড়কে পার্কিং করে আসছে বলেও অভিযোগ তুলেন এক কর্মকর্তা।
তবে স্থানীয় কিছু শ্রমিক নেতারা জানান গাড়ী রাখার বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় এ দুর্ভোগ হচ্ছে বলে স্বীকার করেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পৌর সদরের ব্যস্ততম এলাকা রাঙ্গামাটি- খাগড়াছড়ির প্রবেশ মুখ বাসস্টেশনের জিরো পয়েন্টের কিছু স্থানে বাস সিএনজি যত্রতত্র ভাবে দাড়িয়ে থাকে। রাঙ্গামাটি সড়কের আলিফ হসপিটালের সামনে সড়কের উপরে কার মাইক্রো দাড়িয়ে থাকে।মহাসড়ক সংলগ্ন গড়দুয়ারা মেখল প্রবেশ মুখে দাড়িয়ে থাকে টেম্পু সিএনজি। শুধু তাই নয়,হাজী এম ছিদ্দিক মার্কেটের পূর্ব ও পশ্চিম পাশে পার্কিং করে রাখে সিএনজি অটোরিকশা,এমনকি পথচারীদের চলাচলের ফুটপাত দখলে নিয়েছে দেখা যায় ভাসমান দোকানের চিত্র। সেই দোকানগুলো থেকে ১০টাকা হারে চাদাঁও নেয় বলে জানা যায়। শুধু তাই নয়, কলেজ গেইট সংলগ্ন ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সামনেও সড়ক দখল করে রাখে সিএনজি অটোরিকশা। কোন একটি অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটলে অগ্নিনির্বাপণের গাড়ি বের হতেও হিমশিম খেতে হয়। সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত প্রতিদিনেই এভাবে দখলের চিত্র দেখা যায়। অসহনীয় যানজটে অনেকে পায়ে হেটে যাত্রা করেন তাদের গন্তব্যে।
যাত্রীদের অভিযোগ সড়কে চালকরা নিয়মশৃঙ্খলা না মানায় যানজট পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হচ্ছে। যানজট মোকাবিলায় হিমশিম খেতে হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তাদেরও। এদিকে একাধিক ব্যক্তিরা জানান, সদরের ব্যস্ত এলাকা হওয়ায় হাজার হাজার মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়ছে প্রতিদিন। অবৈধভাবে গাড়ীগুলো পার্কিং করে রাখার কারনে একদিকে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে অন্যদিকে পথচারীদের চলাচলে পড়তে হচ্ছে ভোগান্তিতে। বিভিন্ন সংগঠনের নাম দিয়েও পার্কিং করা গাড়ি থেকে নেয়া হয় চাঁদা।এমনও চিত্র দেখা যায়,কোন বাঁশের ট্রাক কাঠ বোঁঝায় গাড়ী সড়কের মাঝে দাড় করিয়ে চাঁদা নেয় কথিত কিছু ব্যক্তি। তবে এ টাকা কোথায় যায় কোন হিসাব নাই বলেও জানান তারা।স্থানীয় ও ব্যবসায়ীদের দাবি দ্রুত অবৈধ পার্কিং সহ ফুটপাত দখল করে ভাসমান দোকানগুলো উচ্ছেদ করে দখলমুক্ত সড়কে গাড়ী দাড় করিয়ে চাঁদাবাজি বন্ধের দাবি জানান।
হাটহাজারী ফটিকছড়ি রাউজান অটো টেম্পু অটো রিকসা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো.ইলিয়াছ বলেন,সংগঠনের কয়েকটা উপ-শাখা সিএনজি পার্কিং করে সড়কের পাশে।তবে সড়কের মাঝে বা ফুটপাত দখল করে পার্কিং নিষেধ রযেছে। আমরা যতক্ষণ নিষেধ করি ততক্ষণ মানলেও পরে আবারো আগের মত দখল করে নেয়। কিন্তু জনস্বার্থে আমরা এরকম যে সিএনজি গাড়িগুলো অবৈধ ভাবে পার্কিং করবে সংগঠন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।আসলে বিকল্প পার্কিং ব্যবস্থা না থাকায় কিছুটা দুর্ভোগ হচ্ছে।
এবিষয়ে ট্রাফিক ইনস্পেক্টর(টিআই) মো.বখতিয়ার আহমেদ বলেন, আমি এখানে আসার পর সব সমিতিগুলোর সাথে যোগাযোগ করি এবং এগুলো সরানোর ব্যাপারে কথা বলি। তারা বলেন এই স্ট্যান্ডগুলো আমাদের জন্মের আগে থেকেই, এগুলো সরানো সম্ভব না। স্থানীয় কিছু ব্যাক্তির প্রভাব বিস্তারের কারনে যানজট বা অবৈধ পার্কিং সরানো যাচ্ছেনা। চলমান পূজার পর উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসনকে যৌথ ভাবে নিয়ে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব। হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.শাহিদুল আলম বলেন,অসহনীয় যানজটের বিষয়টি অবগত আছি,পর্যায়ক্রমে অবৈধ পার্কিং,স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে সরিয়ে নেয়া হবে।