ডেস্ক রিপোর্ট: দেশের উপকূল ও সাগরে মাছের মজুদ বৃদ্ধি ও প্রান্তিক জেলে সম্প্রদায়ের জীবনমান উন্নয়নে টেকসই মৎস্য ব্যবস্থাপনা ও বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য ‘সাসটেইনেবল কোস্টাল এন্ড মেরিন ফিসারিজ প্রজেক্ট’ (এসসিএমএফপি) বাস্তবায়ন করছে মৎস অধিদপ্তর। প্রকল্পের কার্যক্রম সম্পর্কে সাংবাদিকদের অবহিত করতে ‘সাসটেইনেবল কোস্টাল এন্ড মেরিন ফিসারিজ প্রজেক্ট’ (এসসিএমএফপি) কার্যক্রম গণমাধ্যমে প্রচারের সুযোগ ও কলাকৌশল শীর্ষক একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার ৩৫ জন সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন। মৎস অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগের উপ-পরিচালক মো. আব্দুস সাত্তারের সভাপতিত্বে কর্মশালা অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি আলহাজ্ব আলী আব্বাস। বিশেষ অতিথি ছিলেন- জেলা মৎস কর্মকর্তা ফারহানা লাভলী, সাসটেইনেবল কোস্টাল এন্ড মেরিন ফিশারিজের উপ প্রকল্প পরিচালক অধীর চন্দ্র দাশ, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী মো. ফরিদ, গ্রীন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. অলিউর রহমান, সহকারী প্রকল্প পরিচালক মো. মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও সাসটেইনেবল কোস্টাল এন্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০২০ সালে শুরু হওয়া পাঁচ বছর মেয়াদের এই প্রকল্পের মাধ্যমে অজানা সুনীল অর্থনীতির টেকসই মৎস্য মজুদ সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এর মধ্যে রয়েছে- বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণা পরিচালনা, বাণিজ্যিক ও ছোট আকারের মৎস্য সম্পদ আহরণ ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়নে অধিকতর কার্যকর পরিবীক্ষণ, নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারি (এমসিএস) পদ্ধতির বাস্তবায়ন করা, উপকূলীয় অঞ্চলের মৎস্য ব্যবস্থাপনা ও মৎস্য চাষের জন্য অবকাঠামো তৈরি ও উৎপাদন সুবিধা তৈরি করা। মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের ক্ষমতায়ন ও জীবিকায়নে বিকল্প পেশায় রূপান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে । এর আওতায় ৪৫০টি মৎস্য গ্রামে কমিনিউনিটি সেভিংস গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ১০০টি মডেল জেলেগ্রাম প্রতিষ্ঠা করা এবং এর মধ্যে থেকে ৬০ শতাংশ সুবিধাভোগীকে অর্থ সহায়তা প্রদান। ১০০টি মডেল জেলেগ্রামে ফিশারিজ ব্যবস্হাপনা ও উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহায়তা, মডেল গ্রামের ১৮ হাজার যুবক-যুবতীকে ভোকেশনাল ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রদান, ১০০ প্রডিউসার গ্রুপ তৈরি এবং নিবন্ধন করা, ৯০টি ইয়থ ফেস্টিভাল প্রোগ্রাম ও ৬টি জব ফেয়ার আয়োজন করা, ৪৫টি উপজেলায় জেলে ফেডারেশন প্রতিষ্ঠা করার পদক্ষেপ নেয়া হয়। এসব কর্মসূচির মাধ্যমে ৫৪ হাজার জেলে সরাসরি সুবিধা পাবে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে আইনি লড়াই শেষে বঙ্গোপসাগরের ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গ কিলোমিটার এলাকা এক্সক্লুসিভ ইকোনোমিক জোন সৃষ্টি হওয়ায় এই প্রকল্পের গুরুত্ব অত্যন্ত বেড়ে গেছে। এতে দেশের সামুদ্রিক মৎস্য আহরণ ও সংরক্ষণে অপার এক সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। দেশের সমুদ্রসীমা ও উপকূলে ৪৭৫ প্রজাতির মাছ রয়েছে বলে উল্লেখ করে জানানো হয়, এর মধ্যে ৩৬ প্রজাতির চিংড়ি, ১৫ প্রজাতির কাঁকড়া, ৩০১ প্রজাতির শামুক, ছয় প্রজাতির ঝিনুক, আট প্রজাতির লবস্টার, ১৩ প্রজাতির প্রবাল এবং ১১ প্রজাতির ডলফিন রয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে উপরোক্ত মৎস্য সম্পদের সংরক্ষণ ও মজুদের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।